শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জনঅসন্তোষ জানত ভারত, তবে হস্তক্ষেপে অক্ষম ছিল: জয়শঙ্কর

- আপডেট সময় ০১:৪০:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫
- / 41
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে অসন্তোষ ও বিক্ষোভ দানা বাঁধছিল, তা সম্পর্কে ভারত আগে থেকেই অবগত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এই ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করার মতো ভারতের কোনো ক্ষমতা ছিল না।
শনিবার (২২ মার্চ) ভারতের পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় পরামর্শক কমিটির বৈঠকে জয়শঙ্কর এই মন্তব্য করেন। ভারতীয় প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য হিন্দু এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওই বৈঠকে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়।
জয়শঙ্কর বলেন, “স্বৈরাচারী হাসিনার উপর আমাদের প্রভাব ছিল সীমিত। আমরা কেবল পরামর্শ দিতে পারি, তার সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে পারি না।” তিনি আরও জানান, জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের সাম্প্রতিক মন্তব্যও পরিস্থিতির জটিলতা তুলে ধরেছে।
বৈঠকে বাংলাদেশ ছাড়াও মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও পাকিস্তান এই দেশগুলোর রাজনৈতিক অবস্থা, গৃহযুদ্ধ, আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল।
জয়শঙ্কর জানান, মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক জোট সার্কের ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা হয়। তিনি বলেন, “সার্ক বাতিল হয়নি, এটি কেবল বিরতিতে আছে। পুনরুজ্জীবনের সম্ভাবনা রয়েছে।”
চীনের প্রভাব নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “চীন আমাদের শত্রু নয়, প্রতিযোগী। তবে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের উপস্থিতি ভারতের জন্য কৌশলগত চ্যালেঞ্জ।”
তিনি আরও ইঙ্গিত দেন, বাংলাদেশে কিছু ‘বহিরাগত শক্তি’ সক্রিয় রয়েছে এবং ভারত তা নজরদারির মধ্যে রেখেছে। ভারতের এমপিরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন আগামী এক দশকে প্রতিবেশী দেশগুলোতে ভারতের প্রভাব বজায় রাখতে কী কৌশল নেওয়া হবে, সেটি স্পষ্ট করা জরুরি।
এই বৈঠকে ভারত যে বাংলাদেশ পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং কৌশলগতভাবে চিন্তাভাবনা করছে তা আরও একবার পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।