সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ইঙ্গিত দিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
তুরস্কের আন্তালিয়া কূটনৈতিক ফোরামে অংশগ্রহণ করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তুরস্কের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের ‘ওয়ান অন ওয়ান’ অনুষ্ঠানে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সরকারের অগ্রাধিকারমূলক পরিকল্পনা ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।
সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বর্তমান সরকার দেশের রাজনৈতিক সংস্কার, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকার দিকেও ইঙ্গিত করেন তিনি।
টিআরটি’র সাংবাদিক জানতে চান, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নতুন সংবিধান ও আগাম নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি কতদূর এগিয়েছে? জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, “নতুন সংবিধানের বিষয়টি এখনও সিদ্ধান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়নি। সরকার সরাসরি কোনো প্রস্তাব দেয়নি। জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতেই ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হবে—তারা সংস্কার চায়, নাকি সম্পূর্ণ নতুন সংবিধান।”
তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্র ধ্বংস করে বিগত সরকার যে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল, তা যেন আর ফিরে না আসে সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। যারা আন্দোলনে জীবন দিয়েছে, তারা একটি জবাবদিহিমূলক, টেকসই ব্যবস্থা চায়। সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে একাধিক সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে, যাদের সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে।”
অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “গত ১৫ বছরের শাসনামল লুটপাটে ভরা ছিল। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে দাঁড়ায় ২০ বিলিয়নে। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আমরা সেই ক্ষতি কাটিয়ে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে কাজ করছি। ব্যাংক ব্যবস্থার সংস্কারে বাংলাদেশ ব্যাংককে জোরালো দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই দৃশ্যমান অগ্রগতি আসবে।”
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রাজনীতি ও অর্থনীতির ওপর আস্থা ফিরিয়ে এনে বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলবে, যেখানে জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে।