ঢাকা ০১:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
গা/জা/য় অনির্দিষ্টকাল সেনা রাখার ঘোষণা ই*স*রা*য়ে*লের মানুষের ঢলে মুখরিত ৪০০ বছরের প্রাচীন কুলিকুন্ডার শুঁটকি মেলা দাবি আদায়ে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিডিআর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতেই হবে: প্রধান উপদেষ্টা উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য পোড়ালে কঠোর ব্যবস্থা : হুঁশিয়ারি পরিবেশ উপদেষ্টার ই*স*রা*য়ে*লের ভয়াবহ হামলা গা/জা/য় আরো ২৫ ফিলিস্তিনি নিহত দেশীয় মাছের সুরক্ষা ও উৎপাদন বাড়াতে জোর দিলেন মৎস্য উপদেষ্টা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলা শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে: প্রসিকিউটর আগামী রমজানের আগে নির্বাচন চায় জামায়াত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে তহবিল বন্ধের প্রস্তাব দিল ট্রাম্প প্রশাসন 

হাঙ্গেরিতে এলজিবিটিকিউ অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা, সাংবিধানিক সংশোধনী পাস

খবরের কথা ডেস্ক

ছবি সংগৃহীত

 

হাঙ্গেরিতে জনসমক্ষে এলজিবিটিকিউ প্লাস সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করতে নতুন একটি সাংবিধানিক সংশোধনী পাস করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। সমালোচকদের মতে, এটি প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান সরকারের কর্তৃত্ববাদী প্রবণতার আরেকটি প্রতিফলন।

সংশোধনীটি পাস করতে প্রয়োজন ছিল দুই-তৃতীয়াংশ ভোট। শেষ পর্যন্ত ১৪০টি ভোট পক্ষে এবং ২১টি ভোট বিপক্ষে পড়ে প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে সরকার এখন এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের ‘প্রাইড প্যারেড’-এর মতো জনসমাগম নিষিদ্ধ করতে পারবে। সরকার দাবি করছে, এটি শিশুদের নৈতিক ও মানসিক বিকাশ রক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে।

নতুন সংশোধনীতে বলা হয়েছে, জীবনের অধিকারের পরে শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক বিকাশই সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে। এতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারও নিয়ন্ত্রিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

২০১৫ সাল থেকে হাঙ্গেরিতে ফেশিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হলেও এখন এই প্রযুক্তির মাধ্যমে নিষিদ্ধ অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণকারীদের শনাক্ত করা যাবে। কেউ আইন লঙ্ঘন করলে তার বিরুদ্ধে ২ লাখ হাঙ্গেরিয়ান ফোরিন্ট (প্রায় ৫৪৬ ডলার) পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে।

বিরোধী দল মোমেন্টাম পার্টির এমপি দাভিদ বেদো জানান, “অরবান সরকার গত এক যুগ ধরে গণতন্ত্রকে ক্ষয় করছে, এই পরিবর্তন সেই ধারাবাহিকতারই অংশ।”

এছাড়া পার্লামেন্টের প্রবেশপথে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অনেক মানুষ নিজেদের হাতে প্লাস্টিকের টাই বেঁধে প্রতিবাদ জানায়। পুলিশের হস্তক্ষেপে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।

নতুন আইন অনুযায়ী, হাঙ্গেরির সংবিধানে এখন থেকে শুধুমাত্র দুইটি লিঙ্গ পুরুষ ও নারী স্বীকৃত হবে। একইসঙ্গে, দত্তক গ্রহণের ক্ষেত্রে মা হতে হবে নারী এবং পিতা হতে হবে পুরুষ। এর ফলে ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের পরিচয় সাংবিধানিকভাবে অস্বীকার করা হয়েছে।

এছাড়া সংশোধনীতে একটি নতুন ধারা অনুযায়ী, ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরের দেশে দ্বৈত নাগরিকত্বধারী হাঙ্গেরির কোনো নাগরিক যদি দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে ওঠে, তবে তার নাগরিকত্ব ১০ বছর পর্যন্ত স্থগিত রাখা যেতে পারে।

মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবে শিশুদের সুরক্ষা নয়, বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণ ও সরকারের জনপ্রিয়তা ধরে রাখার কৌশল। হাঙ্গেরিয়ান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের আইনজীবী ড্যানেল ড্যাব্রেন্টে একে “শুধুমাত্র প্রপাগান্ডা” বলে মন্তব্য করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০২:০৯:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
৫১২ বার পড়া হয়েছে

হাঙ্গেরিতে এলজিবিটিকিউ অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা, সাংবিধানিক সংশোধনী পাস

আপডেট সময় ০২:০৯:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

 

হাঙ্গেরিতে জনসমক্ষে এলজিবিটিকিউ প্লাস সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করতে নতুন একটি সাংবিধানিক সংশোধনী পাস করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। সমালোচকদের মতে, এটি প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান সরকারের কর্তৃত্ববাদী প্রবণতার আরেকটি প্রতিফলন।

সংশোধনীটি পাস করতে প্রয়োজন ছিল দুই-তৃতীয়াংশ ভোট। শেষ পর্যন্ত ১৪০টি ভোট পক্ষে এবং ২১টি ভোট বিপক্ষে পড়ে প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে সরকার এখন এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের ‘প্রাইড প্যারেড’-এর মতো জনসমাগম নিষিদ্ধ করতে পারবে। সরকার দাবি করছে, এটি শিশুদের নৈতিক ও মানসিক বিকাশ রক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে।

নতুন সংশোধনীতে বলা হয়েছে, জীবনের অধিকারের পরে শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক বিকাশই সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে। এতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারও নিয়ন্ত্রিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

২০১৫ সাল থেকে হাঙ্গেরিতে ফেশিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হলেও এখন এই প্রযুক্তির মাধ্যমে নিষিদ্ধ অনুষ্ঠানগুলোতে অংশগ্রহণকারীদের শনাক্ত করা যাবে। কেউ আইন লঙ্ঘন করলে তার বিরুদ্ধে ২ লাখ হাঙ্গেরিয়ান ফোরিন্ট (প্রায় ৫৪৬ ডলার) পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে।

বিরোধী দল মোমেন্টাম পার্টির এমপি দাভিদ বেদো জানান, “অরবান সরকার গত এক যুগ ধরে গণতন্ত্রকে ক্ষয় করছে, এই পরিবর্তন সেই ধারাবাহিকতারই অংশ।”

এছাড়া পার্লামেন্টের প্রবেশপথে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অনেক মানুষ নিজেদের হাতে প্লাস্টিকের টাই বেঁধে প্রতিবাদ জানায়। পুলিশের হস্তক্ষেপে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।

নতুন আইন অনুযায়ী, হাঙ্গেরির সংবিধানে এখন থেকে শুধুমাত্র দুইটি লিঙ্গ পুরুষ ও নারী স্বীকৃত হবে। একইসঙ্গে, দত্তক গ্রহণের ক্ষেত্রে মা হতে হবে নারী এবং পিতা হতে হবে পুরুষ। এর ফলে ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের পরিচয় সাংবিধানিকভাবে অস্বীকার করা হয়েছে।

এছাড়া সংশোধনীতে একটি নতুন ধারা অনুযায়ী, ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরের দেশে দ্বৈত নাগরিকত্বধারী হাঙ্গেরির কোনো নাগরিক যদি দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে ওঠে, তবে তার নাগরিকত্ব ১০ বছর পর্যন্ত স্থগিত রাখা যেতে পারে।

মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবে শিশুদের সুরক্ষা নয়, বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণ ও সরকারের জনপ্রিয়তা ধরে রাখার কৌশল। হাঙ্গেরিয়ান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের আইনজীবী ড্যানেল ড্যাব্রেন্টে একে “শুধুমাত্র প্রপাগান্ডা” বলে মন্তব্য করেছেন।