ঢাকা ০৯:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পবিত্র ঈদুল আযহায় স্বাস্থ্যসচেতনতা: সুস্থ থাকুন, নিরাপদে ঈদ করুন আর্জেন্টিনার জয় চিলিতে, গোল আলভারেজের ঈদুল আজহা উপলক্ষে ওমানে ৬৪৫ কারাবন্দিকে ক্ষমা দিলেন সুলতান হাইথাম দুবাইয়ে ঈদুল আজহার নামাজ সম্পন্ন, ঈদগাহে মুসল্লিদের ঢল বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ বিলিয়ন ডলারে ফের অন্তঃসত্ত্বা ‘দৃশ্যম’ অভিনেত্রী ঈশিতা দত্ত, প্রকাশ্যে বেবি বাম্প বেলুন, রশি আর জেদ, এই তিন দিয়েই ডুবন্ত যুদ্ধজাহাজ তুলল উত্তর কোরিয়া 🕋 পবিত্র হজ আজ পুলিশের জন্য কেনা হচ্ছে ২০০ গাড়ি

বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করল ভারত: আঞ্চলিক বাণিজ্যে বড় ধাক্কা  

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৬:০৮:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
  • / 13

ছবি সংগৃহীত

 

ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহনের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করল নরেন্দ্র মোদি সরকার। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পে, বড় ধরনের প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বোর্ড (CBIC) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত জানায়। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ আর ভারতের স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে রপ্তানি পণ্য পরিবহন করতে পারবে না।

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (PTI) জানায়, ২০২০ সালের ২৯ জুন এই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা কার্যকর করা হয়েছিল, যা বাংলাদেশের জন্য ছিল একটি বড় সুবিধা। কারণ এই পথে পণ্য পরিবহন ছিল তুলনামূলকভাবে সহজ, দ্রুত ও কম খরচে সম্ভব।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতের এই পদক্ষেপ কেবল অর্থনৈতিক নয়, এর পেছনে রয়েছে ভৌ-রাজনৈতিক হিসাবও। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের সহ-প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, “অর্থনৈতিক সুবিধা কখনোই জাতীয় নিরাপত্তা বিবেচনা থেকে আলাদা নয়।”

বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০টি পণ্যবাহী ট্রাক দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশ করত। এগুলোর বেশিরভাগই তৈরি পোশাক, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হতো।

এছাড়া, স্থলপথে ভারতের ভেতর দিয়ে নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য পৌঁছাত। এই পথে ট্রাক বা কন্টেইনার পরিবর্তনের প্রক্রিয়াকেই বলা হয় ট্রান্সশিপমেন্ট। ভারতের বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ যেমন লাভবান হতো, তেমনি এই সুবিধার প্রভাব ছিল ভুটান ও নেপালের বাণিজ্যের ওপরও।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সুবিধা বাতিল হওয়ায় শুধু বাংলাদেশ নয়, ভুটান ও নেপালও নতুন সংকটে পড়বে। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক বাণিজ্যে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করবে খুব দ্রুতই।

ভারতের রপ্তানিকারক মহল দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবেশী দেশকে দেওয়া এই বিশেষ সুবিধা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল। তাদের বক্তব্য, এই সুবিধা দেশের স্বার্থের পরিপন্থী এবং তা পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন।

এই প্রেক্ষাপটে ভারত সরকারের হঠাৎ নেওয়া এই সিদ্ধান্ত আঞ্চলিক সহযোগিতা ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক বড় প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, বাংলাদেশ সরকার কূটনৈতিক পর্যায়ে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া জানায় এবং বিকল্প পথ কীভাবে তৈরি করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করল ভারত: আঞ্চলিক বাণিজ্যে বড় ধাক্কা  

আপডেট সময় ০৬:০৮:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

 

ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহনের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করল নরেন্দ্র মোদি সরকার। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পে, বড় ধরনের প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বোর্ড (CBIC) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত জানায়। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ আর ভারতের স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে রপ্তানি পণ্য পরিবহন করতে পারবে না।

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (PTI) জানায়, ২০২০ সালের ২৯ জুন এই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা কার্যকর করা হয়েছিল, যা বাংলাদেশের জন্য ছিল একটি বড় সুবিধা। কারণ এই পথে পণ্য পরিবহন ছিল তুলনামূলকভাবে সহজ, দ্রুত ও কম খরচে সম্ভব।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতের এই পদক্ষেপ কেবল অর্থনৈতিক নয়, এর পেছনে রয়েছে ভৌ-রাজনৈতিক হিসাবও। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের সহ-প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, “অর্থনৈতিক সুবিধা কখনোই জাতীয় নিরাপত্তা বিবেচনা থেকে আলাদা নয়।”

বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০টি পণ্যবাহী ট্রাক দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশ করত। এগুলোর বেশিরভাগই তৈরি পোশাক, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হতো।

এছাড়া, স্থলপথে ভারতের ভেতর দিয়ে নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য পৌঁছাত। এই পথে ট্রাক বা কন্টেইনার পরিবর্তনের প্রক্রিয়াকেই বলা হয় ট্রান্সশিপমেন্ট। ভারতের বন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ যেমন লাভবান হতো, তেমনি এই সুবিধার প্রভাব ছিল ভুটান ও নেপালের বাণিজ্যের ওপরও।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সুবিধা বাতিল হওয়ায় শুধু বাংলাদেশ নয়, ভুটান ও নেপালও নতুন সংকটে পড়বে। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক বাণিজ্যে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করবে খুব দ্রুতই।

ভারতের রপ্তানিকারক মহল দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবেশী দেশকে দেওয়া এই বিশেষ সুবিধা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল। তাদের বক্তব্য, এই সুবিধা দেশের স্বার্থের পরিপন্থী এবং তা পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন।

এই প্রেক্ষাপটে ভারত সরকারের হঠাৎ নেওয়া এই সিদ্ধান্ত আঞ্চলিক সহযোগিতা ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক বড় প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, বাংলাদেশ সরকার কূটনৈতিক পর্যায়ে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া জানায় এবং বিকল্প পথ কীভাবে তৈরি করে।