যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় অনাগ্রহ ইরানের, অর্থহীন বলে কূটনৈতিক বার্তা

- আপডেট সময় ০৮:০২:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫
- / 18
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করলেও তেহরান তাতে সাড়া দিতে নারাজ। রবিবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি যুক্তরাষ্ট্রের এমন প্রস্তাবকে ‘অর্থহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেন। তার মতে, যে পক্ষ জাতিসংঘ সনদ লঙ্ঘন করে বলপ্রয়োগের হুমকি দেয়, তাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা বাস্তবসম্মত নয়।
এএফপির খবরে জানা গেছে, ট্রাম্প গত মাসে পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে আলোচনার প্রস্তাব দেন এবং বলেন, সরাসরি সংলাপ হলে বিষয়টি দ্রুত সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব। তবে তিনি একইসঙ্গে ইরানে হামলার হুমকিও দেন, যা তেহরানের দৃষ্টিতে পরস্পরবিরোধী বার্তা।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তেহরান কূটনীতিকে গুরুত্ব দেয় এবং পরোক্ষ সংলাপে আগ্রহী। আরাঘচি বলেন, ‘আমরা আলোচনার পথ খোলা রাখি, কিন্তু জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপস নেই।’
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘সমমর্যাদাভিত্তিক সংলাপের’ পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে তিনি জোর দেন, “আলোচনার ডাক আর হুমকি দুই একসঙ্গে চলতে পারে না।”
ইতোমধ্যে ইরানের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তারা যুদ্ধে আগ্রহী নয়, তবে যুদ্ধ এলে প্রস্তুত রয়েছে। ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের প্রধান হোসেইন সালামি বলেন, “আমরা যুদ্ধ চাই না, তবে প্রতিক্রিয়ায় কোনো ঘাটতি রাখব না।”
২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের সই হওয়া ঐতিহাসিক চুক্তি জেসিপিওএ থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের একতরফা সরে যাওয়ার পর থেকেই ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ে। এরপর ইরান ধাপে ধাপে নিজের পারমাণবিক কর্মসূচি বাড়িয়ে দেয়।
সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির উপদেষ্টা আলী লারিজানি বলেন, “ইরান পারমাণবিক অস্ত্র চায় না। তবে আমাদের ওপর হামলা হলে প্রতিরক্ষার পথ খোলা থাকবে।” দুই দেশের এই টানাপোড়েন নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা বাড়ানোর আশঙ্কা তৈরি করেছে।