ঢাকা ০৭:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
শেষ সেশনে হোঁচট খেল টাইগাররা, লিড নিয়েও কাটেনি অনিশ্চয়তা কৃষি ও প্রাণিসম্পদ পালনের কাজকে মর্যাদাপূর্ণ পেশা হিসেবে নিতে হবে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে না: ডিএনসিসি প্রশাসক মিরসরাইয়ে মোটরসাইকেল বিক্রির নামে ফাঁদ পেতে ছিনতাই, ৭ যুবক গ্রেপ্তার উত্তরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে হামলা, আহত শিক্ষার্থী ৫-৬ জন শুল্ক নীতিতে এশিয়ার দেশগুলোর চীনের প্রতি ঝোঁক বাড়ার শঙ্কা স্পেন-পর্তুগালে বিরল আবহাওয়ার ধাক্কায় ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয় যুক্তরাষ্ট্রের নৌ-সুরক্ষায় বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন জুলাই সনদ তৈরির পরই ভোট: প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে চালুর দাবি ফ্রিল্যান্সারদের

আজ সেই ভয়াল ২৯ এপ্রিল: উপকূলবাসীর জন্য ঘূর্ণিঝড়ের সেই বিভীষিকাময় রাত

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:৩৭:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৬ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

 

আজ ২৯ এপ্রিল উপকূলবাসীর জন্য এক ভয়াল ও বেদনাবিধুর দিন। ১৯৯১ সালের এই দিনটি চিরকাল গভীর শোক ও স্মৃতির আবরণে ঢাকা। ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস এদিন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় জনপদে ভয়াল ধ্বংসের ছাপ রেখে যায়।

সেদিন রাতের অন্ধকারে তাণ্ডব চালায় ঘূর্ণিঝড়টি। ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার গতিবেগে বয়ে যাওয়া ঝড়ের সঙ্গে ছিল প্রায় ৬ থেকে ২৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস, যা নিমিষেই গ্রাস করে নেয় বিস্তীর্ণ জনপদ। সরকারি হিসাবে, প্রাণ হারান প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৮২ জন মানুষ। নিঃস্ব হয়ে যান হাজারো পরিবার। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় চট্টগ্রামের বাঁশখালী, যেখানে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যায় চাষের জমি, গবাদিপশু, ঘরবাড়ি ও জীবনের সব সঞ্চয়। ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ ছিল প্রায় দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভোলা, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, আনোয়ারা, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও চকরিয়া ছিল সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর অন্যতম।

চট্টগ্রাম শহরের হালিশহর, আগ্রাবাদ, কাটঘর, বন্দর ও পতেঙ্গা এলাকা পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়। বন্দরের জাহাজগুলো ছিটকে পড়ে, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ভেসে যায় উড়োজাহাজ, অনেক সামরিক সদস্য পরিবারসহ নিখোঁজ হন, কেউ হারান স্ত্রী, সন্তান বা ভাই-বোনকে।

সেদিন রাত ১০টার পর হঠাৎই সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ আছড়ে পড়ে লোকালয়ে। মুহূর্তেই মানুষের জীবনে নামে অন্ধকার। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারেননি, কেউবা কোনো সতর্ক বার্তাও পাননি। আবহাওয়া বিভাগ ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করলেও সচেতনতার অভাবে অনেকে ছিলেন ঘরে।

আজ, ৩৪ বছর পরেও উপকূলীয় মানুষ সেই রাতের ভয়াল স্মৃতি ভুলতে পারেননি। এখনো ঘূর্ণিঝড়ের খবর পেলেই আতঙ্কে কেঁপে ওঠে তাদের হৃদয়।

এই দিনটিকে স্মরণ করে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ প্রিয়জন হারানোর শোক পালনে আয়োজন করেন দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ প্রার্থনার। ভয়াবহ সেই রাত যেন আর কখনো ফিরে না আসে এটাই আজ সবার প্রার্থনা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আজ সেই ভয়াল ২৯ এপ্রিল: উপকূলবাসীর জন্য ঘূর্ণিঝড়ের সেই বিভীষিকাময় রাত

আপডেট সময় ১২:৩৭:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

 

আজ ২৯ এপ্রিল উপকূলবাসীর জন্য এক ভয়াল ও বেদনাবিধুর দিন। ১৯৯১ সালের এই দিনটি চিরকাল গভীর শোক ও স্মৃতির আবরণে ঢাকা। ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস এদিন চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় জনপদে ভয়াল ধ্বংসের ছাপ রেখে যায়।

সেদিন রাতের অন্ধকারে তাণ্ডব চালায় ঘূর্ণিঝড়টি। ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার গতিবেগে বয়ে যাওয়া ঝড়ের সঙ্গে ছিল প্রায় ৬ থেকে ২৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস, যা নিমিষেই গ্রাস করে নেয় বিস্তীর্ণ জনপদ। সরকারি হিসাবে, প্রাণ হারান প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৮২ জন মানুষ। নিঃস্ব হয়ে যান হাজারো পরিবার। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় চট্টগ্রামের বাঁশখালী, যেখানে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যায় চাষের জমি, গবাদিপশু, ঘরবাড়ি ও জীবনের সব সঞ্চয়। ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ ছিল প্রায় দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভোলা, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, আনোয়ারা, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও চকরিয়া ছিল সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর অন্যতম।

চট্টগ্রাম শহরের হালিশহর, আগ্রাবাদ, কাটঘর, বন্দর ও পতেঙ্গা এলাকা পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়। বন্দরের জাহাজগুলো ছিটকে পড়ে, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ভেসে যায় উড়োজাহাজ, অনেক সামরিক সদস্য পরিবারসহ নিখোঁজ হন, কেউ হারান স্ত্রী, সন্তান বা ভাই-বোনকে।

সেদিন রাত ১০টার পর হঠাৎই সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ আছড়ে পড়ে লোকালয়ে। মুহূর্তেই মানুষের জীবনে নামে অন্ধকার। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারেননি, কেউবা কোনো সতর্ক বার্তাও পাননি। আবহাওয়া বিভাগ ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করলেও সচেতনতার অভাবে অনেকে ছিলেন ঘরে।

আজ, ৩৪ বছর পরেও উপকূলীয় মানুষ সেই রাতের ভয়াল স্মৃতি ভুলতে পারেননি। এখনো ঘূর্ণিঝড়ের খবর পেলেই আতঙ্কে কেঁপে ওঠে তাদের হৃদয়।

এই দিনটিকে স্মরণ করে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ প্রিয়জন হারানোর শোক পালনে আয়োজন করেন দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ প্রার্থনার। ভয়াবহ সেই রাত যেন আর কখনো ফিরে না আসে এটাই আজ সবার প্রার্থনা।