গাজায় ত্রাণকেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ৪০ ফিলিস্তিনি

- আপডেট সময় ০২:২০:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
- / 8
গাজা উপত্যকায় দুটি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪০ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ২০০ জন। নিহতদের অধিকাংশই ছিলেন ক্ষুধার্ত, যারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত বিতর্কিত সংগঠন ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ)-এর পরিচালিত ত্রাণকেন্দ্র থেকে খাদ্য সংগ্রহের অপেক্ষায় ছিলেন।
আল-জাজিরার বরাতে গাজার জরুরি পরিষেবা বিভাগ ‘সিভিল ডিফেন্স’ জানিয়েছে, বুধবার ভোরে মধ্য গাজার নেতজারিম করিডর এলাকায় যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত একটি ত্রাণকেন্দ্রের সামনে ভিড় করা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী ট্যাংক ও ড্রোন থেকে হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান অন্তত ৩১ জন। আহত হন প্রায় ২০০ জন, যাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, “আমেরিকান সাহায্য কেন্দ্র থেকে খাবার নিতে আসা কয়েক হাজার মানুষের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী বর্বরভাবে ট্যাংক থেকে গোলাবর্ষণ করে এবং ড্রোনের মাধ্যমে গুলিবর্ষণ চালায়। আমরা ৩১ জন শহিদের মরদেহ উদ্ধার করেছি এবং আহত প্রায় ২০০ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটা থেকেই হাজারো মানুষ ত্রাণের আশায় জড়ো হতে থাকেন বিতরণকেন্দ্রের সামনে। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে গোলাবর্ষণের মাত্রা বেড়ে গেলে হতাহতের সংখ্যা হু-হু করে বাড়ে।
এদিকে, একইদিন গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা এলাকার একটি ত্রাণকেন্দ্রের কাছেও ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন আরও ৯ জন ফিলিস্তিনি। নাসের হাসপাতালের চিকিৎসকদের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা।
তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, নেতজারিম করিডর এলাকায় তারা “সতর্কতামূলক গুলি” চালিয়েছে। যদিও এতে অসংখ্য নিরীহ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
এই ঘটনার পর জিএইচএফ ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম নিয়েও নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই সংস্থার পরিচালিত কেন্দ্রে ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দেড় শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
গাজার মানবিক পরিস্থিতি দিনদিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে, আর যুদ্ধবিধ্বস্ত এ অঞ্চলে নিরাপদে ত্রাণ গ্রহণও হয়ে উঠেছে প্রাণঘাতী।