সুমি শহরে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৩১ জন নিহত, তীব্র প্রতিক্রিয়া ইউরোপের

- আপডেট সময় ১১:৪০:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
- / ৫১১ বার পড়া হয়েছে
ইউক্রেনের সুমি শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রবিবার প্রাণ হারিয়েছে দুই শিশুসহ অন্তত ৩১ জন। আহত হয়েছে আরও ৮৪ জন, যার মধ্যে ১০ জন শিশু। ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবাগুলো এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। যুদ্ধবিরতি নিয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনার মাঝেই এমন নৃশংস হামলায় ক্ষোভে ফুঁসছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ এই হামলাকে ঘৃণ্য ও মানবতা-বিরোধী আখ্যা দিয়ে বলেন, “এখনই সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি জরুরি। রাশিয়া একাই এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়। তারা মানুষের জীবন, আন্তর্জাতিক আইন বা কূটনৈতিক চেষ্টার কোনো মূল্য দেয় না।”
তিনি জানান, ফ্রান্স এবং তার মিত্র দেশগুলো অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার বলেন, “পুতিনের আক্রমণ আজও ইউক্রেনকে রক্তাক্ত করছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শান্তির জন্য তার দায়বদ্ধতা দেখিয়েছেন, এবার পুতিনকে অবিলম্বে যুদ্ধ থামাতে হবে।”
জার্মানির বিদায়ী চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ বলেন, “রাশিয়া বলে শান্তি চায়, কিন্তু এই হামলা তাদের বর্বর রূপ প্রকাশ করেছে।” অন্যদিকে, সম্ভাব্য চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ ম্যার্ৎস রাশিয়ার এই হামলাকে সরাসরি যুদ্ধাপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টেরসন বলেন, “শান্তিকামী কোনো দেশ এভাবে হামলা করতে পারে না। এটি ছিল এক ভয়াবহ ও কাপুরুষোচিত পদক্ষেপ।” ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, “রাশিয়ার এই হামলা ছিল এক অপরাধমূলক কাণ্ড, যা নিন্দনীয়।”
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও কিয়েভে ট্রাম্প প্রশাসনের বিশেষ দূত কিথ কেলোগ বলেন, “এই হামলা সাধারণ মানুষের উপর এক নিষ্ঠুরতম আঘাত। একজন সাবেক সেনা হিসেবে বলতে পারি, এটি সম্পূর্ণ অনৈতিক।”
এদিকে, কৃষ্ণসাগরের নিরাপত্তা নিয়ে তুরস্কের উদ্যোগে আগামী মঙ্গলবার ও বুধবার একটি আন্তর্জাতিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৈঠকে বিভিন্ন দেশের সামরিক বিশেষজ্ঞরা অংশ নেবেন। তবে রাশিয়া ও ইউক্রেন এখন পর্যন্ত অংশগ্রহণের বিষয়ে সম্মতি জানায়নি।
এই ঘটনাগুলো আবারও স্মরণ করিয়ে দেয় যুদ্ধের ভয়াবহতা কেবল সীমান্তের রেখা মুছে দেয় না, তা মানবতার মূল ভিত্তিতেই আঘাত হানে।