সিরিয়ার নতুন চুক্তি: শান্তির পথে একধাপ এগিয়ে
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার ও মার্কিন-সমর্থিত কুর্দি বিদ্রোহী গোষ্ঠী সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) এর মধ্যে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি সই হয়েছে। সোমবার (১০ মার্চ), দামেস্কে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা এবং এসডিএফ নেতা মাজলুম আবদি এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
এই চুক্তি অনুযায়ী, সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কুর্দি প্রশাসনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সিরিয়ার জাতীয় সরকারের সঙ্গে একীভূত করা হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে একটি নতুন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ চুক্তিটি বাস্তবায়নের পথে এগোবে।
১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের পর, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন ঘটে, যার পর থেকে দেশটি অস্থিতিশীলতার মধ্যে পড়েছে। ইসরাইলের নিয়মিত বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাশাপাশি, সিরিয়ার আলাউই সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতা ও নৃশংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পরিস্থিতিতে নতুন সরকারের পক্ষ থেকে এসডিএফ-এর সঙ্গে চুক্তি সই করা হয়, যা একটি নতুন যুগের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
চুক্তির বিস্তারিত অনুযায়ী, সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সব ধরনের বেসামরিক ও সামরিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে একীভূত করা হবে। এতে সীমান্ত পোস্ট, বিমানবন্দর এবং তেল ও গ্যাসক্ষেত্র অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রেসিডেন্ট আল-শারা ও এসডিএফ নেতা মাজলুম আবদির করমর্দনের ছবি প্রকাশিত হয়।
এসডিএফ নেতা আবদি এই চুক্তি সম্পর্কে বলেন, “এটি সিরিয়ার নতুন গঠনের একটি সুযোগ।” তার মতে, এই চুক্তি দেশের সব মানুষের অধিকার নিশ্চিত করবে এবং তাদের শান্তি ও মর্যাদার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সিরিয়ার এই চুক্তি দেশটির জন্য একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হতে পারে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যেতে পারে, তবে চুক্তির সফল বাস্তবায়ন এবং উভয় পক্ষের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ। দামেস্কভিত্তিক বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ নাদের আল-ওমারি এই চুক্তিকে সিরিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন।
এদিকে, শিরোনামিত এই চুক্তির পর, সিরিয়ার রাজনৈতিক দৃশ্যপটে এক নতুন ধারার সূচনা হতে পারে, যা পুরো দেশকে জাতীয় সরকারের অধীনে একত্রিত করার লক্ষ্যে আরও একধাপ এগিয়ে গেল।