ঢাকা ০৭:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :

চেনাব নদীতে পানি সংকটে পাকিস্তান, দায়ী ভারতের গোঁড়ামি ?

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:৪৪:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
  • / 36

ছবি সংগৃহীত

 

ভূস্বর্গ খ্যাত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। হামলার জেরে দুই দেশই একে-অপরের বিরুদ্ধে নানা ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

এই প্রেক্ষাপটে ভারতের মোদী সরকার সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দেয়। এরপর থেকেই ভারত পাকিস্তানের দিকে পানি প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে পাকিস্তানের চেনাব নদীতে। দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ডন মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারত পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে চেনাব নদীর পানি প্রবাহ বন্ধ করে দেয়।

পাকিস্তানের মাড়ালা হেডওয়ার্কসে সোমবার সকালে মাত্র ৩ হাজার ১০০ কিউসেক পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়, যেখানে আগের দিন রোববার এটি ছিল ৩৫ হাজার কিউসেক। পাঞ্জাব প্রদেশের সেচ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, “ভারত চেনাব নদীর পানি প্রায় পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে। তারা আমাদের প্রাপ্য পানি নিজেদের বাঁধ ও বিদ্যুৎ প্রকল্পে জমা করছে। এটি সিন্ধু পানি চুক্তির গুরুতর লঙ্ঘন।”

দ্য ডন-এর কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, চেনাব অববাহিকায় ভারতের তিনটি বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে পাকাল ডুল, বাগলিহার ও সালাল ড্যাম। পাকাল ডুল ড্যামের উৎপাদন ক্ষমতা ১,০০০ মেগাওয়াট এবং পানি ধারণ ক্ষমতা ৮৮ হাজার একরফুট। বাগলিহার ড্যামের উৎপাদন ক্ষমতা ৯০০ মেগাওয়াট, পানি ধারণ ক্ষমতা ৩ লাখ ২১ হাজার একরফুট। সালাল ড্যামের ক্ষমতা ৬৯০ মেগাওয়াট এবং ধারণক্ষমতা ২ লাখ ২৮ হাজার একরফুট।

এই ড্যামগুলোতে পানি আটকে রাখার কারণে পাকিস্তানে পানি প্রবাহ কমে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাকিস্তানি কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, যদি ভারত এভাবে পানি আটকে রাখে, তাহলে আগামী ৪–৫ দিন পাকিস্তানকে পানি সংকটে পড়তে হবে। আবার হঠাৎ পানি ছাড়লে চেনাব নদীতে আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি তৈরি হবে।

চেনাব নদী পাকিস্তানের সেচ ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউসিসি এবং বিএরবি খালসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ খাল এই নদীর পানির ওপর নির্ভরশীল। সোমবার ওয়াপদার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চেনাবে ইনফ্লো ছিল ৫,৩০০ কিউসেক, তবে পানি ছাড়ার হার ছিল শূন্য।

এই পরিস্থিতি দুই দেশের মধ্যকার পানি-সম্পর্কিত সংকট আরও ঘনীভূত করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সূত্র: দ্য ডন

বিষয় :

নিউজটি শেয়ার করুন

চেনাব নদীতে পানি সংকটে পাকিস্তান, দায়ী ভারতের গোঁড়ামি ?

আপডেট সময় ০৩:৪৪:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

 

ভূস্বর্গ খ্যাত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। হামলার জেরে দুই দেশই একে-অপরের বিরুদ্ধে নানা ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

এই প্রেক্ষাপটে ভারতের মোদী সরকার সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দেয়। এরপর থেকেই ভারত পাকিস্তানের দিকে পানি প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে পাকিস্তানের চেনাব নদীতে। দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ডন মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারত পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে চেনাব নদীর পানি প্রবাহ বন্ধ করে দেয়।

পাকিস্তানের মাড়ালা হেডওয়ার্কসে সোমবার সকালে মাত্র ৩ হাজার ১০০ কিউসেক পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়, যেখানে আগের দিন রোববার এটি ছিল ৩৫ হাজার কিউসেক। পাঞ্জাব প্রদেশের সেচ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, “ভারত চেনাব নদীর পানি প্রায় পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে। তারা আমাদের প্রাপ্য পানি নিজেদের বাঁধ ও বিদ্যুৎ প্রকল্পে জমা করছে। এটি সিন্ধু পানি চুক্তির গুরুতর লঙ্ঘন।”

দ্য ডন-এর কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, চেনাব অববাহিকায় ভারতের তিনটি বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে পাকাল ডুল, বাগলিহার ও সালাল ড্যাম। পাকাল ডুল ড্যামের উৎপাদন ক্ষমতা ১,০০০ মেগাওয়াট এবং পানি ধারণ ক্ষমতা ৮৮ হাজার একরফুট। বাগলিহার ড্যামের উৎপাদন ক্ষমতা ৯০০ মেগাওয়াট, পানি ধারণ ক্ষমতা ৩ লাখ ২১ হাজার একরফুট। সালাল ড্যামের ক্ষমতা ৬৯০ মেগাওয়াট এবং ধারণক্ষমতা ২ লাখ ২৮ হাজার একরফুট।

এই ড্যামগুলোতে পানি আটকে রাখার কারণে পাকিস্তানে পানি প্রবাহ কমে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাকিস্তানি কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, যদি ভারত এভাবে পানি আটকে রাখে, তাহলে আগামী ৪–৫ দিন পাকিস্তানকে পানি সংকটে পড়তে হবে। আবার হঠাৎ পানি ছাড়লে চেনাব নদীতে আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি তৈরি হবে।

চেনাব নদী পাকিস্তানের সেচ ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউসিসি এবং বিএরবি খালসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ খাল এই নদীর পানির ওপর নির্ভরশীল। সোমবার ওয়াপদার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চেনাবে ইনফ্লো ছিল ৫,৩০০ কিউসেক, তবে পানি ছাড়ার হার ছিল শূন্য।

এই পরিস্থিতি দুই দেশের মধ্যকার পানি-সম্পর্কিত সংকট আরও ঘনীভূত করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সূত্র: দ্য ডন