জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্র নিয়ে উত্তেজনা: রাশিয়া বলছে হস্তান্তর অসম্ভব, ইউক্রেন দাবি ফিরিয়ে নেওয়ার
জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে, এই কেন্দ্রটি রাশিয়ার সম্পত্তি এবং এটি ইউক্রেন বা অন্য কোনো দেশের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
রুশ মন্ত্রণালয় জানায়, প্ল্যান্টটি যৌথভাবে পরিচালনার প্রস্তাবও গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এতে এর পারমাণবিক ও ভৌত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হবে। তারা আরও জানায়, জাপোরিঝিয়া অঞ্চল আংশিকভাবে রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং এটি সেই চারটি ইউক্রেনীয় অঞ্চলের একটি, যেগুলো রাশিয়া ২০২২ সালে বিতর্কিত গণভোটের মাধ্যমে নিজের অন্তর্ভুক্ত করেছে।
রাশিয়া দাবি করেছে, প্রেসিডেন্ট পুতিনের একটি ডিক্রির মাধ্যমে জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্র আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার পারমাণবিক খাতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। যদিও পশ্চিমা দেশগুলো সেই গণভোটকে ভুয়া ও অবৈধ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। রুশ পক্ষ এই অধিগ্রহণকে একটি কূটনৈতিক ও কৌশলগত সফলতা হিসেবেই তুলে ধরছে।
উল্লেখযোগ্য যে, ইউরোপের বৃহত্তম এই পারমাণবিক প্ল্যান্টটি ছয়টি চুল্লিসহ বর্তমানে বন্ধ অবস্থায় থাকলেও, জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষকরা সেখানে এখনও উপস্থিত রয়েছেন যেমনটি ইউক্রেনের অন্য কেন্দ্রগুলোতেও দেখা যায়।
অন্যদিকে, ইউক্রেন স্পষ্টভাবে জানিয়েছে এই প্ল্যান্ট তাদের জাতীয় সম্পদ এবং তারা এটি ফিরে পেতে চায়। কিয়েভ বলেছে, রাশিয়ার এই দখল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে এবং এটি অবৈধ।
এদিকে, চলমান পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনালাপে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর পরিচালনায় সহায়তা করতে পারে অথবা এতে বিনিয়োগের কথা ভাবতে পারে। জেলেনস্কি পাল্টা জবাবে বলেন, এসব কেন্দ্র ইউক্রেনীয় জনগণের সম্পদ এবং এতে সম্ভাব্য মার্কিন বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এই পরিস্থিতি জাপোরিঝিয়া কেন্দ্রকে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক উত্তেজনার কেন্দ্রে পরিণত করেছে, যেখানে নিরাপত্তা ও স্বার্থ একসঙ্গে মুখোমুখি।