ঢাকা ০৮:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
নীলফামারীতে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বালিকা বিদ্যালয়ে এসএসসিতে সবাই ফেল, বইছে সমালোচনার ঝড় নাইজেরিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ৩০ সশস্ত্র দস্যু নিহত সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১২৮৪ জন তরুণদের হতে হবে ডিজিটাল ভবিষ্যতের সহ-নির্মাতা: জাতিসংঘ মহাসচিব লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে মোংলা বন্দরে রেকর্ড রাজস্ব আদায় ও জাহাজ আগমন ইসির তফসিলে যুক্ত হচ্ছে আরও ৪৬টি প্রতীক, তফসিলে মোট সংখ্যা দাঁড়াবে ১১৫ এসএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু ১১ জুলাই থেকে এসএসসি-সমমান পরীক্ষায় পাস করেনি ১৩৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেউই পাহাড় ধ্বসে আশঙ্কায় বান্দরবানের ৯০টি রিসোর্ট বন্ধ মানিকগঞ্জে সাপের কামড়ে মৃত্যু নয়, গাফিলতিতেই গেল ৬ বছরের মুন্নির প্রাণ

শ্রীমঙ্গলে সেপটিক ট্যাংকে নেমে বিষক্রিয়ায় ৪ তরুণের মর্মান্তিক মৃত্যু

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:৫৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
  • / 2

ছবি সংগৃহীত

 

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের হরিণছড়া চা বাগানে সেপটিক ট্যাংকে পড়ে যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে গিয়ে বিষক্রিয়ায় ৪ তরুণের করুণ মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় আরও দুজন গুরুতর অসুস্থ হন, যাদের মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. প্রণয় কান্তি দাশ জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে একজনের মোবাইল ফোন সেপটিক ট্যাংকে পড়ে গেলে সেটি তুলতে গিয়ে একে একে চারজন ট্যাংকের ভেতরে নামেন। কিন্তু ট্যাংকের ভেতরের বিষাক্ত গ্যাসে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মারা যান।

নিহত চার তরুণ হলেন রানা নায়ক (১৭), শ্রাবণ নায়েক (১৯), কৃষ্ণ রবিদাস (২০) ও নিপেন ফুলমালি (২৭)। তাঁরা সবাই হরিণছড়া চা বাগানের চা শ্রমিক পরিবারের সন্তান। গুরুতর অসুস্থ রবি বুনার্জী (২০) নামের এক তরুণকে প্রথমে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সব্যসাচী পাল তমাল জানান, রাত পৌনে ১টার দিকে প্রথমে চারটি মরদেহ হাসপাতালে আসে এবং পরে একজন আহত অবস্থায় ভর্তি হন। তাঁর ভাষায়, “এক রিঙের একটি সেপটিক ট্যাংকে এত পরিমাণ টক্সিক গ্যাস কীভাবে জমেছে, সেটি স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”

শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, পুলিশ রাত দেড়টার দিকে ঘটনাটি জানতে পারে এবং দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি পংকজ কন্দ বলেন, “হরিণছড়া চা বাগানের এই চার তরুণের মৃত্যু অত্যন্ত মর্মান্তিক। শুনেছি, একজনের মোবাইল ফোন পড়ে গেলে সেটি তুলতে গিয়ে একে একে চারজন ট্যাংকে নামে এবং সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ে।”

তিনি আরও জানান, পরে রবি বুনার্জী নামের এক তরুণ ওই চারজনকে উদ্ধার করতে ট্যাংকে নামলে তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়েন। সর্বশেষ জাস্টিন নামের আরেক তরুণ এসে রবি বুনার্জীকে দ্রুত উদ্ধার করলেও বাকি চারজনকে আর জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। জাস্টিনও পরে শ্বাসকষ্টে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

এই দুর্ঘটনা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা ঘটনাটিকে ‘চরম অসতর্কতা’ ও ‘বেদনাদায়ক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

শ্রীমঙ্গলে সেপটিক ট্যাংকে নেমে বিষক্রিয়ায় ৪ তরুণের মর্মান্তিক মৃত্যু

আপডেট সময় ১০:৫৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

 

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের হরিণছড়া চা বাগানে সেপটিক ট্যাংকে পড়ে যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে গিয়ে বিষক্রিয়ায় ৪ তরুণের করুণ মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় আরও দুজন গুরুতর অসুস্থ হন, যাদের মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. প্রণয় কান্তি দাশ জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে একজনের মোবাইল ফোন সেপটিক ট্যাংকে পড়ে গেলে সেটি তুলতে গিয়ে একে একে চারজন ট্যাংকের ভেতরে নামেন। কিন্তু ট্যাংকের ভেতরের বিষাক্ত গ্যাসে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মারা যান।

নিহত চার তরুণ হলেন রানা নায়ক (১৭), শ্রাবণ নায়েক (১৯), কৃষ্ণ রবিদাস (২০) ও নিপেন ফুলমালি (২৭)। তাঁরা সবাই হরিণছড়া চা বাগানের চা শ্রমিক পরিবারের সন্তান। গুরুতর অসুস্থ রবি বুনার্জী (২০) নামের এক তরুণকে প্রথমে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সব্যসাচী পাল তমাল জানান, রাত পৌনে ১টার দিকে প্রথমে চারটি মরদেহ হাসপাতালে আসে এবং পরে একজন আহত অবস্থায় ভর্তি হন। তাঁর ভাষায়, “এক রিঙের একটি সেপটিক ট্যাংকে এত পরিমাণ টক্সিক গ্যাস কীভাবে জমেছে, সেটি স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”

শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, পুলিশ রাত দেড়টার দিকে ঘটনাটি জানতে পারে এবং দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি পংকজ কন্দ বলেন, “হরিণছড়া চা বাগানের এই চার তরুণের মৃত্যু অত্যন্ত মর্মান্তিক। শুনেছি, একজনের মোবাইল ফোন পড়ে গেলে সেটি তুলতে গিয়ে একে একে চারজন ট্যাংকে নামে এবং সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ে।”

তিনি আরও জানান, পরে রবি বুনার্জী নামের এক তরুণ ওই চারজনকে উদ্ধার করতে ট্যাংকে নামলে তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়েন। সর্বশেষ জাস্টিন নামের আরেক তরুণ এসে রবি বুনার্জীকে দ্রুত উদ্ধার করলেও বাকি চারজনকে আর জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। জাস্টিনও পরে শ্বাসকষ্টে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

এই দুর্ঘটনা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা ঘটনাটিকে ‘চরম অসতর্কতা’ ও ‘বেদনাদায়ক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।