কুয়েতে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগ ও নতুন সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ, জানালেন রাষ্ট্রদূত
কুয়েতে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগে বাংলাদেশ দূতাবাস নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন। বিশেষ করে তেল, বিদ্যুৎ ও পানিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে বাংলাদেশি কর্মীদের আরও বড় পরিসরে কাজের সুযোগ করে দিতে দূতাবাস সক্রিয় ভূমিকা রাখছে।
কুয়েতের শ্রমবাজারে দক্ষ কর্মীর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশটির বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও অবকাঠামো খাতে ক্রমাগত নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে, যা স্থানীয় নাগরিকদের পাশাপাশি বিদেশি কর্মীদের জন্যও নতুন সুযোগ সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা, নির্মাণ এবং সেবামূলক খাতে অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত কর্মীদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
বাংলাদেশি প্রকৌশলীরা ইতোমধ্যে কুয়েতের মূল অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি তেল, বিদ্যুৎ ও পানি সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। একসময় কুয়েতে অনেক বাংলাদেশি প্রকৌশলী কর্মরত থাকলেও বর্তমানে ভিসা জটিলতার কারণে তাঁদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে।
কুয়েতে নতুন দক্ষ কর্মী নিয়োগে অন্যতম প্রধান বাধা হলো ভিসা জটিলতা। কুয়েত ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কোম্পানির প্রকৌশলী আবদুস সালাম জানান, ভিসা ব্যবস্থা সহজতর হলে অনেক বাংলাদেশি প্রকৌশলী কুয়েতে কাজের সুযোগ পেতেন। বিশেষ করে ‘লামানা’ প্রথা, যা কুয়েতে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ অনুমতির প্রয়োজনীয়তা তৈরি করে, তা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাষ্ট্রদূত সৈয়দ তারেক হোসেন জানান, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই লামানা প্রথা বাতিল করার জন্য কুয়েত সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেছেন। একইসঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টাও কুয়েতের উচ্চপর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে এই বাধা দূর করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
কুয়েত সরকারের সাম্প্রতিক নীতিগত পরিবর্তনের ফলে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন দক্ষ জনশক্তি প্রস্তুতের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে, যাতে কুয়েতসহ অন্যান্য দেশের শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতামূলকভাবে টিকে থাকা যায়।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, “বাংলাদেশি কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি, কুয়েতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে তাঁদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করাই আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। ভবিষ্যতে আরও বেশি বাংলাদেশি কর্মী যাতে কুয়েতে কাজের সুযোগ পান, সেজন্য দূতাবাস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।”