ইন্টারনেট গতিতে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়ল জাপান: সেকেন্ডে স্থানান্তর ১২৫ পেটাবাইট ডেটা

- আপডেট সময় ০৪:২৫:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
- / 6
বিশ্বে ইন্টারনেট গতিতে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে জাপান। দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি (এনআইসিটি)-এর গবেষকেরা দাবি করেছেন, তাঁরা প্রতি সেকেন্ডে ১ লাখ ২৫ হাজার গিগাবাইট বা ১২৫ পেটাবাইট তথ্য সফলভাবে স্থানান্তর করতে সক্ষম হয়েছেন। এই তথ্য ১ হাজার ১২০ মাইল বা প্রায় ১ হাজার ৮০২ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে গন্তব্যে পৌঁছেছে।
এই গতি যুক্তরাষ্ট্রের গড় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের তুলনায় প্রায় ৪০ লাখ গুণ বেশি। গবেষকদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই গতিতে ‘ইন্টারনেট আর্কাইভ’-এর সম্পূর্ণ তথ্য মাত্র চার মিনিটের কম সময়ে ডাউনলোড করা সম্ভব।
এর আগে ২০২৪ সালে গবেষকেরা প্রতি সেকেন্ডে ৫০ হাজার ২৫০ গিগাবাইট ডেটা স্থানান্তরের রেকর্ড গড়েছিলেন। এবারের নতুন রেকর্ডটি পূর্বের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি দ্রুত।
এনআইসিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই নজিরবিহীন সাফল্যের পেছনে রয়েছে একটি বিশেষ ধরনের নতুন অপটিক্যাল ফাইবার প্রযুক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে ফ্লোরিডার দূরত্বের সমান পথ অতিক্রম করে পরীক্ষাটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়। এই গবেষণা উপস্থাপন করা হয় চলতি বছরের ৩ এপ্রিল, যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে অনুষ্ঠিত ৪৮তম অপটিক্যাল ফাইবার কমিউনিকেশন কনফারেন্সে।
নতুন উদ্ভাবিত অপটিক্যাল ফাইবারটি একক ক্যাবলের মধ্যেই ১৯টি পৃথক চ্যানেল ধারণ করে, যা সাধারণ ১৯টি ফাইবারের সমান তথ্য পরিবহনের সক্ষমতা রাখে। এই ফাইবারের প্রতিটি চ্যানেল আলোকে সমানভাবে চালনা করায় বিভ্রান্তি কম হয় এবং তথ্যের ক্ষতি প্রায় শূন্যে নেমে আসে।
মাত্র ০.১২৭ মিলিমিটার পুরু এই ফাইবার প্রচলিত একক ফাইবার ক্যাবলের সমান পুরু হওয়ায় বর্তমান অবকাঠামোতেই ব্যবহারযোগ্য, ফলে আলাদা করে নতুন অবকাঠামো নির্মাণের প্রয়োজন হবে না।
২০২৩ সালের মার্চেও একই গবেষক দল উচ্চগতির ডেটা স্থানান্তরের পরীক্ষা চালিয়েছিল, তবে সে সময় পূর্ণ দূরত্বে সফলতা আসেনি। এবার ২১ বার তথ্য ঘুরিয়ে সম্পূর্ণ ১ হাজার ১২০ মাইল দূরত্বে পৌঁছে দিয়ে তাঁরা নতুন রেকর্ড গড়েছেন।
গবেষকদের মতে, এই সাফল্য ভবিষ্যতের দীর্ঘ দূরত্ব ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অপটিক্যাল কমিউনিকেশন সিস্টেম তৈরিতে পথ খুলে দেবে। বৈশ্বিকভাবে ডেটা ব্যবহার যেভাবে বাড়ছে, তাতে এমন উন্নত প্রযুক্তি এখন সময়ের দাবি। গবেষকেরা পরবর্তী ধাপে এই প্রযুক্তিকে টেলিকম খাতে ব্যবহারযোগ্য করতে কাজ করছেন।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স