ঢাকায় জাতিসংঘের নতুন ভবনের উদ্বোধন করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের
বাংলাদেশ সফরের তৃতীয় দিনে শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রাজধানীর গুলশানে জাতিসংঘের আবাসিক কার্যালয় পরিদর্শন করেন। সকাল ৯টার কিছু পর সেখানে পৌঁছে তিনি জাতিসংঘের পতাকা উত্তোলন করে নতুন ভবনের কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এরপর অফিস প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন এবং সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোকচিত্রী প্রদর্শনীও পরিদর্শন করেন মহাসচিব। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান। তাঁরা বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও বিভিন্ন বিষয়ে গুতেরেসকে অবহিত করেন।
পরে এক বক্তব্যে জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং অন্যান্য সংস্কার কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। পাশাপাশি, যেকোনো সংকটময় পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
এরপর দুপুর ১২টার কিছু পর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পৌঁছান গুতেরেস। সেখানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তারের এবং এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠকের পর নেতারা সেখান থেকে বেরিয়ে যান।
এছাড়া, গুতেরেস রাজনৈতিক সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও যুব সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠকে মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে। এসব বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ, মানবাধিকার এবং ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কাঠামো নিয়ে আলোচনা করা।
সন্ধ্যায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এই সম্মেলনে তারা বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়ন, অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ নিয়ে মতবিনিময় করবেন বলে জানা গেছে।
গুতেরেসের এই সফর বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে এবং ভবিষ্যতে জাতিসংঘের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।