বর্ষবরণে গাজার শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা, ছায়ানটে এক মিনিট নীরবতা
নতুন সূর্যোদয়ের সঙ্গে রমনার বটমূলে বেজে উঠেছিল বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর আগমনী সুর। ছায়ানটের আয়োজনে হাজারো মানুষের কণ্ঠে মিলেছিল গান, ভালোবাসা আর ঐতিহ্যের ছন্দ। তবে এবারের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান ছিল কিছুটা ভিন্ন। আনন্দ-উৎসবের মাঝেও ফিলিস্তিনের গাজায় নিহত নিরীহ মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আয়োজনটি থেমে গিয়েছিল এক মুহূর্তের জন্য।
সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষ হবার আগমুহূর্তে শিল্পী ও উপস্থিত দর্শনার্থীরা দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এই সময় রমনার ছায়া ঘেরা প্রাঙ্গণে নেমে আসে গভীর শোক আর মানবতার অনুপম এক বার্তা।
নীরবতা পালনের আগে ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী বলেন, “গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ গণহত্যা, বিশেষ করে শিশুদের হত্যাকাণ্ড আমাদের ব্যথিত করেছে। আমরা এই মানবিক বিপর্যয়ের তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং ফিলিস্তিনবাসীর ন্যায্য অধিকারের সংগ্রামে সংহতি প্রকাশ করছি।”
এ বছরের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মূল বার্তা ছিল ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। গানের মধ্য দিয়ে আলো, প্রকৃতি, মানবতা ও দেশপ্রেমের জয়গান করা হয়। এই আয়োজনে ছায়ানটের শিল্পীরা তুলে ধরেন রবীন্দ্রনাথ, নজরুল এবং পল্লীগীতির মেলবন্ধনে সাজানো গানের পরিবেশনা।
ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়, পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলেও এটি প্রচারিত হয়।
১৯৬৭ সাল থেকে রমনার বটমূলে ছায়ানট প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষের আয়োজন করে আসছে। এবারের অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করতে তিন মাস ধরে ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে চলে গানের মহড়া। আর ৮ এপ্রিল থেকে রমনার বটমূলে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়।
গানের মাধ্যমে জাতির আত্মপরিচয় ও মানবতার বাণী ছড়িয়ে দেয়ার এই প্রয়াসে বর্ষবরণ হয়ে উঠল শুধু উৎসব নয়, প্রতিবাদের এক অনন্য মাধ্যম।