রবীন্দ্রসরোবরে সুর, রঙ ও আনন্দে ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে বরণ

- আপডেট সময় ১০:০৪:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
- / ৫১১ বার পড়া হয়েছে
রাত পেরিয়ে ভোরের প্রথম আলোয় ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরে শুরু হলো বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-কে বরণ করার উৎসব। চ্যানেল আই-সুরের ধারার আয়োজনে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অপূর্ব মেলবন্ধনে গড়ে উঠল এক অনন্য ভোর।
বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের তিন জন শিল্পীর সরোদের মুগ্ধকর সুরে নতুন বছরের সূচনা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে পরিবেশিত হয় দেশাত্মবোধক গান, রবীন্দ্রসংগীত, পঞ্চকবির গান ও হৃদয়ছোঁয়া লোকসংগীত। সুরের ধারার খুদে শিল্পীদের কণ্ঠে ভেসে আসে ‘আলো আমার আলো ওগো’, যে গানে ছিল আলোর মতো এগিয়ে চলার প্রেরণা।
পরবর্তী পরিবেশনায় ‘প্রভাত বীণা তব বাজে’ দিয়ে শ্রোতাদের এক অন্য ভোরে পৌঁছে দেয় শিল্পীরা। পার্বত্য অঞ্চলের ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীদের পরিবেশনায় উঠে আসে বৈচিত্র্য ও সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির প্রতিচ্ছবি।
শিল্পী ফাহিম হোসেন চৌধুরীর কণ্ঠে ‘আকাশ ভরা সূর্য তারা’ আর প্রিয়াংকা গোপ পরিবেশন করেন ‘আমি অকৃতি অধম’ এই দুই গানেই ফুটে ওঠে ভাবনার গভীরতা ও সুরের আবেগ। স্বাতী সরকার শোনান ‘ওগো দুঃখ জাগানিয়া’ সহ আরও কয়েকটি হৃদয়স্পর্শী গান। কিরণ চন্দ্র রায়ের কণ্ঠে ‘পাল্টে গেল পঞ্জিকার পাতা’ নববর্ষের বার্তা পৌঁছে দেয় সবার মাঝে। আর শাহ আবদুল করিমের জনপ্রিয় ‘বসন্ত বাতাসে সই গো’ পরিবেশন করেন শারমিন আক্তার, যা শ্রোতাদের আরও বেশি আত্মিক করে তোলে।
উৎসবের আরেকটি বিশেষ আয়োজন ছিল খোলা চত্বরে ছবি আঁকা। সকাল ছয়টায় সাদা ক্যানভাসে শুরু হওয়া শিল্পকর্মে জড়িয়ে পড়েন অশোক কর্মকার, জাহিদ মুস্তফা, এলিস গোমেজসহ আরও অনেকে। দেড় ঘণ্টার মধ্যে রঙে ফুটে ওঠে এক অনন্য চিত্র বাঘের মুখোশ পরে বাবার কাঁধে চড়ে উৎসবে শামিল এক শিশুর হাস্যোজ্জ্বল মুহূর্ত। এই ছবি যেন হয়ে ওঠে নতুন বছরের প্রতীক নতুন আশার, নতুন সম্ভাবনার, আর চিরন্তন ঐতিহ্যের।
এই আয়োজন ছিল শুধু বর্ষবরণ নয়, বরং নতুন প্রজন্মকে সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত করার এক নিরব প্রচেষ্টা, যেখানে সুর, রঙ আর ভালোবাসায় জেগে উঠেছিল পুরো শহর।