যুদ্ধের ভারে ক্লান্ত ইসরায়েলি সেনাবাহিনী, মনোবলে চিড় ধরছে

- আপডেট সময় ১১:৩৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫
- / 20
ইসরায়েলি দখলদার সেনাবাহিনীর ভেতরে ক্রমেই দেখা দিচ্ছে ক্লান্তি, হতাশা ও সরকারের প্রতি গভীর অবিশ্বাস। যুদ্ধের দীর্ঘসূত্রতা, পরপর একাধিকবার তলব, এবং নেতানিয়াহু সরকারের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত সেনাদের মনোবল ভেঙে দিচ্ছে এমনটাই জানিয়েছে দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম Jerusalem Post।
গণমাধ্যমটি জানায়, গত ১৯ মাসে বহু রিজার্ভ সেনাকে তিন থেকে ছয়বার পর্যন্ত যুদ্ধে ডাকা হয়েছে। এর ফলে অনেকেই পরিবার, কর্মজীবন বা শিক্ষাজীবন বারবার বাধাগ্রস্ত হওয়ার শিকার হয়েছেন। যুদ্ধের শুরুতে, অর্থাৎ ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে সেনা তলবে প্রত্যাশার চেয়েও ২০-৩০ শতাংশ বেশি সাড়া মিলেছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সেই হার কমতে কমতে এখন ৬০-৭০ শতাংশে এসে ঠেকেছে।
বর্তমানে সরকার এক লক্ষ রিজার্ভ সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে। তবে এতে সেনাদের আগ্রহ অনেকটাই কমে গেছে। রিজার্ভ বাহিনীর অনেকেই মনে করছেন, তাঁদের শুধুমাত্র প্রয়োজনের সময়ই ডাকা হয়, কোনো ধরনের সম্মান, কৃতজ্ঞতা বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধের প্রতি এই অনীহা এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলোর প্রতি সেনাদের আস্থা হারানোর প্রবণতা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর যুদ্ধক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। অনেকেই মনে করছেন, যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করার পেছনে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক অভিসন্ধি কাজ করছে। বিশেষ করে, অতিরক্ষণশীল ধর্মীয় ইহুদিদের সেনা তলব থেকে ছাড় দেওয়াকে ব্যাপকভাবে বৈষম্যমূলক বলেই মনে করছেন অন্যরা।
এই ভেদাভেদ সেনাবাহিনীর ভেতরে বিভাজন তৈরি করছে এবং দখলদার বাহিনীর ভেতরে স্থায়ী মনোবল সংকটের সৃষ্টি করছে। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, যদি এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তাহলে খুব শিগগিরই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কৌশলগত সক্ষমতা মুখ থুবড়ে পড়বে।
এই বাস্তবতায়, যুদ্ধের নেপথ্যে থাকা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও সামরিক নীতির পুনর্মূল্যায়ন এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে। না হলে, যুদ্ধ কেবল মাঠেই নয় মনোবল ও সমর্থনের ঘাটতিতেও ইসরায়েলকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিতে পারে।