শিল্প আর ঐতিহ্যের ছোঁয়ায় চারুকলা থেকে বের হলো আনন্দ শোভাযাত্রা

- আপডেট সময় ০৯:৫৬:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
- / 44
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-কে স্বাগত জানাতে বর্ষবরণের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণ থেকে। এবারের শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ ধরে রেখেছে সময়ের সাহসী বার্তা।
রবিবার সকালে চারুকলার সামনে থেকে যাত্রা শুরু করে শোভাযাত্রাটি শাহবাগ, টিএসসি, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর হয়ে পুনরায় চারুকলায় ফিরে আসে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সংস্কৃতিসেবী, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ মিলিত হন উৎসবের ছায়ায়।
শোভাযাত্রায় অংশ নেয় ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বহুজাতিক অতিথিরাও যোগ দেন এই আয়োজনে। শোভাযাত্রায় ছিল সাতটি বড়, সাতটি মাঝারি ও সাতটি ছোট মোটিফ যা শিল্প, প্রতিবাদ ও উৎসবের মিশ্র রূপ প্রকাশ করে।
তবে শোভাযাত্রার আগেই ঘটে যায় একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। শনিবার ভোররাতে চারুকলার ভেতরে রাখা ‘স্বৈরাচারের মুখাকৃতি’ নামের বিশাল মোটিফে আগুন লাগানো হয়। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কালো টি-শার্ট ও বাদামি প্যান্ট পরা এক যুবক দক্ষিণ গেট টপকে ভেতরে ঢুকে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
২০ ফুট উঁচু এই মোটিফটি বাঁশ-বেত দিয়ে তৈরি এক নারীর ভয়াবহ মুখাবয়বম দাঁতাল মুখ, খাড়া শিং, বড় নাক ও তীক্ষ্ণ চোখ যাকে অনেকেই ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করেন। আগুনে পুরো মোটিফটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পাশের ‘শান্তির পায়রা’র একাংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঘটনার পর পরই চারুকলার প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা নতুন করে মোটিফ তৈরির কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। শনিবার রাতেই সোলা দিয়ে পুনরায় ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ নির্মাণ শুরু হয়। পাশাপাশি ‘তরমুজের ফালি’, ‘বাঘ’, ‘ইলিশ’, ‘শান্তির পায়রা’ ও ‘পালকি’র মতো মোটিফগুলোর কাজ শেষ হয় রবিবার রাতেই।
এই শোভাযাত্রা শুধু উৎসব নয়, বরং সময়ের প্রেক্ষাপটে একটি প্রতীকী প্রতিবাদ যেখানে রঙ, সুর, শিল্প আর চেতনাই একসাথে বলে উঠে, ‘স্বৈরাচার নয়, এই দেশ সংস্কৃতির’।