রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি: সারাদেশে স্থবির রেল যোগাযোগ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
রানিং এলাউন্সসহ একাধিক দাবি আদায়ে কর্মবিরতিতে গেছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। এর ফলে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল সোমবার (২৭ জানুয়ারি) রাত পৌনে একটায় পঞ্চগড় এক্সপ্রেস কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর আর কোনো ট্রেন চলেনি। এতে আজ মঙ্গলবার ভোরে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতি মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা প্রদানের দাবি জানিয়ে আসছে। এই দাবিগুলো পূরণ না হওয়ায় কর্মবিরতি ডাকা হয়েছে। রানিং স্টাফদের মধ্যে ট্রেন চালক, গার্ড ও টিকিট চেকার রয়েছেন।
রেল মন্ত্রণালয় যাত্রী ভোগান্তি এড়াতে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানালেও আন্দোলনরত কর্মীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ চার বছর ধরে দাবি উপেক্ষিত হওয়ায় এবার তাদের কর্মবিরতি ছাড়া আর কোনো পথ খোলা ছিল না।
সমিতির নেতারা জানান, নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের পর রানিং স্টাফদের নির্দিষ্ট সময় বিশ্রামের সুযোগ দেওয়া হয়। সেই বিশ্রামের সময় কাজে যুক্ত করা হলে অতিরিক্ত ভাতা দেওয়া হয়, যা ‘মাইলেজ’ নামে পরিচিত। এটি দীর্ঘ ১৬০ বছর ধরে পেনশনের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কিন্তু ২০২০ সালে রেলের কোডিফাইড রুল অমান্য করে মাইলেজ সুবিধা বেতন খাত থেকে সরিয়ে টিএ খাতে স্থানান্তর করা হয়। এর পর ২০২১ সালে অর্থ মন্ত্রণালয় মাইলেজকে পেনশন হিসাবের অংশ হিসেবে গ্রহণে আপত্তি জানায়।
রানিং স্টাফদের দাবি, ১৬০ বছরের নিয়ম হুট করে বন্ধ করে দেওয়া কোনোভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান বলেন, “আমরা বারবার সময় দিয়েছি, বারবার আন্দোলন স্থগিত করেছি। কিন্তু আমাদের দাবি উপেক্ষা করা হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়কে দ্রুত স্পষ্টীকরণ চিঠি দিতে হবে। এটি নতুন কোনো দাবি নয়; যুগ যুগ ধরে চলে আসা একটি নিয়ম আমরা শুধু পুনঃস্থাপনের দাবি করছি। এবার আর পেছানোর সুযোগ নেই।”
এ বিষয়ে রেল মন্ত্রণালয় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করছেন যাত্রীরা। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত সমস্যার সমাধান না হবে, ততক্ষণ দেশের রেল যোগাযোগ অচল থাকবে।