ঢাকা ০৭:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ফুটবলার হিসেবে রোনালদোর নতুন রেকর্ড পাঁচ বছরে ৫০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেবে পাকিস্তান প্রকৌশল খাতে বৈষম্য দূরীকরণের দাবিতে রাজশাহীতে বিক্ষোভ ইসিতে সীমানা শুনানির সময় হাতাহাতি শ্রীবরদীতে জনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ৩ টি মাদ্রাসায় আর্থিক সহায়তা প্রসংশায় ভাসছেন নওগাঁ রাণীনগর অর্গানাইজেশনের তরুণরা পাকিস্তানের পাঞ্জাবে বন্যা, সরিয়ে নেওয়া হলো ১৯ হাজার মানুষ চীনের সাইবার যুদ্ধে অগ্রগতি: যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিপর্যস্ত সিআইএ-র সিনিয়র রাশিয়া বিশেষজ্ঞ বরখাস্ত ইসরাইলের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় বার্সেলোনা মেট্রো টেন্ডার থেকে বাদ পড়ল ফরাসি কোম্পানি

প্রকৌশল খাতে বৈষম্য দূরীকরণের দাবিতে রাজশাহীতে বিক্ষোভ

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:৫৪:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫
  • / 3

ছবি সংগৃহীত

 

 

রাবি প্রতিনিধি

বাংলাদেশের প্রকৌশল খাতকে বৈষম্যমূলক ও সংকটাপন্ন আখ্যা দিয়ে ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে রাবি-রুয়েট-পাবিপ্রবি’র প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, ডিপ্লোমাধারী সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে সহিংস আন্দোলন ও প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে পুরো খাতকে জিম্মি করে রেখেছে, যার ফলে বিএসসি ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীরা নিয়মিতভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন।

রোববার (২৪ আগস্ট) সকাল ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড থেকে বিক্ষোভ শুরু করে জোহা চত্বর হয়ে মেইন গেইটে এসে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, বর্তমানে ১০ম গ্রেড উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে বিএসসি ডিগ্রিধারীরা আবেদন করার সুযোগ পান না, এটি শতভাগ কোটায় সংরক্ষিত ডিপ্লোমাধারীদের জন্য। অথচ অন্য যেকোনো খাতে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরা এ ধরনের পদে আবেদন করতে পারেন। তাঁরা বলেন, এর ফলে দেশের শীর্ষ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের ক্ষেত্রেই সুযোগ হারিয়ে অন্য সেক্টর বা বিদেশমুখী হচ্ছেন।

তারা আরো বলেন, ডিপ্লোমাধারীরা চলতি দায়িত্বে পদোন্নতির মাধ্যমে সহকারী প্রকৌশলী (৯ম গ্রেড) থেকে শুরু করে বিসিএস ক্যাডার পদেও প্রবেশাধিকার পাচ্ছেন। এমনকি একই বছরে বিএসসি প্রকৌশলী আগে নিয়োগ পেলেও, পরবর্তীতে পদোন্নতি পাওয়া ডিপ্লোমাধারীদের সিনিয়রিটি দেওয়া হয়। এসব অনিয়মকে তাঁরা বৈষম্যমূলক ও অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেছেন।

এসময় আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা সরকারের কাছে তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন-

১. সহকারী প্রকৌশলী (৯ম গ্রেড) পদে প্রবেশের জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএসসি ডিগ্রি নির্ধারণ এবং সবার জন্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক করা।

২. উপ-সহকারী প্রকৌশলী (১০ম গ্রেড) পদে শতভাগ কোটা বাতিল করে বিএসসি ও এমএসসি প্রকৌশলীদের আবেদন করার সুযোগ।

৩. বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি ছাড়া কেউ যেন নামের আগে ‘ইঞ্জিনিয়ার’ পদবি ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া।

প্রকৌশলীরা আরো অভিযোগ করেন, ডিপ্লোমাধারী সিন্ডিকেট গত কয়েক দশক ধরে সহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে অবৈধ সুবিধা আদায় করেছে। ১৯৭৮, ১৯৯৪, ২০১৩ সালে তাদের আন্দোলনে সরকারকে নতি স্বীকার করতে হয়েছিল। ২০২৫ সালেও তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকৌশলীদের হুমকি ও অপমান করছে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।

ন্যায্য অধিকারের সাথে একাত্ব পোষন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, রাবির মেইন গেইট সবসময়ই ন্যায্য অধিকার আদায় ও আন্দোলনের প্রতীকী জায়গা। আমরা দেখেছি, জুলাই বিপ্লবের সময় শিক্ষার্থীরা এই মেইন গেইটের সামনেই আন্দোলনের দুর্গ গড়ে তুলেছিল। আজও রাবির শিক্ষার্থীরা ন্যায্য অধিকারের দাবিতে রুয়েট ও পাবনা বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে।

