ঢাকা ০৬:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
অচল সেন্টমার্টিন দ্বীপে দুর্বিষহ জীবন নতুন নোট আসছে বাজারে, সমাধান মিলছে ছেঁড়া টাকার ঝামেলায় শাসনের পথে র‍্যাবকে নতুন উদ্যমে এগিয়ে চলার আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ইউক্রেনের সুমিতে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ৬ ইউক্রেনীয় সেনা নিহত ২৮ তারিখের মধ্যে শ্রমিকদের পাওনা না দিলে জেল: শ্রম উপদেষ্টা ভারতে মাছ রপ্তানি স্থগিত রেখেছে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা ‘বাংলাদেশ ছাড়া আমার আর কোনো পাসপোর্ট নেই’: উপদেষ্টা খলিলুর রহমান চেয়ারম্যান অপসারণসহ ৪ দফা দাবি, এনবিআরের বিরুদ্ধে অসহযোগের ঘোষণা শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা :মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হিটুর ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে প্রেরণ কোরবানির চামড়ার মূল্যবৃদ্ধির ইঙ্গিত, নির্ধারণ হবে বৃহস্পতিবার: বাণিজ্য উপদেষ্টা

গাজায় ত্রাণ এখনও ত্রাণ পৌঁছেনি, ভয়াবহ সংকটে সাধারণ মানুষ: জাতিসংঘ

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:১১:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
  • / 4

ছবি সংগৃহীত

 

১১ সপ্তাহের অবরোধ শেষে মঙ্গলবার কেরেম শালোম সীমান্ত দিয়ে গাজায় প্রবেশ করেছে ৯৩টি ত্রাণবাহী ট্রাক। কিন্তু এখনও একটি প্যাকেট ত্রাণও উপকারভোগীদের হাতে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব ট্রাকে ছিল আটা, শিশু খাদ্য, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী। তবে জাতিসংঘের দাবি, ত্রাণবাহী ট্রাকগুলো গাজায় প্রবেশ করলেও সেগুলো মজুদগারে পৌঁছানো যায়নি। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্তেফান দুজারিচ জানান, তাদের দল ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মজুদগারে প্রবেশের অনুমতি পায়নি। ফলে বিতরণ প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, “ইসরায়েল আমাদের বলেছে কেরেম শালোম সীমান্তে ত্রাণ নামিয়ে রেখে গাজায় প্রবেশের জন্য আলাদা অনুমতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এটি এক ভয়াবহ জটিলতা।” তিনি আরও জানান, এই ত্রাণ সহায়তা “সমুদ্রের এক ফোঁটা জলের মতো মাত্র।”

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গাজায় মানবিক সংকট মোকাবেলায় প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রয়োজন। সংস্থার মানবিক প্রধান টম ফ্লেচার বিবিসিকে বলেন, “পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় সহায়তা না পৌঁছালে গাজায় বিপদ আরও ঘনীভূত হবে।” যদিও পরে বলা হয়, তার উল্লিখিত ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা তাৎক্ষণিক নয়, বরং একটি বছরের সম্ভাব্য পূর্বাভাস।

জাতিসংঘের মানবিক দপ্তর জানায়, বর্তমানে গাজায় ১৪ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিজনিত ঝুঁকিতে রয়েছে, যাদের জরুরি খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা ছাড়া জীবন বাঁচানো কঠিন। গত সপ্তাহে হামাস-শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ১১ সপ্তাহে অপুষ্টিতে কমপক্ষে ৫৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে আন্তর্জাতিক মহলে চাপ ক্রমেই বাড়ছে। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের ‘নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য’ সামরিক অভিযান চলমান থাকায় তারা ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার পরিস্থিতিকে ‘অসহনীয়’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া ক্যালাস জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে ইউরোপীয় বাণিজ্য চুক্তিও পুনর্বিবেচনায় রয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, “ইসরায়েল যে কিছু ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। তবে এটি যথেষ্ট নয়।”

অন্যদিকে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডার নেতারা এক যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েলকে সামরিক অভিযান বন্ধ করে অবিলম্বে ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যে কয়েকজন ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী ও সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

সূত্র: বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজায় ত্রাণ এখনও ত্রাণ পৌঁছেনি, ভয়াবহ সংকটে সাধারণ মানুষ: জাতিসংঘ

আপডেট সময় ১২:১১:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

 

১১ সপ্তাহের অবরোধ শেষে মঙ্গলবার কেরেম শালোম সীমান্ত দিয়ে গাজায় প্রবেশ করেছে ৯৩টি ত্রাণবাহী ট্রাক। কিন্তু এখনও একটি প্যাকেট ত্রাণও উপকারভোগীদের হাতে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব ট্রাকে ছিল আটা, শিশু খাদ্য, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী। তবে জাতিসংঘের দাবি, ত্রাণবাহী ট্রাকগুলো গাজায় প্রবেশ করলেও সেগুলো মজুদগারে পৌঁছানো যায়নি। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্তেফান দুজারিচ জানান, তাদের দল ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মজুদগারে প্রবেশের অনুমতি পায়নি। ফলে বিতরণ প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, “ইসরায়েল আমাদের বলেছে কেরেম শালোম সীমান্তে ত্রাণ নামিয়ে রেখে গাজায় প্রবেশের জন্য আলাদা অনুমতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এটি এক ভয়াবহ জটিলতা।” তিনি আরও জানান, এই ত্রাণ সহায়তা “সমুদ্রের এক ফোঁটা জলের মতো মাত্র।”

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গাজায় মানবিক সংকট মোকাবেলায় প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রয়োজন। সংস্থার মানবিক প্রধান টম ফ্লেচার বিবিসিকে বলেন, “পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় সহায়তা না পৌঁছালে গাজায় বিপদ আরও ঘনীভূত হবে।” যদিও পরে বলা হয়, তার উল্লিখিত ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যুর আশঙ্কা তাৎক্ষণিক নয়, বরং একটি বছরের সম্ভাব্য পূর্বাভাস।

জাতিসংঘের মানবিক দপ্তর জানায়, বর্তমানে গাজায় ১৪ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিজনিত ঝুঁকিতে রয়েছে, যাদের জরুরি খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা ছাড়া জীবন বাঁচানো কঠিন। গত সপ্তাহে হামাস-শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ১১ সপ্তাহে অপুষ্টিতে কমপক্ষে ৫৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে আন্তর্জাতিক মহলে চাপ ক্রমেই বাড়ছে। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের ‘নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য’ সামরিক অভিযান চলমান থাকায় তারা ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার পরিস্থিতিকে ‘অসহনীয়’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া ক্যালাস জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে ইউরোপীয় বাণিজ্য চুক্তিও পুনর্বিবেচনায় রয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, “ইসরায়েল যে কিছু ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। তবে এটি যথেষ্ট নয়।”

অন্যদিকে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডার নেতারা এক যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েলকে সামরিক অভিযান বন্ধ করে অবিলম্বে ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্য ইতিমধ্যে কয়েকজন ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী ও সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

সূত্র: বিবিসি