থেসালোনিকিতে গণকবরের সন্ধান: গৃহযুদ্ধের ভয়াবহ অতীত উন্মোচিত

- আপডেট সময় ০৫:৩৫:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
- / 37
গ্রিসের গৃহযুদ্ধের অন্ধকার অধ্যায় নতুন করে উন্মোচিত হয়েছে থেসালোনিকিতে। কুখ্যাত এপ্তাপিরগিও কারাগারের কাছে নির্মাণকাজ চলার সময় আবিষ্কৃত হয়েছে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বহু রাজনৈতিক বন্দির কঙ্কাল।
বুধবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও স্বজনরা জানান, এখন পর্যন্ত ৩৩টি কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে, যেগুলো ১৯৪৬-১৯৪৯ সালের গৃহযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া ব্যক্তিদের বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলছেন, মৃতদের বেশিরভাগই গ্রিসের কমিউনিস্ট পার্টির (কেকেএ) সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ফাঁসির শিকার হয়েছিলেন।
গৃহযুদ্ধের সেই ভয়াবহ সময়ের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এপ্তাপিরগিও কারাগার একসময় বাইজেন্টাইন দুর্গ ছিল। পরে ওসমানী শাসনে এটি পরিচিত হয় ইয়েদি কুলে নামে। ঐতিহাসিকদের মতে, এই কারাগারে বন্দি প্রায় ৪০০ রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে গোপনে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর তাদের মরদেহ অজ্ঞাত স্থানে ফেলে দেওয়া হতো।
সিকিয়েস পৌরসভার মেয়র সিমোস দানিয়েলিদিস বলেন, “আমরা আনন্দিত, কারণ ৮০ বছর পর হলেও এই শহীদের কঙ্কাল উদ্ধার হচ্ছে। আবার আমরা ক্ষুব্ধও, কারণ এ হত্যাকাণ্ডগুলো ছিল পাশবিক, যা আধুনিক গ্রিসের জন্য লজ্জাজনক এক অধ্যায়।”
প্রথম দেহাবশেষ গত ডিসেম্বরে নগর উদ্যান নির্মাণকালে পাওয়া যায়। এরপর খননকাজ চালিয়ে দুটি গণকবর থেকে পোশাক, গয়না ও গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। প্রত্নতত্ত্ববিদ স্তাভরৌলা চেভরিনি জানান, মাটি ও আবহাওয়ার কারণে কঙ্কালগুলো খুব নাজুক অবস্থায় রয়েছে, তবে ডিএনএ পরীক্ষা করে পরিচয় শনাক্তের কাজ শুরু হয়েছে।
নিহতদের স্মরণে বুধবার ঘটনাস্থলে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় কমিউনিস্ট পার্টির একটি প্রতিনিধি দল। একইসঙ্গে কেকেএ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দিদের তালিকা তৈরি করছে, যা প্রকাশ করা হবে। পৌরসভা নিহতদের পরিবারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে, যাতে স্বজনদের পরিচয় নিশ্চিত করা যায়।
মিলতিয়াদিস পারাথিরাস জানান, তার চাচা রিগাস ছিলেন কমিউনিস্ট গণতান্ত্রিক বাহিনীর ক্যাপ্টেন। ১৯৪৯ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে প্রায় দুই বছর কারাগারে রাখা হয়। ১৯৫১ সালের মার্চে পাঁচজনের সঙ্গে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, “আমরা জানি না তাকে কোথায় কবর দেওয়া হয়েছে, আদৌ কবর দেওয়া হয়েছিল নাকি মরদেহ ফেলে দেওয়া হয়েছিল। আমরা শুধু সত্য জানতে চাই।