মালয়েশিয়া প্রবাসীদের জন্য ১০ দফা প্রস্তাবনায় এনসিসি

- আপডেট সময় ১১:৪৮:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
- / 5
প্রবাসীদের জন্য ১০ দফা প্রস্তাবনায় এনসিসি মালয়েশিয়া চ্যাপ্টার
বৈধ রেমিট্যান্সে ইনস্যুরেন্স, মরদেহ প্রেরণে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব, বিমান ভাড়ায় সিন্ডিকেট ভাঙার দাবি
প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণে ১০ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি (এনসিসি) মালয়েশিয়া চ্যাপ্টার। বুধবার (৭ মে) কুয়ালালামপুরে আয়োজিত এক সভায় সংগঠনটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ এনামুল হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের বাস্তব সমস্যাগুলো সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ ও সহযোগিতার চেষ্টা করে যাচ্ছে এনসিসি। আমরা চাই, প্রবাসীদের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ব আরও সুসংহত হোক।”
এনসিসি’র ১০ দফা প্রস্তাবনার মূল লক্ষ্য—প্রবাসীদের মানবিক সুরক্ষা, অর্থনৈতিক স্বীকৃতি ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
প্রথমেই প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিক মৃত্যুবরণ করলে তার মরদেহ দেশে পাঠানোর দায়িত্ব রাষ্ট্রকে গ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়। এটি মানবিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ হাইকমিশনকে বাস্তবায়ন করতে হবে বলে জানায় সংগঠনটি।
দ্বিতীয়ত, বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাসীদের জন্য ইনস্যুরেন্স পলিসি চালুর প্রস্তাব রাখা হয়। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পাঠানোর বিপরীতে প্রবাসীরা একটি নিরাপত্তা বলয়ে আসবেন এবং মেয়াদ শেষে এককালীন সঞ্চয় পাবেন।
তৃতীয় প্রস্তাবে বলা হয়, মালয়েশিয়াসহ গন্তব্য দেশগুলোতে বিমান ভাড়া সাধারণ শ্রমিকদের নাগালের বাইরে। এ সিন্ডিকেট ভেঙে বাজেট এয়ারলাইন্সগুলোর বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরি করতে হবে।
চতুর্থত, বাংলাদেশ হাইকমিশনের অধীনে একটি পৃথক প্রবাসী সহায়তা সেল গঠন ও পাসপোর্ট বিষয়ক ঝামেলা নিরসনের আহ্বান জানানো হয়।
পঞ্চম প্রস্তাবে বলা হয়, শ্রমিকদের প্রতারণা, হেনস্তা কিংবা আটক হওয়ার ঘটনায় বিনামূল্যে আইন সহায়তা দিতে হবে। এজন্য হাইকমিশনে পেশাদার আইনজীবী নিয়োগ প্রয়োজন।
ষষ্ঠত, প্রবাসীদের স্কিল ডেভেলপমেন্টে স্থানীয় ও অনলাইন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালুর তাগিদ দেওয়া হয়, যাতে তারা উচ্চ বেতনের চাকরিতে প্রবেশ করতে পারেন।
সপ্তমত, প্রবাসী সন্তানদের জন্য বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও ইতিহাস শিক্ষা দিতে বাংলাদেশি স্কুল ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানানো হয়।
অষ্টম প্রস্তাবে সরকারি পর্যায়ে একটি অনলাইন হেল্প ডেস্ক ও অ্যাপ চালুর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যেখানে প্রবাসীরা জরুরি সহায়তা ও তথ্য পাবেন।
নবমত, দেশে ফিরে আসা প্রবাসীদের জন্য পুনর্বাসন কর্মসূচি—যেমন ক্ষুদ্রঋণ, প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
দশমত, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা রোধে কঠোর ব্যবস্থা ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়।
এনসিসি মালয়েশিয়া চ্যাপ্টার মনে করে, এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে প্রবাসীদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে এবং তাদের আত্মত্যাগের যথার্থ সম্মান প্রতিষ্ঠা পাবে।
এ প্রেক্ষিতে সংগঠনটি ইউনূস সরকারের প্রতি দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানায়।