০৪:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
মোহাম্মদপুরে মা–মেয়েকে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ঢাকা-১১ আসনে নির্বাচন করবেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম থাই–কাম্বোডিয়া সীমান্তে পুনরায় উত্তেজনা: অস্ত্রবিরতি ভেঙে বিমান হামলা, নিহত ১ সৈন্য ইসির সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতের প্রতিনিধি দল জার্মান সেনাবাহিনী বাড়ছে: ২০৩৫ সালের মধ্যে ২,৬০,০০০ সক্রিয় সদস্যের লক্ষ্য অনুমোদন মধ্যপ্রাচ্যের কঠিনতম পানি প্রকল্প সম্পন্ন করল ইরান ফিনল্যান্ডে ডাটা সেন্টারের নির্গত  তাপে গরম হচ্ছে পুরো শহর চীন কোয়ান্টাম কম্পিউটারে সফলতা পেলে যুক্তরাষ্ট্রকে এক নিমেষে প্রস্তরযুগে পাঠিয়ে দেবে যুক্তরাষ্ট্রের F-35 যুদ্ধবিমান প্রকল্পে ফিরে আসার বিষয়ে আরো একধাপ এগিয়ে গেল তুরস্ক: এমনটাই জানিয়েছেন তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাক।

দিনাজপুরে সমতল ভূমিতেও চা চাষে সাফল্য, কৃষকদের নতুন সম্ভাবনা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০২:২৪:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
  • / 85

ছবি সংগৃহীত

 

চা চাষ মানেই সাধারণত পাহাড়ি এলাকা বা সীমান্তবর্তী জেলা, যেমন পঞ্চগড়, সিলেট, মৌলভীবাজার কিংবা হবিগঞ্জ সেখানে চা বাগান গড়ে ওঠার চিত্রটা আমাদের পরিচিত। কিন্তু এবার সেই চিত্র বদলে দিচ্ছে দিনাজপুরের সমতল ভূমি। কৃষকের আগ্রহ, সরকারি সহায়তা এবং শ্রমিকের পরিশ্রমে এই জেলাতেও গড়ে উঠছে চা বাগান, যা এনে দিয়েছে কর্মসংস্থান ও নতুন সম্ভাবনার দুয়ার।

২০১৭ সালে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ঝাড়বাড়ী গ্রামের কৃষক আকতার আলী প্রথমবারের মতো চা চাষ শুরু করেন। পঞ্চগড় থেকে চা গাছের চারা সংগ্রহ করে দুই বিঘা জমিতে রোপণ করেন তিনি। প্রতি চারা চার টাকা দরে আনেন তিন হাজার চারা। মাত্র ছয় মাস পরই সংগ্রহ হয় ৫০ কেজি পাতা। এক বছরের মাথায় দেড় একর জমি থেকে সংগ্রহ করেন এক হাজার কেজি চা পাতা।

বিজ্ঞাপন

আকতার আলী বলেন, “একবার চারা রোপণ করলে ৬০-৭০ বছর পর্যন্ত সেই জমি থেকে চা উৎপাদন করা যায়। শুধু নিয়মিত পরিচর্যা করলেই হয়।” তার এই সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে আরও কৃষক চা চাষে ঝুঁকছেন। বর্তমানে বীরগঞ্জে ১৩ হেক্টর জমিতে ১১ জন কৃষক চা বাগান করেছেন।

চা বাগান গড়ে ওঠায় স্থানীয় বেকার শ্রমিকদের জন্য নতুন করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমিকরা জানান, আগে কাজের জন্য বাইরে যেতে হতো, এখন গ্রামেই কাজ মিলছে। আয় বাড়ছে, সংসার চলছে ভালোভাবে।

চাষিদের পাশে আছে কৃষি বিভাগও। বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, “সার, সেচ ও কীটনাশক ব্যবহারে নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের, যাতে চা চাষ আরও ফলপ্রসূ হয়।”