তিনি আরো বলেন, সব ধরনের বৈষম্য ও অযৌক্তিক কোটা বিলোপ হোক। বিশেষ করে নবম ও দশম গ্রেডকে কেন্দ্র করে যে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে, তা যেন দ্রুত সমাধান করা হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সরকার এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলেই আমরা প্রত্যাশা করি।
শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে তাদের পড়াশোনার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। যাতে বৈষম্যের অবসান ঘটাতে শিক্ষার্থীদের আর রাজপথে নামতে না হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

প্রকৌশল খাতে বৈষম্য দূরীকরণের দাবিতে রাজশাহীতে বিক্ষোভ

আপডেট সময় ০৫:৫৪:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫

 

 

রাবি প্রতিনিধি

বাংলাদেশের প্রকৌশল খাতকে বৈষম্যমূলক ও সংকটাপন্ন আখ্যা দিয়ে ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে রাবি-রুয়েট-পাবিপ্রবি’র প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, ডিপ্লোমাধারী সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে সহিংস আন্দোলন ও প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে পুরো খাতকে জিম্মি করে রেখেছে, যার ফলে বিএসসি ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীরা নিয়মিতভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন।

রোববার (২৪ আগস্ট) সকাল ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড থেকে বিক্ষোভ শুরু করে জোহা চত্বর হয়ে মেইন গেইটে এসে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, বর্তমানে ১০ম গ্রেড উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে বিএসসি ডিগ্রিধারীরা আবেদন করার সুযোগ পান না, এটি শতভাগ কোটায় সংরক্ষিত ডিপ্লোমাধারীদের জন্য। অথচ অন্য যেকোনো খাতে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরা এ ধরনের পদে আবেদন করতে পারেন। তাঁরা বলেন, এর ফলে দেশের শীর্ষ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের ক্ষেত্রেই সুযোগ হারিয়ে অন্য সেক্টর বা বিদেশমুখী হচ্ছেন।

তারা আরো বলেন, ডিপ্লোমাধারীরা চলতি দায়িত্বে পদোন্নতির মাধ্যমে সহকারী প্রকৌশলী (৯ম গ্রেড) থেকে শুরু করে বিসিএস ক্যাডার পদেও প্রবেশাধিকার পাচ্ছেন। এমনকি একই বছরে বিএসসি প্রকৌশলী আগে নিয়োগ পেলেও, পরবর্তীতে পদোন্নতি পাওয়া ডিপ্লোমাধারীদের সিনিয়রিটি দেওয়া হয়। এসব অনিয়মকে তাঁরা বৈষম্যমূলক ও অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেছেন।

এসময় আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা সরকারের কাছে তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন-

১. সহকারী প্রকৌশলী (৯ম গ্রেড) পদে প্রবেশের জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএসসি ডিগ্রি নির্ধারণ এবং সবার জন্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক করা।

২. উপ-সহকারী প্রকৌশলী (১০ম গ্রেড) পদে শতভাগ কোটা বাতিল করে বিএসসি ও এমএসসি প্রকৌশলীদের আবেদন করার সুযোগ।

৩. বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি ছাড়া কেউ যেন নামের আগে ‘ইঞ্জিনিয়ার’ পদবি ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া।

প্রকৌশলীরা আরো অভিযোগ করেন, ডিপ্লোমাধারী সিন্ডিকেট গত কয়েক দশক ধরে সহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে অবৈধ সুবিধা আদায় করেছে। ১৯৭৮, ১৯৯৪, ২০১৩ সালে তাদের আন্দোলনে সরকারকে নতি স্বীকার করতে হয়েছিল। ২০২৫ সালেও তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকৌশলীদের হুমকি ও অপমান করছে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।

ন্যায্য অধিকারের সাথে একাত্ব পোষন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, রাবির মেইন গেইট সবসময়ই ন্যায্য অধিকার আদায় ও আন্দোলনের প্রতীকী জায়গা। আমরা দেখেছি, জুলাই বিপ্লবের সময় শিক্ষার্থীরা এই মেইন গেইটের সামনেই আন্দোলনের দুর্গ গড়ে তুলেছিল। আজও রাবির শিক্ষার্থীরা ন্যায্য অধিকারের দাবিতে রুয়েট ও পাবনা বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে।

তিনি আরো বলেন, সব ধরনের বৈষম্য ও অযৌক্তিক কোটা বিলোপ হোক। বিশেষ করে নবম ও দশম গ্রেডকে কেন্দ্র করে যে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে, তা যেন দ্রুত সমাধান করা হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সরকার এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলেই আমরা প্রত্যাশা করি।
শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে তাদের পড়াশোনার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। যাতে বৈষম্যের অবসান ঘটাতে শিক্ষার্থীদের আর রাজপথে নামতে না হয়।