ইসরায়েলে রাজনৈতিক টানাপোড়েনে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা, উত্তেজনা চরমে: নেতানিয়াহু
ইসরায়েলে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সম্মানিত আইনবিদ আহারুন বারাক আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, দেশটি গৃহযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারককে বরখাস্তের সরকারি উদ্যোগের বিরোধিতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
বারাক বলেন, “ইসরায়েলি সমাজ আজ ভয়াবহ বিভাজনের শিকার। জাতি যেন একটি ট্রেন, যা রেললাইন থেকে ছিটকে খাদে পড়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে গৃহযুদ্ধ অনিবার্য।” তিনি আরও বলেন, সরকার এমনভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করছে, যা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অবশ্য তার এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে এক টুইটে বলেন, “ইসরায়েলে কোনো গৃহযুদ্ধ হবে না। আইন অনুসারে সরকারই সিদ্ধান্ত নেয় কে শিন বেতের প্রধান হবেন।”
বারাকের বক্তব্যের পেছনে রয়েছে একটি বিস্ফোরক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। সম্প্রতি মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয় রোনেন বারকে বরখাস্ত করার। যদিও ইসরায়েলের হাইকোর্ট ওই সিদ্ধান্ত ৮ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করেছে, তবে সরকার এখনো বরখাস্ত কার্যকর করতে মরিয়া। এতে দেশজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনা ও বিক্ষোভ।
ইসরায়েলের বড় ব্যবসায়ী সংগঠন ‘ইসরায়েল বিজনেস ফোরাম’ হুঁশিয়ারি দিয়েছে, হাইকোর্টের আদেশ উপেক্ষা করা হলে তারা অর্থনীতি অচল করে দেবে। শ্রমিক ইউনিয়ন হিসতাদ্রুতও প্রতিবাদে নেমেছে। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গোয়েন্দা সংস্থায় অনুগত ব্যক্তি বসিয়ে দুর্নীতি তদন্ত বন্ধ করতে চান।
সম্প্রতি বিক্ষোভে গাড়িচাপা দিয়ে এক আন্দোলনকারী আহত হওয়ার ঘটনার পর বারাক বলেন, “আজ চাপা দিয়েছে, কাল গুলি হবে, পরশু রক্ত ঝরবে।”
গাজায় হামলা ও অভ্যন্তরীণ কোন্দল একসঙ্গে ইসরায়েলকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে নেতানিয়াহুর পদক্ষেপ ইসরায়েলকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।