হার্ভার্ডকে ‘তামাশা’ বললেন ট্রাম্প, সরকারি তহবিল ও কর-ছাড় বাতিলের হুমকি

- আপডেট সময় ০২:০৭:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
- / 14
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের আলোচনায়। এবার তার ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও সম্মানিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। গতকাল বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ দেওয়া এক পোস্টে হার্ভার্ডকে ‘তামাশা’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্রীয় তহবিল দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই।’
ট্রাম্পের অভিযোগ, হার্ভার্ড রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ মেনে চলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ২২০ কোটি ডলারের ফেডারেল গবেষণা তহবিল স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগকে (আইআরএস) হার্ভার্ডের কর-ছাড় সুবিধা বাতিলের আহ্বান জানান। সিএনএন ও ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, আইআরএস এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ট্রাম্প লিখেছেন, “হার্ভার্ড এখন আর সম্মানজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়। এটি বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় থাকার যোগ্যতা হারিয়েছে। এখানে শুধু ঘৃণা ও মূর্খতা শেখানো হয়।”
বিশ্বখ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ পর্যন্ত ১৬২ জন নোবেল বিজয়ী বের হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক শীর্ষ গবেষণা, উদ্ভাবন এবং রাষ্ট্রীয় নীতির পেছনে রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের অবদান। তবে ট্রাম্পের দাবি, হার্ভার্ডের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ‘অতিমাত্রায় বামঘেঁষা’ হয়ে উঠেছে এবং তারা সরকারের যুক্তিসংগত পরামর্শও গ্রহণ করছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য ট্রাম্পের দাবিকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার এক বিবৃতিতে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়টি তার সাংবিধানিক স্বাধীনতা এবং একাডেমিক স্বাধীনতা থেকে কোনোভাবেই সরে আসবে না। তিনি বলেন, “আমরা কোনো ধরনের রাজনৈতিক চাপের মুখে আলোচনা করতেও রাজি নই।”
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসনের সময়েও একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে চাপের মুখে পড়তে হয়েছিল। তবে হার্ভার্ড এখন পর্যন্ত সরকারি নির্দেশের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কিছু দাবি মেনে নিলেও হার্ভার্ড আপসহীন।
এই বিতর্কে দেশটির একাডেমিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই এটিকে উচ্চশিক্ষার স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ ট্রাম্পের অবস্থানকে যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করছেন। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে সত্যিই কি হার্ভার্ড ‘তামাশা’, নাকি এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফল?