লবণাক্ত জমিতে বিনা চাষে সূর্যমুখীতে সফলতা, কৃষকদের মুখে হাসি

- আপডেট সময় ০৪:৪৭:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
- / 21
দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত জমিতে রোপা আমনের পর জমি পড়ে থাকাটাই যেন ছিল নিয়ম। তবে সেই নিয়ম ভাঙছে সূর্যমুখী। আমন ধান কাটার পর ফেলে রাখা জমিতে এখন সফলভাবে চাষ হচ্ছে সূর্যমুখী, তাও আবার বিনা চাষে ডিব্লিং পদ্ধতিতে। এই নতুন প্রযুক্তির বিস্তার ঘটাতে নিরলসভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা), সাতক্ষীরা উপকেন্দ্র।
বিনার গবেষণা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সম্প্রতি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার সাহস ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত হয় মাঠ পর্যায়ের একটি মূল্যায়ন সভা। যেখানে সূর্যমুখী চাষে লবণাক্ত জমির সম্ভাবনা ও কৃষকদের আগ্রহ বাড়ানো নিয়ে আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএআরসির মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হারুনুর রশীদ। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম। আরও উপস্থিত ছিলেন বিনার পরিচালক ড. মো. আজিজুল হক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, পিসিইউ-বিএআরসি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ড. মো. আশরাফুল আলম, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. জামাল উদ্দিন, খুলনা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, বিনা উপকেন্দ্র সাতক্ষীরার ইনচার্জ ড. শিল্পী দাস এবং ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইনসাদ ইবনে আমিন।
সভায় জানানো হয়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকেরা আমন ধান কাটার পর নভেম্বরে ভেজা মাটিতে সূর্যমুখীর বীজ বপন করেন ডিব্লিং পদ্ধতিতে। পরবর্তীতে চারার গোড়া শক্ত হলে সার প্রয়োগ করা হয়। গবেষণায় তিনটি জাত স্থানীয়, বারি সূর্যমুখী-২ এবং হাইসান-৩৩ ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে হাইসান-৩৩ জাতটি সবচেয়ে বেশি ফলন দিয়েছে।
বিএআরসির চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম বলেন, “সূর্যমুখী একটি লবণসহিষ্ণু ফসল। এই অঞ্চলের লবণাক্ত জমিতে এই ফসলের চাষ কৃষকের জন্য নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। আমরা চাষিদের উৎসাহিত করতে গবেষণালব্ধ জ্ঞান কৃষি বিভাগ এবং মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে দিচ্ছি।”
লবণাক্ত জমিকে চাষোপযোগী করে তোলা এবং ফসল বৈচিত্র্য নিশ্চিত করতে সূর্যমুখী চাষ এখন নতুন আশার আলো হয়ে উঠছে। এতে যেমন কৃষকের বাড়তি আয় নিশ্চিত হবে, তেমনি দেশের ভোজ্যতেল নির্ভরতায়ও আসবে স্বস্তি।