ঈদের দিনেও গাজায় রক্তক্ষরণ: ইসরায়েলি হামলায় ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত

- আপডেট সময় ০৯:২৪:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫
- / 6
বিত্র ঈদুল আজহার দিনেও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অন্তত ৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শুক্রবার (৬ জুন, ২০২৫) ঈদ উদযাপিত হওয়ার দিনেও এই নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়, যা টানা দ্বিতীয় কোরবানির ঈদ যখন গাজার বাসিন্দাদের ওপর হামলা অব্যাহত থাকলো।
গাজার জরুরি পরিষেবা বিভাগ ‘সিভিল ডিফেন্সের’ কর্মকর্তারা এএফপিকে জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর একাধিক হামলায় প্রাথমিকভাবে ৩৮ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এর মধ্যে উত্তর গাজার জাবালিয়ায় একটি হামলায় ১১ জন প্রাণ হারান। তবে, পরবর্তীতে হাসপাতালগুলোর সূত্রের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, মোট নিহতের সংখ্যা ৪২ জনে পৌঁছেছে।
দক্ষিণ গাজার রাফাহর পশ্চিম ও উত্তরের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি বাহিনীর গোলাবর্ষণে অন্তত সাত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গাজায় সব ধরনের ত্রাণ কার্যক্রম বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল পরিচালিত এই বিতর্কিত ফাউন্ডেশনের দেওয়া ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত ১১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর জানিয়েছে।
ইসলামের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা মুসলিম বিশ্বের জন্য আনন্দ ও ত্যাগের বার্তা নিয়ে এলেও, গাজাবাসীর জন্য এটি আবারও পরিণত হয়েছে শোক ও আর্তনাদে। যুদ্ধের বিভীষিকার মধ্যে স্বজনহারা ফিলিস্তিনিদের অনেকেই ঈদের দিনেও প্রিয়জনদের কবরে গিয়ে আহাজারি করছেন। ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদেই বহু মুসল্লিকে ঈদের নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে, যেখানে উৎসবের কোনো আবেশ ছিল না, বরং ছিল শুধু বেঁচে থাকার কঠিন সংগ্রাম।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় এ পর্যন্ত ৫৪,৬৭৭ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১ লাখ ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত ও বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ঈদের মতো পবিত্র দিনেও এই হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকে প্রকাশ্যে অগ্রাহ্য করার শামিল বলে ফিলিস্তিনি অধিকার সংস্থাগুলো মন্তব্য করেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোও এ ধরনের হামলার নিন্দা জানিয়ে চলেছে।