ঢাকা ০৭:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রবাসীদের ভোটাধিকার: ভোটাধিকারের দাবিতে সোচ্চার রেমিট্যান্স যোদ্ধারা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:০৬:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
  • / 25

ছবি সংগৃহীত

 

দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ প্রবাসে বসবাস করেন। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি হলেও, এখনও তারা মৌলিক অধিকার ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। স্বাধীনতার অর্ধশতক পেরিয়ে গেলেও প্রবাসীদের এই ন্যায্য অধিকার আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

প্রবাসীদের দাবি, তারা শুধু রেমিট্যান্সই পাঠান না, জাতীয় সংকটে দেশমাতৃকার পক্ষে সক্রিয় থাকেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক গণআন্দোলনেও প্রবাসীদের ভূমিকা ছিল দৃঢ় ও সাহসী। অথচ তারা ভোট দিতে পারেন না, এই বাস্তবতা গভীর হতাশা সৃষ্টি করছে তাদের মধ্যে।

কমিউনিটি নেতা সিফাত উল্লাহ বলেন, “রেমিট্যান্স আমাদের ‘লাইফলাইন’। অথচ মত প্রকাশের অধিকার থাকলেও ভোটাধিকার নেই এটা প্রহসন ছাড়া কিছু নয়।” তার মতে, ভোটাধিকার নিশ্চিত করা গেলে প্রবাসীরা আন্তর্জাতিক পরিসরে দেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের ভূমিকা পালন করতে পারতেন।

অন্যদিকে, আবুধাবির একাধিক প্রবাসী নেতা শঙ্কা প্রকাশ করেন, ভোটাধিকার দিলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি-সংবেদনশীল পরিবেশে সংঘাত বাড়তে পারে। এই কারণে নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।

ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন প্রক্সি ভোট পদ্ধতি চালুর পরিকল্পনা করেছে। একটি অ্যাপসের মাধ্যমে প্রবাসীরা মনোনীত প্রতিনিধিকে ভোটাধিকার প্রদান করবেন। এই পদ্ধতিকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনাও শুরু করেছে।

দুবাই ও আবুধাবি দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৪ হাজার প্রবাসী ইতিমধ্যে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন এবং এনআইডি হাতে পেয়েছেন। তবে এই অগ্রগতি যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলেন, উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশও প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করে তাদের সক্রিয়ভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় যুক্ত করলে রাষ্ট্র আরও শক্তিশালী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।

প্রবাসীদের ভোটের অধিকার আর বিলম্ব নয়, এখনই সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার। রাষ্ট্র যদি এই দেড় কোটির অধিকাংশ নাগরিককে রাজনৈতিকভাবে সম্মান না দেয়, তবে তাদের মন জয় করা এবং রেমিট্যান্সের ধারাকে টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

নিউজটি শেয়ার করুন

প্রবাসীদের ভোটাধিকার: ভোটাধিকারের দাবিতে সোচ্চার রেমিট্যান্স যোদ্ধারা

আপডেট সময় ০৪:০৬:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

 

দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ প্রবাসে বসবাস করেন। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি হলেও, এখনও তারা মৌলিক অধিকার ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। স্বাধীনতার অর্ধশতক পেরিয়ে গেলেও প্রবাসীদের এই ন্যায্য অধিকার আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

প্রবাসীদের দাবি, তারা শুধু রেমিট্যান্সই পাঠান না, জাতীয় সংকটে দেশমাতৃকার পক্ষে সক্রিয় থাকেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক গণআন্দোলনেও প্রবাসীদের ভূমিকা ছিল দৃঢ় ও সাহসী। অথচ তারা ভোট দিতে পারেন না, এই বাস্তবতা গভীর হতাশা সৃষ্টি করছে তাদের মধ্যে।

কমিউনিটি নেতা সিফাত উল্লাহ বলেন, “রেমিট্যান্স আমাদের ‘লাইফলাইন’। অথচ মত প্রকাশের অধিকার থাকলেও ভোটাধিকার নেই এটা প্রহসন ছাড়া কিছু নয়।” তার মতে, ভোটাধিকার নিশ্চিত করা গেলে প্রবাসীরা আন্তর্জাতিক পরিসরে দেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের ভূমিকা পালন করতে পারতেন।

অন্যদিকে, আবুধাবির একাধিক প্রবাসী নেতা শঙ্কা প্রকাশ করেন, ভোটাধিকার দিলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি-সংবেদনশীল পরিবেশে সংঘাত বাড়তে পারে। এই কারণে নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।

ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন প্রক্সি ভোট পদ্ধতি চালুর পরিকল্পনা করেছে। একটি অ্যাপসের মাধ্যমে প্রবাসীরা মনোনীত প্রতিনিধিকে ভোটাধিকার প্রদান করবেন। এই পদ্ধতিকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনাও শুরু করেছে।

দুবাই ও আবুধাবি দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৪ হাজার প্রবাসী ইতিমধ্যে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন এবং এনআইডি হাতে পেয়েছেন। তবে এই অগ্রগতি যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলেন, উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশও প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করে তাদের সক্রিয়ভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় যুক্ত করলে রাষ্ট্র আরও শক্তিশালী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।

প্রবাসীদের ভোটের অধিকার আর বিলম্ব নয়, এখনই সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার। রাষ্ট্র যদি এই দেড় কোটির অধিকাংশ নাগরিককে রাজনৈতিকভাবে সম্মান না দেয়, তবে তাদের মন জয় করা এবং রেমিট্যান্সের ধারাকে টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।