যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএআইডি বাতিলের সিদ্ধান্ত: বৈশ্বিক সহায়তায় বড় ধাক্কা
- আপডেট সময় ১০:৫১:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫
- / 48
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি)-এর ৮৩ শতাংশ কর্মসূচি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। সোমবার এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এসেই ইউএসএআইডির ওপর কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। সংস্থাটি বিলুপ্ত করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিভিন্ন কর্মসূচি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক।
মার্কো রুবিও বলেন, ‘৬ সপ্তাহের পর্যালোচনা শেষে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ইউএসএআইডির ৮৩ শতাংশ কর্মসূচি বাতিল করছি। এই সিদ্ধান্তের ফলে ৫ হাজার ২০০টি চুক্তি বাতিল হলো, যেখানে কয়েক দশক ধরে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছিল। অনেক ক্ষেত্রে এই কর্মসূচিগুলো আমেরিকার জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী ছিল কিংবা ক্ষতি করেছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ইউএসএআইডি। ১৯৬১ সালে প্রেসিডেন্ট জন এফ. কেনেডি এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সংস্থাটিতে প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন এবং এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সহায়তা প্রদান করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তার মোট পরিমাণ ৬৮ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ইউএসএআইডির জন্য বরাদ্দ ছিল প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার।
এই পদক্ষেপের ফলে বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রকল্প ও দারিদ্র্য বিমোচন কার্যক্রম বড় ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউএসএআইডির অর্থায়ন বন্ধ হলে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও দারিদ্র্য নিরসনের মতো কার্যক্রম ব্যাহত হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। একদিকে অভ্যন্তরীণ ব্যয়ের অজুহাত দেখিয়ে মার্কিন সরকার এটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলেও, অন্যদিকে অনেক দেশ ও সংস্থাই এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে। মানবাধিকার কর্মী ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতিকে গরিব দেশের প্রতি অবিচার হিসেবে দেখছে।
বিশ্বজুড়ে ইউএসএআইডির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হবে এবং এর ফলে বৈশ্বিক সহায়তা ব্যবস্থায় কী পরিবর্তন আসবে, সেটাই এখন আলোচনার বিষয়।























