শুল্ক জটিলতায় পোশাক রপ্তানি বাধাগ্রস্ত, অর্ডার পিছিয়ে দিচ্ছে মার্কিন ক্রেতারা

- আপডেট সময় ০১:৩১:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫
- / 69
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির জেরে গভীর অনিশ্চয়তায় পড়েছে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক ও চামড়াজাত পণ্য। হঠাৎ শুল্ক দ্বিগুণেরও বেশি বাড়িয়ে দেওয়ায় মার্কিন ক্রেতারা একে একে অর্ডার স্থগিত করছেন বলে জানিয়েছেন রপ্তানিকারকেরা।
গত বুধবার (২ এপ্রিল) প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের তুলাজাত পণ্যের উপর শুল্ক ১৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ নির্ধারণ করেন। এই সিদ্ধান্তে রপ্তানির প্রায় ৮০ শতাংশ আয় করা খাতটিতে তাৎক্ষণিক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
দেশটির সঙ্গে রপ্তানি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানিয়েছেন, যেন নতুন শুল্ক কার্যকরের সময়সীমা তিন মাস পেছানো হয়। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সম্ভাব্য রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে তুলা, গম, ভুট্টা ও সয়াবিন যা যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদেরও উপকারে আসতে পারে।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় রপ্তানিকারকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম উদ্বেগ। এসেনসর ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদার প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমান জানান, “রোববার আমার একজন নিয়মিত মার্কিন ক্রেতা ৩ লাখ ডলারের চালান স্থগিত করেছেন। আমরা কেউই নিশ্চিত নই, সামনে কী অপেক্ষা করছে।”
উইকিটেক্স বিডির সিইও একেএম সাইফুর রহমান বলেন, “আমার মার্কিন ক্রেতা জানিয়েছেন তারা অতিরিক্ত শুল্কের বোঝা ভোক্তাদের উপর চাপাতে পারবেন না। ফলে আমাদেরই দাম কমাতে হবে।”
এই পরিস্থিতিতে বিজিএমইএ-এর প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন মার্কিন ক্রেতাদের উদ্দেশে খোলা চিঠিতে বলেন, “এই সংকটময় সময়ে সরবরাহকারীদের উপর বাড়তি চাপ না দিয়ে বরং সহানুভূতির সঙ্গে পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া উচিত।”
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল জানান, “বিশেষ করে ছোট ক্রেতারা এখন চাচ্ছেন আমরা পুরো শুল্ক বোঝা বহন করি, অথবা অন্তত একটি অংশ ভাগ করে নিই। এতে অনেক অর্ডার স্থগিত হয়ে পড়েছে।”
২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে প্রায় ৮.৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, যার মধ্যে ৭.৩৪ বিলিয়ন ডলার এসেছে পোশাক খাত থেকেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব কাটিয়ে ওঠার এই সময়েই নতুন শুল্ক নীতির ধাক্কা বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে।