০৭:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
মোহাম্মদপুরে মা–মেয়েকে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ঢাকা-১১ আসনে নির্বাচন করবেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম থাই–কাম্বোডিয়া সীমান্তে পুনরায় উত্তেজনা: অস্ত্রবিরতি ভেঙে বিমান হামলা, নিহত ১ সৈন্য ইসির সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতের প্রতিনিধি দল জার্মান সেনাবাহিনী বাড়ছে: ২০৩৫ সালের মধ্যে ২,৬০,০০০ সক্রিয় সদস্যের লক্ষ্য অনুমোদন মধ্যপ্রাচ্যের কঠিনতম পানি প্রকল্প সম্পন্ন করল ইরান ফিনল্যান্ডে ডাটা সেন্টারের নির্গত  তাপে গরম হচ্ছে পুরো শহর চীন কোয়ান্টাম কম্পিউটারে সফলতা পেলে যুক্তরাষ্ট্রকে এক নিমেষে প্রস্তরযুগে পাঠিয়ে দেবে যুক্তরাষ্ট্রের F-35 যুদ্ধবিমান প্রকল্পে ফিরে আসার বিষয়ে আরো একধাপ এগিয়ে গেল তুরস্ক: এমনটাই জানিয়েছেন তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাক।
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি

ডিএনএ পরীক্ষার পর ফরিদপুরে দাফন করা হলো ছোট্ট রাইসাকে

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৪০:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
  • / 93

ছবি: সংগৃহীত

 

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী রাইসা মনিকে শেষ বিদায় দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯টায় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাকে পাশের বাজড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

দুর্ঘটনার পরপরই নিখোঁজ রাইসার পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবের পরীক্ষায় তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার ডিএনএ পরীক্ষার ভিত্তিতে রাইসা এবং আরও চারজনের পরিচয় নিশ্চিত হলে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

রাতেই রাইসার পরিবার ঢাকা থেকে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এবং শুক্রবার ভোরে বাড়িতে পৌঁছায়। সকাল ৯টায় জানাজা শেষে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

১১ বছর বয়সী রাইসা মনি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। দুর্ঘটনার পর থেকে তার কোনো খোঁজ না মেলায় পরিবার গভীর উদ্বেগে ছিল। অবশেষে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হলে পুরো পরিবার ভেঙে পড়ে শোকে।

রাইসার বাবা শাহাবুল শেখ বলেন, “বিমান দুর্ঘটনার পরের দিন, ২২ জুলাই, সিআইডির ডিএনএ দল আমাদের নমুনা সংগ্রহ করে। এরপর যখন মেয়ের মরদেহ শনাক্ত হয়, তখন আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আমরা রাতেই রওনা দিয়ে সকালে বাড়িতে পৌঁছাই এবং দাফনের আয়োজন করি।”

তিন ভাইবোনের মধ্যে রাইসা ছিল দ্বিতীয়। বড় বোন সিনথিয়া পড়ে অষ্টম শ্রেণিতে এবং ছোট ভাই রাফসান শেখ এখনো বয়সে শিশু (৪ বছর)। মেয়েকে হারিয়ে অসহনীয় বেদনায় দিন কাটাচ্ছেন তার বাবা-মা—শাহাবুল শেখ ও মিম আক্তার।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, সন্তানদের ভালো শিক্ষা দিতে তারা রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি করান। রাইসা তৃতীয় শ্রেণিতে এবং বড় বোন সিনথিয়া অষ্টম শ্রেণিতে সেখানে লেখাপড়া করছিল।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ওবায়দুর রহমান জানান, “রাইসার মৃত্যুর খবরে পুরো গ্রাম স্তব্ধ হয়ে গেছে। যখন মরদেহ বাড়িতে আসে, তখন এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।”

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান দিয়াবাড়ি এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হায়দার আলী ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনায় সরকারি হিসাব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৩১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে এবং আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও অন্তত ৬৯ জন।

এই দুর্ঘটনার পর সারা দেশে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বিষয় :

নিউজটি শেয়ার করুন

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি

ডিএনএ পরীক্ষার পর ফরিদপুরে দাফন করা হলো ছোট্ট রাইসাকে

আপডেট সময় ১১:৪০:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

 

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী রাইসা মনিকে শেষ বিদায় দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ৯টায় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাজড়া ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাকে পাশের বাজড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

দুর্ঘটনার পরপরই নিখোঁজ রাইসার পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবের পরীক্ষায় তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার ডিএনএ পরীক্ষার ভিত্তিতে রাইসা এবং আরও চারজনের পরিচয় নিশ্চিত হলে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

রাতেই রাইসার পরিবার ঢাকা থেকে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এবং শুক্রবার ভোরে বাড়িতে পৌঁছায়। সকাল ৯টায় জানাজা শেষে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

১১ বছর বয়সী রাইসা মনি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। দুর্ঘটনার পর থেকে তার কোনো খোঁজ না মেলায় পরিবার গভীর উদ্বেগে ছিল। অবশেষে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হলে পুরো পরিবার ভেঙে পড়ে শোকে।

রাইসার বাবা শাহাবুল শেখ বলেন, “বিমান দুর্ঘটনার পরের দিন, ২২ জুলাই, সিআইডির ডিএনএ দল আমাদের নমুনা সংগ্রহ করে। এরপর যখন মেয়ের মরদেহ শনাক্ত হয়, তখন আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আমরা রাতেই রওনা দিয়ে সকালে বাড়িতে পৌঁছাই এবং দাফনের আয়োজন করি।”

তিন ভাইবোনের মধ্যে রাইসা ছিল দ্বিতীয়। বড় বোন সিনথিয়া পড়ে অষ্টম শ্রেণিতে এবং ছোট ভাই রাফসান শেখ এখনো বয়সে শিশু (৪ বছর)। মেয়েকে হারিয়ে অসহনীয় বেদনায় দিন কাটাচ্ছেন তার বাবা-মা—শাহাবুল শেখ ও মিম আক্তার।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, সন্তানদের ভালো শিক্ষা দিতে তারা রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি করান। রাইসা তৃতীয় শ্রেণিতে এবং বড় বোন সিনথিয়া অষ্টম শ্রেণিতে সেখানে লেখাপড়া করছিল।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ওবায়দুর রহমান জানান, “রাইসার মৃত্যুর খবরে পুরো গ্রাম স্তব্ধ হয়ে গেছে। যখন মরদেহ বাড়িতে আসে, তখন এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।”

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান দিয়াবাড়ি এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হায়দার আলী ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনায় সরকারি হিসাব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৩১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে এবং আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও অন্তত ৬৯ জন।

এই দুর্ঘটনার পর সারা দেশে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।