ঢাকা ১০:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সুন্দরবন রক্ষায় একটি সুনির্দিষ্ট কনক্রিট কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যই ভবিষ্যতের চাবিকাঠি: শিক্ষা উপদেষ্টা দেশীয় গবাদি পশু বিশ্বমানে উন্নীত করা সম্ভব: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা কুষ্টিয়া-১ আসনের সাবেক এমপি গ্রেপ্তার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে জামায়াতের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা: প্রেসসচিব ইরানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শেয়ার বাজার কারসাজি: সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা শান্ত-মুশফিকের জোড়া সেঞ্চুরিতে প্রথম দিন শেষে বড় সংগ্রহের পথে টাইগাররা ডেঙ্গু তাণ্ডব অব্যাহত: ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ২৪৪, বরিশালে সর্বোচ্চ ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় সব পক্ষের প্রতিনিধিত্ব নেই: এনসিপি

নতুন ধানের জাত ‘জিএইউ ধান-৩ উদ্ভাবন করল গাকৃবি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৬:০৬:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
  • / 38

ছবি: সংগৃহীত

 

গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (গাকৃবি) উদ্ভাবন করেছে পুষ্টি ও সুবাসে সমৃদ্ধ একটি নতুন ধানের জাত, যার নাম ‘জিএইউ ধান-৩’। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. নাসরীন আক্তার আইভীর নেতৃত্বে চার বছরব্যাপী গবেষণার মাধ্যমে এই জাতটি সফলভাবে উদ্ভাবিত হয়। এটি গাকৃবির উদ্ভাবিত ৯০তম জাত।

জিএইউ ধান-৩ একটি প্রিমিয়াম কোয়ালিটির সুগন্ধিযুক্ত ধান, যা জিঙ্ক ও লৌহে সমৃদ্ধ। এর চালে উচ্চমাত্রার জিঙ্ক ও লৌহ থাকায় এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে, ফলে শরীর হয় শক্তি-সমৃদ্ধ। জাতটি রান্নার সময় সুগন্ধ ছড়ায়, যা ভোক্তাদের আগ্রহ বাড়াবে।

গবেষণা সূত্রে জানা যায়, গাকৃবির গবেষণা মাঠে দীর্ঘ সময় ধরে ফলন ও মান যাচাইয়ের পর ২০২১ ও ২০২২ সালে দেশের বিভিন্ন জেলায় কৃষকদের মাধ্যমে এই জাতটি মাঠপর্যায়ে পরীক্ষা করা হয়। পরবর্তীতে জাতীয় বীজ বোর্ড ২০২৫ সালের ২০ এপ্রিল জাতটি অনুমোদন দেয়।

জিএইউ ধান-৩ আধুনিক উফশী ধানের সব বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। দানা চিকন ও লম্বা, গাছ বড় ও কাণ্ড মোটা। এতে কুশির সংখ্যাও বেশি হওয়ায় বেশি খড় পাওয়া যায়, যা গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে বিশেষভাবে উপযোগী। আমন মৌসুমে প্রায় তিন মাসে এবং বোরো মৌসুমে সাড়ে তিন মাসে ধান উৎপাদন করা যায়। সাধারণ জাতের তুলনায় এটি গড়ে ১৫ ভাগ বেশি ফলন দেয়।

এই ধানের ফলন হেক্টরপ্রতি প্রায় ৫.৫ থেকে ৬ টন পর্যন্ত হয়। এতে শতকরা ২৬ ভাগ অ্যামাইলেজ এনজাইম রয়েছে, যা শরীরে শর্করাকে সহজে ভেঙে শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে। শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য এ ধানের জিঙ্ক বিশেষভাবে উপকারী।

এছাড়া, জাতটির জলবায়ু সহনশীলতা ও রোগ-পোকা প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকায় এটি দেশের বৈচিত্র্যময় আবহাওয়ায় চাষের জন্য উপযোগী ও লাভজনক।

গাকৃবির ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টিতে এ জাতটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

উল্লেখ্য, ড. নাসরীন আক্তার আইভী এর আগে পেঁপে, ধান, টমেটো, লাউ ও মটরশুঁটি মিলিয়ে মোট ১৩টি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন, যা দেশের কৃষিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

নতুন ধানের জাত ‘জিএইউ ধান-৩ উদ্ভাবন করল গাকৃবি

আপডেট সময় ০৬:০৬:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

 

গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (গাকৃবি) উদ্ভাবন করেছে পুষ্টি ও সুবাসে সমৃদ্ধ একটি নতুন ধানের জাত, যার নাম ‘জিএইউ ধান-৩’। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. নাসরীন আক্তার আইভীর নেতৃত্বে চার বছরব্যাপী গবেষণার মাধ্যমে এই জাতটি সফলভাবে উদ্ভাবিত হয়। এটি গাকৃবির উদ্ভাবিত ৯০তম জাত।

জিএইউ ধান-৩ একটি প্রিমিয়াম কোয়ালিটির সুগন্ধিযুক্ত ধান, যা জিঙ্ক ও লৌহে সমৃদ্ধ। এর চালে উচ্চমাত্রার জিঙ্ক ও লৌহ থাকায় এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে, ফলে শরীর হয় শক্তি-সমৃদ্ধ। জাতটি রান্নার সময় সুগন্ধ ছড়ায়, যা ভোক্তাদের আগ্রহ বাড়াবে।

গবেষণা সূত্রে জানা যায়, গাকৃবির গবেষণা মাঠে দীর্ঘ সময় ধরে ফলন ও মান যাচাইয়ের পর ২০২১ ও ২০২২ সালে দেশের বিভিন্ন জেলায় কৃষকদের মাধ্যমে এই জাতটি মাঠপর্যায়ে পরীক্ষা করা হয়। পরবর্তীতে জাতীয় বীজ বোর্ড ২০২৫ সালের ২০ এপ্রিল জাতটি অনুমোদন দেয়।

জিএইউ ধান-৩ আধুনিক উফশী ধানের সব বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। দানা চিকন ও লম্বা, গাছ বড় ও কাণ্ড মোটা। এতে কুশির সংখ্যাও বেশি হওয়ায় বেশি খড় পাওয়া যায়, যা গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে বিশেষভাবে উপযোগী। আমন মৌসুমে প্রায় তিন মাসে এবং বোরো মৌসুমে সাড়ে তিন মাসে ধান উৎপাদন করা যায়। সাধারণ জাতের তুলনায় এটি গড়ে ১৫ ভাগ বেশি ফলন দেয়।

এই ধানের ফলন হেক্টরপ্রতি প্রায় ৫.৫ থেকে ৬ টন পর্যন্ত হয়। এতে শতকরা ২৬ ভাগ অ্যামাইলেজ এনজাইম রয়েছে, যা শরীরে শর্করাকে সহজে ভেঙে শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে। শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য এ ধানের জিঙ্ক বিশেষভাবে উপকারী।

এছাড়া, জাতটির জলবায়ু সহনশীলতা ও রোগ-পোকা প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকায় এটি দেশের বৈচিত্র্যময় আবহাওয়ায় চাষের জন্য উপযোগী ও লাভজনক।

গাকৃবির ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টিতে এ জাতটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

উল্লেখ্য, ড. নাসরীন আক্তার আইভী এর আগে পেঁপে, ধান, টমেটো, লাউ ও মটরশুঁটি মিলিয়ে মোট ১৩টি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন, যা দেশের কৃষিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।