ঢাকা ০৫:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সাফজয়ী দল নিয়েই এশিয়ান মিশনে লাওস যাচ্ছে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-২০ নারী দল “শিবিরের নির্দেশে কাজ করিনি, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার” — নাহিদ ইসলাম পঞ্চগড় সীমান্তে ফের ১৭ বাংলাদেশিকে ঠেলে পাঠালো বিএসএফ ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরায়েলি হামলায় ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত, দুর্ভিক্ষে আরও প্রাণহানি ব্রাজিলের আমদানিতে ৫০% শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প, পাল্টা হুমকি ব্রাসিলিয়ার বিশ্বের ষষ্ঠ শক্তিশালী ভূমিকম্প: রাশিয়ার সুনামি বিপদ মেসির শেষ মুহূর্তের জাদুতে ইন্টার মায়ামির নাটকীয় জয় অ্যাঙ্গোলায় জ্বালানি মূল্যের বিরোধে রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ, ২২ জন নিহত নিঃশব্দ আতঙ্কের ছায়া: বোবায় ধরা বা স্লিপ প্যারালাইসিসের বৈজ্ঞানিক রহস্য। রংপুরে হিন্দুপল্লীতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫

নিঃশব্দ আতঙ্কের ছায়া: বোবায় ধরা বা স্লিপ প্যারালাইসিসের বৈজ্ঞানিক রহস্য।

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৮:২৩:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
  • / 32

ছবি: সংগৃহীত

 

ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখা যায় শরীরটাকে যেন কেউ লোহার শিকলে বেঁধে রেখেছে—চোখ খোলা যায়, কিন্তু কথা বলা যায় না, হাত-পা নাড়ানো যায় না। মনে হয় বুকের উপর কেউ বসে আছে, নিঃশ্বাস আটকে যাচ্ছে। এই অনুভূতির নাম ‘স্লিপ প্যারালাইসিস’। বাংলায় একে ‘বোবা’ বা ‘বোবায় ধরা’ বলা হয়।

Sleep paralysis is defined as “a brief loss of muscle function while falling asleep or upon waking, often accompanied by hallucinations and intense fear.” এটি এমন একটি অবস্থা যা সাধারণ ঘুম ও সম্পূর্ণ জাগরণ—এই দুই অবস্থার মাঝামাঝি সময়ে ঘটে থাকে। ঘুমন্ত শরীরকে জাগ্রত মন যখন অনুভব করে, তখনই ঘটে এই নিঃশব্দ আতঙ্ক। ঘটনাটি সচরাচর REM (Rapid Eye Movement) sleep phase-এর সময়ে ঘটে। এই পর্যায়ে মস্তিষ্ক অত্যন্ত সক্রিয় থাকে এবং স্বপ্ন দেখা হয়, কিন্তু শরীরের পেশিগুলো অচল থাকে যাতে স্বপ্নে করা কাজ বাস্তবে না ঘটে যায়। মস্তিষ্ক যদি জাগে, কিন্তু শরীর সেই প্যারালাইসড (অচল) অবস্থায় থাকে, তখনই ব্যক্তি ‘বোবা’ ধরার শিকার হন। গবেষকগণ এমন অভিজ্ঞতা নিয়ে বহু মানুষের সাথে কথা বলেছেন। তাদের মতে, এটি কেবল একটি শারীরবৃত্তীয় অবস্থা নয়, বরং এক ধরনের মানসিক আতঙ্কও সৃষ্টি করে। অনুভূত হয়, যেন মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকা হয়েছে।

Sleep paralysis is classified under parasomnias, which the American Academy of Sleep Medicine defines as “undesirable physical events or experiences that occur during entry into sleep, within sleep, or during arousals from sleep.”

