ভারত-মার্কিন বাণিজ্যিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যাশা নিয়ে চার দিনের সফরে ভারতে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। রবিবার দিল্লির পালাম টেকনিক্যাল বিমানবন্দরে তার সফরসঙ্গী ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্ত্রী ঊষা, দুই পুত্র ও কন্যাসহ পৌঁছালে তাদের অভ্যর্থনা জানান ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

ভ্যান্স ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এটিই তার প্রথম ভারত সফর। এ সফর কেবল পারিবারিক নয়, কূটনৈতিকভাবেও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক শুল্কনীতি এবং বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই সফরের গুরুত্ব বাড়িয়েছে।

ভারতে পা রেখেই ভ্যান্স পরিবার নিয়ে অক্ষরধাম মন্দির পরিদর্শন করেন। সোমবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন তিনি। বৈঠক শেষে দু’দেশের মধ্যকার সম্ভাব্য দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অগ্রগতির কথা জানিয়েছেন উভয় পক্ষই। শুল্ক ও বাণিজ্য এই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল।

হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের বিষয়টি সাময়িকভাবে স্থগিত রেখে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির সুযোগ তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র।

মোদি ও ভ্যান্সের মধ্যে এ আলোচনার মাধ্যমে ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের আসন্ন ওয়াশিংটন সফরে চূড়ান্ত আলোচনার groundwork তৈরি হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, জুলাইয়ের মধ্যেই দুই দেশের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।

এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে তা শুধু ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে দৃঢ় করবে না, বরং চীনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধেও কিছুটা ভারসাম্য আনবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য।

এ সফরে ভ্যান্স কেবল বাণিজ্য নয়, জ্বালানি, কৌশলগত প্রযুক্তি এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা করেছেন। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়েও কথা হয়েছে দুই নেতার মধ্যে। সফর শেষে জয়পুর ও আগ্রার তাজমহল পরিদর্শনেরও পরিকল্পনা রয়েছে ভ্যান্স পরিবারের।

এই সফর ভারত-মার্কিন সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা করবে বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সূত্র: রয়টার্স