মধ্যপ্রাচ্য
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আল-জাজিরাসহ দুই সাংবাদিক নিহত: জিএমওর তীব্র নিন্দা
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর পৃথক হামলায় আরও দুই ফিলিস্তিনি সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের একজন ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার হয়ে কর্মরত, অপরজন ‘প্যালেস্টাইন টুডে’র সংবাদকর্মী।
গতকাল সোমবার উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ার পূর্বাঞ্চলে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় নিহত হন ২৩ বছর বয়সী হোসাম শাবাত। তিনি আল-জাজিরা মুবাশ্বেরে কাজ করতেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হোসামের গাড়ি লক্ষ্য করে সরাসরি হামলা চালানো হয়, যা ছিল সম্পূর্ণ পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই।
আল-জাজিরার গাজা প্রতিনিধি তারেক আবু আজ্জুম বলেন, কিছুদিন আগে আরেকটি হামলায় আহত হয়েছিলেন হোসাম, তবুও সাংবাদিকতা থামাননি তিনি। শেষ পর্যন্ত পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রাণ হারাতে হলো তাঁকে।
একই দিনে গাজার দক্ষিণাঞ্চল খান ইউনিসে নিজ বাড়িতে নিহত হন মোহাম্মদ মানসুর। তিনি ‘প্যালেস্টাইন টুডে’র সাংবাদিক ছিলেন। ওই সময় বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানও ছিলেন। এই হামলাও ছিল পূর্ব সতর্কতা ও কারণ ব্যতিরেকে চালানো, জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকেরা।
গাজা মিডিয়া অফিস (জিএমও) জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ২০৮ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এক বিবৃতিতে জিএমও বলেছে, সাংবাদিকদের হত্যা ও গুম করার মতো জঘন্য অপরাধ ইসরায়েল পদ্ধতিগতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।
তারা দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর পাশাপাশি এর মদদদাতা দেশ—যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানিকেও এ নৃশংসতার জন্য দায়ী করেছে। জিএমও আন্তর্জাতিক সাংবাদিকতা সংগঠন ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা গাজার সাংবাদিকদের ওপর চালানো এই পেশাগত গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়।
সংবাদপত্র, গণমাধ্যম ও সত্য অনুসন্ধানের স্বাধীনতার ওপর এমন হামলা কেবল গাজা নয়, গোটা বিশ্ব সাংবাদিকতার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।