স্নায়ুবিজ্ঞানীদের মতে, বোবায় ধরা একটি নিউরোফিজিওলজিক্যাল ইভেন্ট, যা মূলত ঘুম ও জাগরণের সংযোগস্থলে ঘটে। ঘুমের অভ্যাসে ব্যাঘাত, মানসিক চাপ, অনিয়মিত জীবনধারা ইত্যাদি এর মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই অবস্থায় ব্যক্তিরা বেশ কিছু লক্ষণ অনুভব করে থাকেন—

১. বুকের উপর ভারী চাপ অনুভব হয়, যেন কেউ চেপে বসে আছে।
২. নিঃশ্বাস নেয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে।
৩. শরীরের কোনো অঙ্গ নাড়ানো যায় না, এমনকি চোখও না।
৪. চোখ খোলা গেলেও আশেপাশে ভৌতিক বা ক্ষতিকর কিছু দেখার মত হ্যালুসিনেশন হয়।
৫. প্রচণ্ড ভয় ও আতঙ্ক তৈরি হয়।
৬. কয়েক সেকেন্ড থেকে এক মিনিট স্থায়ী হলেও মনে হয় অনেক দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেছে।

এই অবস্থার কারণে কেউ কেউ রাতের ঘুম হারিয়ে ফেলেন, দিনের বেলায় ক্লান্তি ও ঘুম ঘুম ভাব অনুভব করেন, ফলে জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়।

Sleep paralysis may be either isolated or recurrent. The term “Recurrent Isolated Sleep Paralysis (RISP)” is used when it occurs repeatedly without any underlying sleep disorder.

ব্রিটেনের NHS (National Health Service) উল্লেখ করেছে যে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। তারা আরও কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ চিহ্নিত করেছে:

১. পর্যাপ্ত ও গঠনমূলক ঘুমের অভাব।

২. ঘুমের নির্দিষ্ট রুটিন না থাকা।

৩. মানসিক অসুস্থতা যেমন anxiety, panic disorder বা bipolar disorder।

৪. মাদকাসক্তি বা ধূমপান ও মদপান।

৫. পরিবারের কারও মধ্যে এই অভিজ্ঞতা থাকলে জেনেটিক কারণে সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

স্লিপ প্যারালাইসিসের ক্ষেত্রে হ্যালুসিনেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ। একে বলা হয় hypnagogic (ঘুমাতে যাওয়ার সময়) বা hypnopompic (ঘুম ভাঙার সময়) hallucinations. ব্যক্তি প্রায়শই মনে করেন, কোনো অশুভ সত্তা তার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে, শরীর চেপে ধরেছে বা গলা টিপে ধরছে। তবে এই অবস্থার জন্য অদ্ভুত বা অতিপ্রাকৃত কিছু দায়ী নয়। বরং, এটি একটি বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যাখ্যা করা যায় এমন স্নায়বিক অবস্থান।
স্নায়ুবিজ্ঞানী প্যাট্রিসিয়া এল. ব্রুকস এবং জন এইচ. পিভার এর গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে যে, REM sleep-এর সময় মস্তিষ্ক পেশী নিয়ন্ত্রণকারী নিউরোট্রান্সমিটারকে বন্ধ করে দেয়। GABA (Gamma Aminobutyric Acid) এবং Glycine নামক অ্যামাইনো অ্যাসিড এই কাজে যুক্ত থাকে। তারা শরীরের মাংসপেশিকে সম্পূর্ণ শিথিল করে ফেলে, ফলে স্বপ্নে দৌড়ালেও বাস্তবে দৌড়ানো যায় না।

Sleep paralysis does not usually require medical treatment unless it is frequent. তবে উপসর্গ যদি ঘন ঘন দেখা দেয়, তখন Multiple Sleep Latency Test (MSLT) এবং Electromyogram (EMG) সহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হতে পারে। MSLT-এর মাধ্যমে দিনে ঘুমিয়ে পড়ার সময়কাল পরিমাপ করা হয়। অন্যদিকে EMG দ্বারা শরীরের পেশিগুলোর ইলেকট্রিক কার্যকারিতা পরিমাপ করা হয়, যা স্লিপ প্যারালাইসিসের সময় তীব্রভাবে হ্রাস পায়। চিকিৎসায় অনেক সময় হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার antidepressant ওষুধ দেয়া হয়। বিশেষ করে, যেসব ক্ষেত্রে স্লিপ প্যারালাইসিসের সঙ্গে মানসিক সমস্যার সংযোগ পাওয়া যায়। এই সমস্যা প্রতিরোধে কিছু স্বাস্থ্যকর ঘুম-আচরণ মেনে চলা জরুরি। একে বলা হয় Sleep Hygiene, যার মধ্যে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত:

