প্লাস্টিক নয়, বিকল্পের পথে এগোচ্ছে বাংলাদেশ: পরিবেশ উপদেষ্টা

- আপডেট সময় ০৮:২১:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
- / 5
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, পরিবেশ রক্ষায় পলিথিনের ভয়াবহতা বুঝে এখনই বিকল্প ব্যবহারের সময়। পাট, কাগজ ও কাপড়ের মতো পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহারে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীতে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও বৃক্ষমেলা উপলক্ষে আয়োজিত মেলা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি জানান, প্লাস্টিক দূষণ রোধে নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের সব সুপারশপ পলিথিনমুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি একবার ব্যবহারযোগ্য ১৭টি প্লাস্টিক পণ্যে নিরুৎসাহ এবং সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বন্ধে সরকারের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে।
এর আগে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০২৫’ এবং ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৫’-এর উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরিবেশ মেলা চলবে ২৫ থেকে ২৭ জুন এবং বৃক্ষমেলা চলবে ২৪ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা উন্মুক্ত থাকবে।
অনুষ্ঠানে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অগ্রাধিকারভিত্তিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, পরিবেশ প্রশাসনে গতিশীলতা ও সক্ষমতা বাড়াতে বন আইন ১৯২৭, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ ও জীববৈচিত্র্য আইনের সংস্কার চলছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।
নদী সংরক্ষণের বিষয়ে উপদেষ্টা জানান, দেশের নদ-নদীর তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ঢাকার তুরাগসহ চারটি নদী ও ২০টি খালের জন্য ব্লু-নেটওয়ার্ক পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। বড়াল, করতোয়া, সুতাংসহ ১৫টি নদী পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে রয়েছে। নদীর স্বাস্থ্য নিরীক্ষার জন্য ‘হেলথ কার্ড’ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বন সংরক্ষণের জন্য মধুপুর শালবন ও চুনতি বন পুনরুদ্ধার, অবৈধ দখলমুক্ত ১১,৪৫৯ একর বনভূমি উদ্ধার এবং সোনাদিয়া উপকূলীয় বন ও রাজশাহীর দুটি জলাভূমিকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। ইটভাটা নিয়ন্ত্রণে “নো-ব্রিকফিল্ড জোন” গঠন, পুরনো যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, অনলাইন মনিটরিং, বনকর্মীদের ঝুঁকিভাতা এবং পৃথক পরিবেশ ক্যাডার গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, “পরিবেশ সুরক্ষা শুধু দায়িত্ব নয়, আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন।”
অনুষ্ঠানে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি ও সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরিবেশ রক্ষা ও বনায়নে অবদান রাখায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। পরে উপদেষ্টা ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন এবং স্টল পরিদর্শন করেন।