ঢাকা ০২:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
হবিগঞ্জে দীর্ঘদিনের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে ঈদে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক লস এঞ্জেলেসে প্রতিবাদে বিক্ষোভ, নিয়ন্ত্রণে ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন” বিশ্ব সমুদ্র দিবস আজ ঈদের দ্বিতীয় দিন চলবে অধিকাংশ আন্তঃনগর ট্রেন, যুক্ত হচ্ছে অতিরিক্ত কোচ লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য বৈঠক সোমবার গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে হামলায় বিএনপি নেতার মৃত্যু ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেওয়া থেকে সরে দাঁড়াল ইউরোপের দুই প্রভাবশালী দেশ ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত ঢাকা থেকে বিদায় নিয়েছে ভুটান দল, রাতে আসছে সিঙ্গাপুরের ৪২ সদস্য বরগুনায় কোরবানির দিনে পশু কাটতে গিয়ে আহত ২০ জন

২৩ মার্চ: আজকের দিনেই প্রথম উত্তোলিত হয়েছিল বাংলার পতাকা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:১৭:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫
  • / 35

ছবি সংগৃহীত

 

 

আজ ২৩ মার্চ, গৌরবের পতাকা দিবস। বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। ১৯৭১ সালের এই দিনে প্রথমবারের মতো স্বাধীন বাংলার পতাকা সবুজ জমিনে লাল বৃত্তের মাঝে সোনালি মানচিত্র তোলা হয় দেশের সর্বত্র। বাঙালির হৃদয়ে জন্ম নেয় স্বাধীনতার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা।

সেদিন পশ্চিম পাকিস্তানে পালিত হয় পাকিস্তান দিবস, কিন্তু পূর্ব বাংলার জনসাধারণ পাল্টে দেন ইতিহাসের গতি। ঢাকাসহ গোটা পূর্ব বাংলায় পালিত হয় ‘প্রতিরোধ দিবস’, ‘স্বাধীন পূর্ববঙ্গ দিবস’ ও ‘লাহোর দিবস’ হিসেবে। ঢাকার প্রেসিডেন্ট হাউস ও সেনানিবাস ছাড়া দেশের কোথাও পাকিস্তানি পতাকা উড়েনি, উড়েছে কেবল স্বাধীন বাংলার পতাকা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয়, হাইকোর্ট, ইপিআর সদর দপ্তর, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, বেতার ভবন, টেলিভিশন কেন্দ্রসহ সব সরকারি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা। স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী সামরিক কায়দায় জাতীয় পতাকাকে সালাম জানায়। প্রভাতফেরি আর ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ স্লোগানে মুখরিত হয় রাজপথ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের প্রভাতফেরি। পল্টন ময়দানে আয়োজিত হয় ‘জয় বাংলা বাহিনী’র কুচকাওয়াজ। সংগঠনের নেতা নূরে আলম সিদ্দিকী, শাজাহান সিরাজ, আ স ম আবদুর রব ও আবদুল কুদ্দুস মাখন গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন। ‘আমার সোনার বাংলা’ গানে চারদিক জেগে ওঠে এক অদম্য আবেগে।

স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করতে গেলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাধা দেয় পাকিস্তানি সেনারা। কিন্তু বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার সামনে শেষমেশ পিছু হটতে হয় তাদের। সাহসী বাঙালি যুবকেরা সকল বাধা উপেক্ষা করে সেখানে পতাকা তোলে।

চীন, ইরান, নেপাল ও ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাসে প্রথমে পাকিস্তানি পতাকা তোলা হলেও পরে তা নামিয়ে দেওয়া হয়, উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা। ব্রিটিশ হাইকমিশন ও সোভিয়েত কনস্যুলেটেও একই দৃশ্য।

২৩ মার্চ শুধু একটি তারিখ নয়, এটি বাঙালির সাহস, প্রতিজ্ঞা আর জাতিসত্তার জ্বলন্ত স্মারক। স্বাধীন বাংলার পতাকা তুলে বীর বাঙালি সে দিন জানিয়ে দিয়েছিল আর নয় বশ্যতা, এবার স্বাধীনতার লড়াই।

নিউজটি শেয়ার করুন

২৩ মার্চ: আজকের দিনেই প্রথম উত্তোলিত হয়েছিল বাংলার পতাকা

আপডেট সময় ০৪:১৭:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

 

 

আজ ২৩ মার্চ, গৌরবের পতাকা দিবস। বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। ১৯৭১ সালের এই দিনে প্রথমবারের মতো স্বাধীন বাংলার পতাকা সবুজ জমিনে লাল বৃত্তের মাঝে সোনালি মানচিত্র তোলা হয় দেশের সর্বত্র। বাঙালির হৃদয়ে জন্ম নেয় স্বাধীনতার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা।

সেদিন পশ্চিম পাকিস্তানে পালিত হয় পাকিস্তান দিবস, কিন্তু পূর্ব বাংলার জনসাধারণ পাল্টে দেন ইতিহাসের গতি। ঢাকাসহ গোটা পূর্ব বাংলায় পালিত হয় ‘প্রতিরোধ দিবস’, ‘স্বাধীন পূর্ববঙ্গ দিবস’ ও ‘লাহোর দিবস’ হিসেবে। ঢাকার প্রেসিডেন্ট হাউস ও সেনানিবাস ছাড়া দেশের কোথাও পাকিস্তানি পতাকা উড়েনি, উড়েছে কেবল স্বাধীন বাংলার পতাকা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয়, হাইকোর্ট, ইপিআর সদর দপ্তর, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, বেতার ভবন, টেলিভিশন কেন্দ্রসহ সব সরকারি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা। স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী সামরিক কায়দায় জাতীয় পতাকাকে সালাম জানায়। প্রভাতফেরি আর ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ স্লোগানে মুখরিত হয় রাজপথ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের প্রভাতফেরি। পল্টন ময়দানে আয়োজিত হয় ‘জয় বাংলা বাহিনী’র কুচকাওয়াজ। সংগঠনের নেতা নূরে আলম সিদ্দিকী, শাজাহান সিরাজ, আ স ম আবদুর রব ও আবদুল কুদ্দুস মাখন গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন। ‘আমার সোনার বাংলা’ গানে চারদিক জেগে ওঠে এক অদম্য আবেগে।

স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করতে গেলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাধা দেয় পাকিস্তানি সেনারা। কিন্তু বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার সামনে শেষমেশ পিছু হটতে হয় তাদের। সাহসী বাঙালি যুবকেরা সকল বাধা উপেক্ষা করে সেখানে পতাকা তোলে।

চীন, ইরান, নেপাল ও ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাসে প্রথমে পাকিস্তানি পতাকা তোলা হলেও পরে তা নামিয়ে দেওয়া হয়, উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা। ব্রিটিশ হাইকমিশন ও সোভিয়েত কনস্যুলেটেও একই দৃশ্য।

২৩ মার্চ শুধু একটি তারিখ নয়, এটি বাঙালির সাহস, প্রতিজ্ঞা আর জাতিসত্তার জ্বলন্ত স্মারক। স্বাধীন বাংলার পতাকা তুলে বীর বাঙালি সে দিন জানিয়ে দিয়েছিল আর নয় বশ্যতা, এবার স্বাধীনতার লড়াই।