১. প্রতিরাতে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করা।
২. নিয়মিত ঘুমাতে যাওয়া ও একই সময়ে জাগা।
৩. ঘুমের আগে মোবাইল, ল্যাপটপ, টিভি ইত্যাদি পরিহার করা।
৪. ঘুমের ঘরটিকে আরামদায়ক রাখা—অন্ধকার, ঠান্ডা ও শব্দমুক্ত।
৫. ঘুমানোর অন্তত ৩-৪ ঘণ্টা আগে ব্যায়াম করা, ঘুমের আগে ভারী খাবার, চা-কফি, ধূমপান বা মদপান পরিহার করা।
৬. মানসিক চাপ কমানোর জন্য মেডিটেশন, যোগ বা রিলাক্সেশন টেকনিক ব্যবহার করা।
৭. দিনের বেলা অতিরিক্ত ঘুম থেকে বিরত থাকা।

Sleep paralysis is not a curse, nor a spiritual possession, but a physiological misalignment of brain and body. এটি কোন অলৌকিক ঘটনা নয় বরং একেবারেই বোধগম্য এবং চিকিৎসাযোগ্য। যেসব ব্যক্তিরা এই সমস্যায় আক্রান্ত হন, তাদের প্রতি সহানুভূতি ও সচেতনতা থাকা প্রয়োজন। অনেকেই এই ঘটনা কাউকে বলতে দ্বিধা করেন, লজ্জা পান বা ভয় পান যে অন্যরা বুঝবেন না। অথচ এই পরিস্থিতি একেবারেই সাধারণ এবং বহু মানুষ এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যান। যদি এই অভিজ্ঞতা নিয়মিত ঘটে, তাহলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। তবে একটি ইতিবাচক ও সচেতন জীবনধারাই এই সমস্যা থেকে মুক্তির প্রথম ও প্রধান পথ। স্লিপ প্যারালাইসিসের সময় মনে রাখতে হবে, “It is a temporary paralysis of the body with a fully aware mind. It is not real danger, though it may feel terrifying.”

ভয়ের কিছু নেই। ঘুমকে স্বাভাবিক ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলার মাধ্যমেই বোবায় ধরা নামক এই নিঃশব্দ আতঙ্কের রাশ টেনে ধরা সম্ভব। শান্ত ঘুমই হোক আত্মার আরাম ও শরীরের বিশ্রামের একমাত্র পথ।

নিউজটি শেয়ার করুন

নিঃশব্দ আতঙ্কের ছায়া: বোবায় ধরা বা স্লিপ প্যারালাইসিসের বৈজ্ঞানিক রহস্য।

আপডেট সময় ০৮:২৩:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

 

ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখা যায় শরীরটাকে যেন কেউ লোহার শিকলে বেঁধে রেখেছে—চোখ খোলা যায়, কিন্তু কথা বলা যায় না, হাত-পা নাড়ানো যায় না। মনে হয় বুকের উপর কেউ বসে আছে, নিঃশ্বাস আটকে যাচ্ছে। এই অনুভূতির নাম ‘স্লিপ প্যারালাইসিস’। বাংলায় একে ‘বোবা’ বা ‘বোবায় ধরা’ বলা হয়।

