গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি আগ্রাসনে সাংবাদিক হত্যার মিছিল থামছে না। সর্বশেষ ইসরাইলের একটি বর্বরোচিত হামলায় আহমেদ মনসুর নামে এক ফিলিস্তিনি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এর ফলে চলমান সংঘাতে গাজায় নিহত গণমাধ্যমকর্মীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১১ জনে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস।
মঙ্গলবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার ভোররাতে গাজা শহরের একটি সংবাদ তাঁবুতে ইসরাইলের বিমান হামলার ঘটনায় আহমেদ মনসুর গুরুতর দগ্ধ হন এবং পরে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর পর গাজার মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের প্রতি সংহতি জানাতে এবং এই হামলার নিন্দা জানাতে আহ্বান জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা আন্তর্জাতিক সাংবাদিক ফেডারেশন, আরব সাংবাদিক ফেডারেশন এবং বিশ্বের সব সাংবাদিক সংগঠনকে আহ্বান জানাই যেন তারা গাজায় ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চলমান এই পরিকল্পিত সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।’
গাজার মিডিয়া অফিস আরও জানায়, সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে ধারাবাহিকভাবে চালানো এই হামলা কেবল ব্যক্তিগত নয়, বরং তথ্য প্রকাশের অধিকার ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতার বিরুদ্ধে এক গুরুতর আঘাত।
এদিকে গাজার পাশাপাশি পশ্চিম তীরেও ইসরাইলি বাহিনীর দমন-পীড়ন অব্যাহত রয়েছে। গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, সোমবার রাতভর চালানো অভিযানে গাজাজুড়ে অন্তত ১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। অনেকেই আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, একই রাতে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক অভিযান চালায় দখলদার বাহিনী। বাড়িঘর ঘেরাও করে ফিলিস্তিনিদের গ্রেফতার এবং উচ্ছেদ করার ঘটনাও ঘটেছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ফিলিস্তিনে চলমান এ দমননীতির সবচেয়ে বড় শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নারী, শিশু ও সাংবাদিকরা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা এবং কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে গাজা উপত্যকার শোকের তালিকা।