রাজস্ব খাতে চাকরির দাবিতে আন্দোলনে ‘তথ্য আপা’দের সরিয়ে দিল পুলিশ

- আপডেট সময় ০৮:২৩:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
- / 3
রাজস্ব খাতে চাকরির দাবিতে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রার পর কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান নেওয়া ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীদের পুলিশ লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দিয়েছে। এতে অন্তত ১৫ জন নারী আন্দোলনকারীকে প্রিজন ভ্যানে তুললেও পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
রোববার (১ জুন) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে যাত্রা শুরু করে আন্দোলনরত নারীরা। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে তারা মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের জনবলকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের দাবিতে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করেন। পথে পুলিশের বাধায় কাকরাইল মসজিদ মোড়ে আটকে পড়েন।
প্রথমে প্রেসক্লাবের সামনেই পুলিশের বাধায় পড়লেও নারী পুলিশের অনুপস্থিতিতে তারা বাধা অতিক্রম করে কাকরাইলে পৌঁছান। সেখানে নারী পুলিশের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় দফায় বাধা দেওয়া হয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় এবং মৃদু লাঠিচার্জের মাধ্যমে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, “পরিস্থিতি শান্ত রাখতে কয়েকজন নারীকে প্রিজন ভ্যানে নেওয়া হয়েছিল। পরে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।”
‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের অধীনে সারা দেশে প্রায় দুই হাজার নারী কর্মরত। চলমান প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা এবং বেতন-বোনাস কর্তনের প্রতিবাদে তারা গত পাঁচ দিন ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
তাদের প্রধান দুটি দাবি হলো তথ্য আপা প্রকল্পের জনবলকে পদ সৃজনের মাধ্যমে সমগ্রেডে নিয়ে এসে রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করা এবং কাটা বেতন ও ভাতা দ্রুত পরিশোধ করা।
আন্দোলনকারী এক নারী বলেন, “নারীর ক্ষমতায়নে আমরা মাঠে কাজ করেছি বছরের পর বছর। এখন প্রকল্প শেষ হলে সবাই বেকার হয়ে পড়বে। আমাদের দাবি, এই জনবলকে রাজস্ব খাতে নেওয়া হোক।”
পদযাত্রার একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও বৈঠক চলায় তারা সাক্ষাৎ পাননি।
বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে পুলিশ আন্দোলনকারীদের এলাকা ছাড়ার জন্য ১৫ মিনিট সময় বেঁধে দেয়। নির্ধারিত সময়ের পর পুলিশ বলপ্রয়োগ করে তাদের কাকরাইল এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়। এরপর আন্দোলনকারীরা আবার জাতীয় প্রেসক্লাবের দিকে ফিরে যান।
তারা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। এক কর্মীর ভাষায়, “সারা জীবনের শ্রম যেন কয়েক দিনের মধ্যেই মুছে যাচ্ছে। দাবি পূরণ না হলে আমরা রাজপথ ছাড়ব না।”
বর্তমানে আন্দোলনকারীরা প্রেসক্লাব এলাকায় অবস্থান করছেন এবং পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।