Sleep paralysis is defined as “a brief loss of muscle function while falling asleep or upon waking, often accompanied by hallucinations and intense fear.” এটি এমন একটি অবস্থা যা সাধারণ ঘুম ও সম্পূর্ণ জাগরণ—এই দুই অবস্থার মাঝামাঝি সময়ে ঘটে থাকে। ঘুমন্ত শরীরকে জাগ্রত মন যখন অনুভব করে, তখনই ঘটে এই নিঃশব্দ আতঙ্ক। ঘটনাটি সচরাচর REM (Rapid Eye Movement) sleep phase-এর সময়ে ঘটে। এই পর্যায়ে মস্তিষ্ক অত্যন্ত সক্রিয় থাকে এবং স্বপ্ন দেখা হয়, কিন্তু শরীরের পেশিগুলো অচল থাকে যাতে স্বপ্নে করা কাজ বাস্তবে না ঘটে যায়। মস্তিষ্ক যদি জাগে, কিন্তু শরীর সেই প্যারালাইসড (অচল) অবস্থায় থাকে, তখনই ব্যক্তি ‘বোবা’ ধরার শিকার হন। গবেষকগণ এমন অভিজ্ঞতা নিয়ে বহু মানুষের সাথে কথা বলেছেন। তাদের মতে, এটি কেবল একটি শারীরবৃত্তীয় অবস্থা নয়, বরং এক ধরনের মানসিক আতঙ্কও সৃষ্টি করে। অনুভূত হয়, যেন মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকা হয়েছে।

Sleep paralysis is classified under parasomnias, which the American Academy of Sleep Medicine defines as “undesirable physical events or experiences that occur during entry into sleep, within sleep, or during arousals from sleep.”

স্নায়ুবিজ্ঞানীদের মতে, বোবায় ধরা একটি নিউরোফিজিওলজিক্যাল ইভেন্ট, যা মূলত ঘুম ও জাগরণের সংযোগস্থলে ঘটে। ঘুমের অভ্যাসে ব্যাঘাত, মানসিক চাপ, অনিয়মিত জীবনধারা ইত্যাদি এর মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই অবস্থায় ব্যক্তিরা বেশ কিছু লক্ষণ অনুভব করে থাকেন—

১. বুকের উপর ভারী চাপ অনুভব হয়, যেন কেউ চেপে বসে আছে।
২. নিঃশ্বাস নেয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে।
৩. শরীরের কোনো অঙ্গ নাড়ানো যায় না, এমনকি চোখও না।
৪. চোখ খোলা গেলেও আশেপাশে ভৌতিক বা ক্ষতিকর কিছু দেখার মত হ্যালুসিনেশন হয়।
৫. প্রচণ্ড ভয় ও আতঙ্ক তৈরি হয়।
৬. কয়েক সেকেন্ড থেকে এক মিনিট স্থায়ী হলেও মনে হয় অনেক দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেছে।

এই অবস্থার কারণে কেউ কেউ রাতের ঘুম হারিয়ে ফেলেন, দিনের বেলায় ক্লান্তি ও ঘুম ঘুম ভাব অনুভব করেন, ফলে জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়।

Sleep paralysis may be either isolated or recurrent. The term “Recurrent Isolated Sleep Paralysis (RISP)” is used when it occurs repeatedly without any underlying sleep disorder.

ব্রিটেনের NHS (National Health Service) উল্লেখ করেছে যে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। তারা আরও কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ চিহ্নিত করেছে:

১. পর্যাপ্ত ও গঠনমূলক ঘুমের অভাব।

২. ঘুমের নির্দিষ্ট রুটিন না থাকা।

৩. মানসিক অসুস্থতা যেমন anxiety, panic disorder বা bipolar disorder।

৪. মাদকাসক্তি বা ধূমপান ও মদপান।

৫. পরিবারের কারও মধ্যে এই অভিজ্ঞতা থাকলে জেনেটিক কারণে সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

স্লিপ প্যারালাইসিসের ক্ষেত্রে হ্যালুসিনেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ। একে বলা হয় hypnagogic (ঘুমাতে যাওয়ার সময়) বা hypnopompic (ঘুম ভাঙার সময়) hallucinations. ব্যক্তি প্রায়শই মনে করেন, কোনো অশুভ সত্তা তার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে, শরীর চেপে ধরেছে বা গলা টিপে ধরছে। তবে এই অবস্থার জন্য অদ্ভুত বা অতিপ্রাকৃত কিছু দায়ী নয়। বরং, এটি একটি বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যাখ্যা করা যায় এমন স্নায়বিক অবস্থান।
স্নায়ুবিজ্ঞানী প্যাট্রিসিয়া এল. ব্রুকস এবং জন এইচ. পিভার এর গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে যে, REM sleep-এর সময় মস্তিষ্ক পেশী নিয়ন্ত্রণকারী নিউরোট্রান্সমিটারকে বন্ধ করে দেয়। GABA (Gamma Aminobutyric Acid) এবং Glycine নামক অ্যামাইনো অ্যাসিড এই কাজে যুক্ত থাকে। তারা শরীরের মাংসপেশিকে সম্পূর্ণ শিথিল করে ফেলে, ফলে স্বপ্নে দৌড়ালেও বাস্তবে দৌড়ানো যায় না।

