ঢাকা ১২:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ২০ ফিলিস্তিনি নিহত, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৫২ হাজার ভারতের অহংকার চূর্ণ করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী: শেহবাজ শরিফের দাবি কাকরাইলে রাতভর অবস্থান, তিন দফা দাবিতে অনড় জবি শিক্ষার্থীরা রাজধানীর কোথায় কোথায় বসছে কোরবানির বিশাল পশুর হাট? শিক্ষার্থীদের পানির বোতল ছোঁড়া ঘটনায় হতাশা প্রকাশ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে চাই দৃশ্যমান দৃষ্টান্ত: প্রধান বিচারপতি ইস্তাম্বুলে শান্তি আলোচনায় পুতিন থাকছেন না, ক্ষোভে জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত রামনের নাটকীয় গোলে মায়োর্কার বিপক্ষে রিয়ালের জয়, টিকে রাইল শিরোপার আশা কাতার-যুক্তরাষ্ট্রে ১.২ ট্রিলিয়ন ডলারের ঐতিহাসিক চুক্তি, বোয়িংয়ের রেকর্ড অর্ডার

গাজায় যুদ্ধ-দুর্ভিক্ষ বন্ধ না হলে আলোচনা নয়: হামাসের স্পষ্ট বার্তা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:৫৬:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
  • / 9

ছবি সংগৃহীত

 

গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ ও গণহত্যা বন্ধ না হলে ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসা বা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছে হামাস। মঙ্গলবার (৬ মে) ফ্রান্সের বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ও গাজার সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. বাসেম নাঈম।

তিনি বলেন, “যতক্ষণ না গাজায় অনাহার, পিপাসা ও নির্বিচার হত্যাকাণ্ড থেমে যায়, ততক্ষণ আলোচনার কোনো অর্থ নেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকারকে এই মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধ করতে চাপ প্রয়োগ করতে হবে।”

এই বক্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ইসরায়েল গাজার অধিকাংশ অঞ্চল দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, নতুন অভিযানে গাজা থেকে ‘বেশিরভাগ মানুষকে সরিয়ে’ দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ইতিমধ্যে সামরিক বাহিনীর একটি ‘বিস্তৃত অভিযান’ পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছে। এক কর্মকর্তা জানান, গাজা উপত্যকা দখল করে সেখানে অবস্থান করাও এই পরিকল্পনার অংশ।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইসরায়েলের নতুন এই পরিকল্পনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, এই পরিকল্পনা ‘অগণিত বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর’ কারণ হয়ে উঠবে। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ফারহান হক এক বিবৃতিতে বলেন, “গাজা একটি ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ।”

এদিকে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো এক রেডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, “ইসরায়েলের এই পরিকল্পনা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”

ফিলিস্তিনিদের কাছে এই নতুন বাস্তুচ্যুতি পরিকল্পনা ১৯৪৮ সালের ‘নাকবা’র স্মৃতি জাগিয়ে তুলেছে, যখন ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি দেশছাড়া হয়েছিলেন।

গাজায় হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া সাম্প্রতিক ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ২,৪৫৯ জন। আর গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া পুরো যুদ্ধে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২,৫৬৭ জনে।

এই রক্তাক্ত যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিকভাবে কার্যকর চাপ না আসা পর্যন্ত, আলোচনার সম্ভাবনা থেকে হামাস সরে থাকবেই এটাই তাদের এখনকার অবস্থান।

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজায় যুদ্ধ-দুর্ভিক্ষ বন্ধ না হলে আলোচনা নয়: হামাসের স্পষ্ট বার্তা

আপডেট সময় ০৪:৫৬:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

 

গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ ও গণহত্যা বন্ধ না হলে ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসা বা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছে হামাস। মঙ্গলবার (৬ মে) ফ্রান্সের বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ও গাজার সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. বাসেম নাঈম।

তিনি বলেন, “যতক্ষণ না গাজায় অনাহার, পিপাসা ও নির্বিচার হত্যাকাণ্ড থেমে যায়, ততক্ষণ আলোচনার কোনো অর্থ নেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকারকে এই মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধ করতে চাপ প্রয়োগ করতে হবে।”

এই বক্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ইসরায়েল গাজার অধিকাংশ অঞ্চল দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, নতুন অভিযানে গাজা থেকে ‘বেশিরভাগ মানুষকে সরিয়ে’ দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ইতিমধ্যে সামরিক বাহিনীর একটি ‘বিস্তৃত অভিযান’ পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছে। এক কর্মকর্তা জানান, গাজা উপত্যকা দখল করে সেখানে অবস্থান করাও এই পরিকল্পনার অংশ।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইসরায়েলের নতুন এই পরিকল্পনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, এই পরিকল্পনা ‘অগণিত বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর’ কারণ হয়ে উঠবে। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ফারহান হক এক বিবৃতিতে বলেন, “গাজা একটি ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ।”

এদিকে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো এক রেডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, “ইসরায়েলের এই পরিকল্পনা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”

ফিলিস্তিনিদের কাছে এই নতুন বাস্তুচ্যুতি পরিকল্পনা ১৯৪৮ সালের ‘নাকবা’র স্মৃতি জাগিয়ে তুলেছে, যখন ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি দেশছাড়া হয়েছিলেন।

গাজায় হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া সাম্প্রতিক ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ২,৪৫৯ জন। আর গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া পুরো যুদ্ধে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২,৫৬৭ জনে।

এই রক্তাক্ত যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিকভাবে কার্যকর চাপ না আসা পর্যন্ত, আলোচনার সম্ভাবনা থেকে হামাস সরে থাকবেই এটাই তাদের এখনকার অবস্থান।