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দিনাজপুর জেলায় ইতোমধ্যে ২৬ হেক্টর জমিতে ১৫টি চা বাগান গড়ে উঠেছে। শুধু চাষই নয়, এই নতুন উদ্যোগ দিনাজপুরের কৃষিকে এনে দিচ্ছে এক নতুন পরিচয় সমতলে সম্ভাবনার চা রাজ্য।

এই সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ নিচ্ছে দিনাজপুরের সবুজ মাটিতে, যেখানে প্রতিটি চা গাছই সাক্ষ্য দিচ্ছে গ্রামের মানুষের নতুন জীবনের, আয়ের এবং উন্নয়নের গল্প।

নিউজটি শেয়ার করুন

দিনাজপুরে সমতল ভূমিতেও চা চাষে সাফল্য, কৃষকদের নতুন সম্ভাবনা

আপডেট সময় ০২:২৪:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

 

চা চাষ মানেই সাধারণত পাহাড়ি এলাকা বা সীমান্তবর্তী জেলা, যেমন পঞ্চগড়, সিলেট, মৌলভীবাজার কিংবা হবিগঞ্জ সেখানে চা বাগান গড়ে ওঠার চিত্রটা আমাদের পরিচিত। কিন্তু এবার সেই চিত্র বদলে দিচ্ছে দিনাজপুরের সমতল ভূমি। কৃষকের আগ্রহ, সরকারি সহায়তা এবং শ্রমিকের পরিশ্রমে এই জেলাতেও গড়ে উঠছে চা বাগান, যা এনে দিয়েছে কর্মসংস্থান ও নতুন সম্ভাবনার দুয়ার।

২০১৭ সালে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ঝাড়বাড়ী গ্রামের কৃষক আকতার আলী প্রথমবারের মতো চা চাষ শুরু করেন। পঞ্চগড় থেকে চা গাছের চারা সংগ্রহ করে দুই বিঘা জমিতে রোপণ করেন তিনি। প্রতি চারা চার টাকা দরে আনেন তিন হাজার চারা। মাত্র ছয় মাস পরই সংগ্রহ হয় ৫০ কেজি পাতা। এক বছরের মাথায় দেড় একর জমি থেকে সংগ্রহ করেন এক হাজার কেজি চা পাতা।

বিজ্ঞাপন

আকতার আলী বলেন, “একবার চারা রোপণ করলে ৬০-৭০ বছর পর্যন্ত সেই জমি থেকে চা উৎপাদন করা যায়। শুধু নিয়মিত পরিচর্যা করলেই হয়।” তার এই সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে আরও কৃষক চা চাষে ঝুঁকছেন। বর্তমানে বীরগঞ্জে ১৩ হেক্টর জমিতে ১১ জন কৃষক চা বাগান করেছেন।

চা বাগান গড়ে ওঠায় স্থানীয় বেকার শ্রমিকদের জন্য নতুন করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমিকরা জানান, আগে কাজের জন্য বাইরে যেতে হতো, এখন গ্রামেই কাজ মিলছে। আয় বাড়ছে, সংসার চলছে ভালোভাবে।

চাষিদের পাশে আছে কৃষি বিভাগও। বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, “সার, সেচ ও কীটনাশক ব্যবহারে নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের, যাতে চা চাষ আরও ফলপ্রসূ হয়।”

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দিনাজপুর জেলায় ইতোমধ্যে ২৬ হেক্টর জমিতে ১৫টি চা বাগান গড়ে উঠেছে। শুধু চাষই নয়, এই নতুন উদ্যোগ দিনাজপুরের কৃষিকে এনে দিচ্ছে এক নতুন পরিচয় সমতলে সম্ভাবনার চা রাজ্য।

এই সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ নিচ্ছে দিনাজপুরের সবুজ মাটিতে, যেখানে প্রতিটি চা গাছই সাক্ষ্য দিচ্ছে গ্রামের মানুষের নতুন জীবনের, আয়ের এবং উন্নয়নের গল্প।