মন্টেভিডিওর সেন্টেনারিও স্টেডিয়ামে রাতটা যেন হুলিয়ান আলভারেজ ও থিয়াগো আলমাদার যৌথ মঞ্চে জাদু দেখানোর রাত ছিল। বাঁ প্রান্ত ধরে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দারুণ পাস বাড়ালেন আলভারেজ, যেন আগে থেকেই জানতেন কোথায় থাকবেন আলমাদা। বল পেয়ে থিয়াগো যেন এক পায়ের ছোঁয়ায় জমাট বাঁধা সময় ভেঙে দিলেন দূরের পোস্ট লক্ষ্য করে নেওয়া শট বাতাস ছুঁয়ে জালে ঢুকে পড়ল নিখুঁত সুরের মতো।

সেই ৬৮ মিনিটে করা এই গোলই হয়ে গেল ম্যাচের পার্থক্য। স্বাগতিক উরুগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে দক্ষিণ আমেরিকান বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শীর্ষস্থান আরও মজবুত করল আর্জেন্টিনা। এই গোলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাসও আলমাদার শটে আর্জেন্টিনা পেল তাদের জাতীয় দলের ইতিহাসে ২০০০তম গোল। অবাক করার মতো হলেও সত্যি, ১৯০২ সালে এই মন্টেভিডিওতেই উরুগুয়ের বিপক্ষেই হয়েছিল তাদের প্রথম গোল।

ম্যাচে আর্জেন্টিনা পুরোপুরি ছন্দে ছিল না, তবে প্রয়োজনের সময় ঠিক কাজটা করেছে। চোটের কারণে লিওনেল মেসি, লাওতারো মার্তিনেজ কিংবা দিবালার মতো তারকারা না থাকলেও স্কালোনির দল জয়ে পিছিয়ে ছিল না। বলার মতো আক্রমণ গড়ে তুলতে পারেনি উরুগুয়েও। মার্সেলো বিয়েলসার দল গোটা ম্যাচে মাত্র চারটি শট নিতে পেরেছে, গোল বরাবর ছিল না একটিও।

ফার্নান্দেজ ও সিমিওনের কিছু প্রচেষ্টা বাদ দিলে প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনার খেলাও ছিল এলোমেলো। দ্বিতীয়ার্ধে আলমাদা জায়গা খুঁজে নিতে পারলে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। যদিও শেষ দিকে উত্তেজনা বেড়ে যায় যোগ করা সময়ে বাজে ফাউলের জন্য সরাসরি লাল কার্ড দেখেন বদলি খেলোয়াড় নিকো গঞ্জালেস।

এই জয়ে ১৩ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্জেন্টিনা, আর মাত্র এক পয়েন্ট পেলেই নিশ্চিত হবে ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট। সামনে প্রতিপক্ষ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল সেই ম্যাচে জয়ই একমাত্র ভাবনায় স্কালোনির দল।
মনে করিয়ে দেয় আলমাদার সেই গোল শুধু এক ম্যাচের ব্যবধান নয়, সেটি ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে থাকবে সোনার হরফে।