তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় শীর্ষ জেনারেল ও পরমাণু বিজ্ঞানীরা নিহত, ইরানের কঠোর প্রতিক্রিয়ার হুঁশিয়ারি

- আপডেট সময় ০৩:১৬:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫
- / 8
ইরানের রাজধানী তেহরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলের বিমান হামলায় দেশটির *খাতাম আল-আনবিয়া কেন্দ্রীয় কমান্ডের মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশীদ ও তার ছেলে নিহত হয়েছেন।* একই হামলায় *ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি* এবং দুই শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী *মোহাম্মদ মাহদি তেহরানচি* ও *ফারেইদুন আব্বাসিও* প্রাণ হারিয়েছেন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তাদের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এই হামলা তেহরানের বিভিন্ন আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে, যার ফলে *অনেক বেসামরিক নাগরিকও নিহত হয়েছেন।* হামলার পর ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সমস্ত ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
মোহাম্মদ মাহদি তেহরানচি ছিলেন ইসলামি আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট, আর ফারেইদুন আব্বাসি ছিলেন ইরানের পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক প্রধান।
এই হামলা এমন এক সময়ে ঘটলো যখন দু’দিনের মধ্যে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন পারমাণবিক আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল। অনেকেই মনে করছেন, আলোচনার আগেই এই হামলা চালিয়ে ইসরায়েল ইরানকে চাপে ফেলার চেষ্টা করছে।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র *ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবলফাজল শেকারচি* জানিয়েছেন, এই হামলার জবাবে ইসলামিক রিপাবলিক কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে। তিনি বলেন, “শত্রুরা কঠিন মূল্য দেবে এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনী কঠোর জবাবের জন্য প্রস্তুত।” গোয়েন্দা সূত্রগুলো আশঙ্কা করছে, এই হামলায় ইরানের আরও অনেক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিশেষজ্ঞ নিহত হতে পারেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী *’নেশন অব লায়ন্স’* নামের একটি পরিকল্পিত অভিযানের মাধ্যমে এই হামলা চালিয়েছে। টাইমস অব ইসরায়েলসহ দেশটির সামরিক সূত্র জানিয়েছে, দুই ডজনের বেশি যুদ্ধবিমান এই অভিযানে অংশ নিয়েছিল। হামলাটিকে গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক এবং নিখুঁত পরিকল্পিত বলে দাবি করা হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলেছেন, এই অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সামরিক সক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা।
অন্যদিকে, ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ ও প্রেস টিভি জানিয়েছে, হামলায় নারী, শিশু ও অন্যান্য বেসামরিক ব্যক্তিরাও মারা গেছেন। তবে ইসরায়েল দাবি করেছে যে, তারা শুধুমাত্র সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে এবং আবাসিক এলাকায় আঘাত করার কথা অস্বীকার করেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক হুমকি পুরোপুরি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।