Sleep paralysis does not usually require medical treatment unless it is frequent. তবে উপসর্গ যদি ঘন ঘন দেখা দেয়, তখন Multiple Sleep Latency Test (MSLT) এবং Electromyogram (EMG) সহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হতে পারে। MSLT-এর মাধ্যমে দিনে ঘুমিয়ে পড়ার সময়কাল পরিমাপ করা হয়। অন্যদিকে EMG দ্বারা শরীরের পেশিগুলোর ইলেকট্রিক কার্যকারিতা পরিমাপ করা হয়, যা স্লিপ প্যারালাইসিসের সময় তীব্রভাবে হ্রাস পায়। চিকিৎসায় অনেক সময় হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার antidepressant ওষুধ দেয়া হয়। বিশেষ করে, যেসব ক্ষেত্রে স্লিপ প্যারালাইসিসের সঙ্গে মানসিক সমস্যার সংযোগ পাওয়া যায়। এই সমস্যা প্রতিরোধে কিছু স্বাস্থ্যকর ঘুম-আচরণ মেনে চলা জরুরি। একে বলা হয় Sleep Hygiene, যার মধ্যে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত:

১. প্রতিরাতে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করা।
২. নিয়মিত ঘুমাতে যাওয়া ও একই সময়ে জাগা।
৩. ঘুমের আগে মোবাইল, ল্যাপটপ, টিভি ইত্যাদি পরিহার করা।
৪. ঘুমের ঘরটিকে আরামদায়ক রাখা—অন্ধকার, ঠান্ডা ও শব্দমুক্ত।
৫. ঘুমানোর অন্তত ৩-৪ ঘণ্টা আগে ব্যায়াম করা, ঘুমের আগে ভারী খাবার, চা-কফি, ধূমপান বা মদপান পরিহার করা।
৬. মানসিক চাপ কমানোর জন্য মেডিটেশন, যোগ বা রিলাক্সেশন টেকনিক ব্যবহার করা।
৭. দিনের বেলা অতিরিক্ত ঘুম থেকে বিরত থাকা।

Sleep paralysis is not a curse, nor a spiritual possession, but a physiological misalignment of brain and body. এটি কোন অলৌকিক ঘটনা নয় বরং একেবারেই বোধগম্য এবং চিকিৎসাযোগ্য। যেসব ব্যক্তিরা এই সমস্যায় আক্রান্ত হন, তাদের প্রতি সহানুভূতি ও সচেতনতা থাকা প্রয়োজন। অনেকেই এই ঘটনা কাউকে বলতে দ্বিধা করেন, লজ্জা পান বা ভয় পান যে অন্যরা বুঝবেন না। অথচ এই পরিস্থিতি একেবারেই সাধারণ এবং বহু মানুষ এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যান। যদি এই অভিজ্ঞতা নিয়মিত ঘটে, তাহলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। তবে একটি ইতিবাচক ও সচেতন জীবনধারাই এই সমস্যা থেকে মুক্তির প্রথম ও প্রধান পথ। স্লিপ প্যারালাইসিসের সময় মনে রাখতে হবে, “It is a temporary paralysis of the body with a fully aware mind. It is not real danger, though it may feel terrifying.”

ভয়ের কিছু নেই। ঘুমকে স্বাভাবিক ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলার মাধ্যমেই বোবায় ধরা নামক এই নিঃশব্দ আতঙ্কের রাশ টেনে ধরা সম্ভব। শান্ত ঘুমই হোক আত্মার আরাম ও শরীরের বিশ্রামের একমাত্র পথ।