ঢাকা ০৩:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কেমিক্যাল বিস্ফোরণে দগ্ধ ৩ শ্রমিক, ভর্তি বার্ন ইনস্টিটিউটে ভারতের কোচ হওয়ার ইচ্ছা জানালেন জাভি হার্নান্দেজ ভক্তদের জন্য উপহার, আসছে মাইকেল জ্যাকসনের বায়োপিক “মিরপুরের উইকেট নিয়ে লিটনের ভিন্ন সুর” আগামী আগস্ট থেকে সিরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ করবে আজারবাইজান, তুরস্ক হবে ট্রানজিট পথ তুরস্কের ইউরোফাইটার চুক্তিতে অস্বস্তিতে ইসরায়েল: “গেমচেঞ্জার না হলেও মাথাব্যথা” ওমান সাগরে উত্তেজনা: ইরানি হেলিকপ্টারের হুঁশিয়ারিতে পথ বদলালো মার্কিন যুদ্ধজাহাজ বাগেরহাটে লোকালয়ে ঢুকে পড়া বিশাল অজগর উদ্ধার গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির ঘোষণা দিলেন ম্যাক্রোঁ থানার ভেতরে ছুরিকাঘাত, গাইবান্ধার এএসআই গুরুতর আহত”

পুশইন না পুশব্যাক ? বিব্রত বাংলা ভাষাভাষী মানুষেরা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:০৩:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
  • / 13

ছবি সংগৃহীত

 

ভারত থেকে অব্যাহত ভাবে বাংলাদেশে মানুষকে পুশ ইন করা হচ্ছে। অবৈধ ভাবে যে সকল বাংলাদেশী ভারতে বসবাস করে তাদের ক্ষেত্রে ভারতের পুশ ব্যাক নীতি হলেও বাংলা ভাষাভাষীদের পেলেই বাংলাদেশী বলে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। ভারতের ভাষায় এটি পুশ ব্যাক হলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি পুশ ইন। কোন আইন বা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না এব্যাপারে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়,গত ১৫ মে খাগড়াছড়ি ও কুড়িগ্রাম সীমান্তে ভারত ‘পুশ ইন’ করে শতাধিক। গুজরাতে যাদের বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করা হয়েছিল, তাদেরই বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ২৫ মে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ২৬ মে বিএসএফ কর্মকর্তারা ১৪ জনকে জোর করে বাংলাদেশে পুশ-ইন করে।

ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো সরকারি তথ্য না দিলেও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, গত ৭ মে থেকে ১৫ জুনের মধ্যে অন্তত ১৫০০ মুসলিম পুরুষ, নারী ও শিশুকে ভারত বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছেন। পাঠানোর এই প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত রয়েছে। দেশ ভাগের সময় বাংলাদেশ থেকে বিনিময় করে বহু পরিবার ভারতে চলে যায়। সেখানে তারা কয়েক পুরুষ ধরে বসবাস করছে। সেখানে তাদের জমি বাড়ি সবই রয়েছে। এদেরকেও বাংলাদেশী বলে পাঠিয়ে দেয়া হচচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। এ ছাড়া বাংলাভাষী মানুষদের পশ্চিমবঙ্গের বাইরে পেলে তাদের ধরে বাংলাদেশ সীমান্ত নিয়ে এসে পুশ ইন করা হচেছ।

সীমান্ত হত্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে ভারতের মানবাধিকার সংগঠন মাসুম। সংগঠনটির প্রধান কিরীটী রায় বলছিলেন, “বিদেশ থেকে কেউ যদি পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়া ভারতে আসেন, তাহলে পদ্ধতি হলো তাকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করতে হবে। বিদেশি আইনের ১৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী মামলা হবে।

“মামলায় যদি সেই ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হয়, তাহলে তার সাজা হবে। সাজার শেষে আদালতের মাধ্যমেই যেই ব্যক্তি যে দেশ থেকে এসেছেন, সেখানে ফেরত পাঠানো হবে,” বলছিলেন মি. রায়।
নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সম্প্রতি অবৈধ বাংলাদেশি বলে যাদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের ছোট-বড় দলে ভাগ করে ‘পুশ-ব্যাক’ই করা হচ্ছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্যমতে, গত জুন মাসে তারা ৯টি ঘটনার ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের ১৮ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন এমন ভারতীয় নাগরিকরাও, যাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং পরে তারা আবার ভারতে ফিরে আসেন। মানবাধিকার সংগঠনটি গত ৮ জুলাই এই বিষয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিলেও কোনো সাড়া মেলেনি। এর আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ৮ মে ভারত সরকারকে চিঠি দিয়ে জানায়, এই ধরনের ‘পুশ-ইন’ গ্রহণযোগ্য নয় এবং শুধুমাত্র সুনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদেরই আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় ফেরত নেওয়া হবে। ভারতে এই ধরণের বিমাতা সুলভ আচরণে বাংলাদেশ সরকার শুধু নয় বাংলা ভাষাভাষী ভারতীয়রাও চরম বিপাকে পড়েছেন। বিষয়টির দ্রত সমাধান আশা করেন বাংলাদেশ এবং ভারতের বাংলা ভাষাভাষী মানুষেরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

পুশইন না পুশব্যাক ? বিব্রত বাংলা ভাষাভাষী মানুষেরা

আপডেট সময় ০৫:০৩:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

 

ভারত থেকে অব্যাহত ভাবে বাংলাদেশে মানুষকে পুশ ইন করা হচ্ছে। অবৈধ ভাবে যে সকল বাংলাদেশী ভারতে বসবাস করে তাদের ক্ষেত্রে ভারতের পুশ ব্যাক নীতি হলেও বাংলা ভাষাভাষীদের পেলেই বাংলাদেশী বলে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। ভারতের ভাষায় এটি পুশ ব্যাক হলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি পুশ ইন। কোন আইন বা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না এব্যাপারে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়,গত ১৫ মে খাগড়াছড়ি ও কুড়িগ্রাম সীমান্তে ভারত ‘পুশ ইন’ করে শতাধিক। গুজরাতে যাদের বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করা হয়েছিল, তাদেরই বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ২৫ মে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ২৬ মে বিএসএফ কর্মকর্তারা ১৪ জনকে জোর করে বাংলাদেশে পুশ-ইন করে।

ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো সরকারি তথ্য না দিলেও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, গত ৭ মে থেকে ১৫ জুনের মধ্যে অন্তত ১৫০০ মুসলিম পুরুষ, নারী ও শিশুকে ভারত বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছেন। পাঠানোর এই প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত রয়েছে। দেশ ভাগের সময় বাংলাদেশ থেকে বিনিময় করে বহু পরিবার ভারতে চলে যায়। সেখানে তারা কয়েক পুরুষ ধরে বসবাস করছে। সেখানে তাদের জমি বাড়ি সবই রয়েছে। এদেরকেও বাংলাদেশী বলে পাঠিয়ে দেয়া হচচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। এ ছাড়া বাংলাভাষী মানুষদের পশ্চিমবঙ্গের বাইরে পেলে তাদের ধরে বাংলাদেশ সীমান্ত নিয়ে এসে পুশ ইন করা হচেছ।

সীমান্ত হত্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে ভারতের মানবাধিকার সংগঠন মাসুম। সংগঠনটির প্রধান কিরীটী রায় বলছিলেন, “বিদেশ থেকে কেউ যদি পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়া ভারতে আসেন, তাহলে পদ্ধতি হলো তাকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করতে হবে। বিদেশি আইনের ১৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী মামলা হবে।

“মামলায় যদি সেই ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হয়, তাহলে তার সাজা হবে। সাজার শেষে আদালতের মাধ্যমেই যেই ব্যক্তি যে দেশ থেকে এসেছেন, সেখানে ফেরত পাঠানো হবে,” বলছিলেন মি. রায়।
নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সম্প্রতি অবৈধ বাংলাদেশি বলে যাদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের ছোট-বড় দলে ভাগ করে ‘পুশ-ব্যাক’ই করা হচ্ছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্যমতে, গত জুন মাসে তারা ৯টি ঘটনার ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের ১৮ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন এমন ভারতীয় নাগরিকরাও, যাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং পরে তারা আবার ভারতে ফিরে আসেন। মানবাধিকার সংগঠনটি গত ৮ জুলাই এই বিষয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিলেও কোনো সাড়া মেলেনি। এর আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ৮ মে ভারত সরকারকে চিঠি দিয়ে জানায়, এই ধরনের ‘পুশ-ইন’ গ্রহণযোগ্য নয় এবং শুধুমাত্র সুনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদেরই আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় ফেরত নেওয়া হবে। ভারতে এই ধরণের বিমাতা সুলভ আচরণে বাংলাদেশ সরকার শুধু নয় বাংলা ভাষাভাষী ভারতীয়রাও চরম বিপাকে পড়েছেন। বিষয়টির দ্রত সমাধান আশা করেন বাংলাদেশ এবং ভারতের বাংলা ভাষাভাষী মানুষেরা।