০৪:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
ফিনল্যান্ডে ডাটা সেন্টারের নির্গত  তাপে গরম হচ্ছে পুরো শহর চীন কোয়ান্টাম কম্পিউটারে সফলতা পেলে যুক্তরাষ্ট্রকে এক নিমেষে প্রস্তরযুগে পাঠিয়ে দেবে যুক্তরাষ্ট্রের F-35 যুদ্ধবিমান প্রকল্পে ফিরে আসার বিষয়ে আরো একধাপ এগিয়ে গেল তুরস্ক: এমনটাই জানিয়েছেন তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাক। ফিফার শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হলেন ট্রাম্প ব্রাজিলে অবতরণের পর আগুনে পুড়ল এয়ারবাস এ-৩২০, অল্পের জন্য রক্ষা পেল যাত্রীরা পাক-আফগান সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি, উত্তেজনা চরমে আগারগাঁওয়ে বিস্ফোরণ: দগ্ধ একই পরিবারের সাতজন ডিজিটাল গ্রিন কার্ডে মিলবে মালয়েশিয়ার নির্মাণশ্রমিকদের বেতন ঢাকায় জোবাইদা রহমান, বেগম জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা ক্যারিবিয়ান সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৪

“আকাশপথে সংকট: যুক্তরাষ্ট্রের ১৪০০ ফ্লাইট বাতিলের খবর”

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:১৮:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫
  • / 91

ছবি সংগৃহীত

 

যুক্তরাষ্ট্রে চলমান দীর্ঘ সরকারি অচলাবস্থার (শাটডাউন) কারণে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দেশজুড়ে বিমান চলাচলে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। শনিবার (৮ নভেম্বর) একদিনেই বাতিল হয়েছে ১ হাজার ৪০০টিরও বেশি ফ্লাইট, আর বিলম্বিত হয়েছে আরও কয়েক হাজার যাত্রা। আগামী কয়েক দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ।

রোববার (৯ নভেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকারি অচলাবস্থা দ্বিতীয় দিনে পৌঁছানোর পর শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে মোট ১ হাজার ৪০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটঅ্যাওয়ার জানিয়েছে, ওই দিন আরও প্রায় ৬ হাজার ফ্লাইট বিলম্বিত হয়, যদিও শুক্রবার বিলম্বিত ফ্লাইটের সংখ্যা ছিল ৭ হাজারেরও বেশি।

এর আগে মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জানায়, অচলাবস্থার কারণে বেতন ছাড়া কাজ করা বিমান নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে ক্লান্তি দেখা দেওয়ায় দেশটির সবচেয়ে ব্যস্ত ৪০টি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত ১ অক্টোবর শুরু হওয়া এই সরকারি অচলাবস্থা এখনও চলছে। কংগ্রেসে অর্থায়ন ইস্যুতে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে মতপার্থক্য এখনো নিরসন হয়নি। শনিবার ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সরকারি অচলাবস্থার ৩৯তম দিন।

এদিকে শাটডাউনের অবসান ঘটিয়ে সরকার পুনরায় চালু করতে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সিনেটররা। তবে সরকারি স্থবিরতার কারণে বিমান চলাচল ও খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে সাধারণ নাগরিকদের জীবনযাত্রায়ও।

শনিবার এক বিবৃতিতে আমেরিকান এয়ারলাইনস ওয়াশিংটনের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ‘অচলাবস্থা দ্রুত সমাপ্ত করতে এখনই সমাধানে পৌঁছাতে হবে।’

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শাটডাউনের মধ্যে নিউ জার্সির নিউয়ার্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার বিকেল পর্যন্ত সেখানে ফ্লাইটগুলোর গড় বিলম্ব ছিল চার ঘণ্টারও বেশি, আর ছেড়ে যাওয়া ফ্লাইটগুলো দেরি করেছিল গড়ে দেড় ঘণ্টা।

শনিবার সবচেয়ে বেশি ফ্লাইট বাতিল হয় শার্লট/ডগলাস, নিউয়ার্ক লিবার্টি এবং শিকাগো ও’হেয়ার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। এফএএ জানায়, শনিবার বিকেল পর্যন্ত জন এফ কেনেডি, আটলান্টা হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন এবং লা গার্ডিয়া বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট ছাড়তে গড়ে তিন ঘণ্টা, আড়াই ঘণ্টা ও এক ঘণ্টা পর্যন্ত দেরি হয়েছে।

পরিবহন দপ্তরের মন্ত্রী শন ডাফি জানান, শুধু বাণিজ্যিক ফ্লাইট নয়, ব্যক্তিগত জেট চলাচলেও সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। তিনি এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ লিখেছেন, ‘ব্যস্ত বিমানবন্দরগুলোতে ব্যক্তিগত জেটের সংখ্যা কমানো হয়েছে। তাদের ছোট বিমানবন্দর ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে বাণিজ্যিক ফ্লাইটগুলো সহজে পরিচালিত হয়।’

এফএএ জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনে ফ্লাইট বাতিলের হার আরও বাড়বে। শুক্রবার ফ্লাইট কমানো হয়েছিল ৪ শতাংশ, যা ১১ নভেম্বর ৬ শতাংশ, ১৩ নভেম্বর ৮ শতাংশ এবং ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত ১০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।

সংস্থাটির মতে, নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বেতন ছাড়া কাজ করায় বিমান নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে ক্লান্তি ও অনুপস্থিতি বেড়ে গেছে। অনেকে অসুস্থতার অজুহাতে ছুটি নিচ্ছেন বা অতিরিক্ত কাজ করছেন নিত্যপ্রয়োজন মেটাতে।

এছাড়া ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি এজেন্সি (টিএসএ)–এর প্রায় ৬৪ হাজার কর্মীর বেশিরভাগই বেতন পাচ্ছেন না, যা বিমানবন্দর নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলছে। ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ও এমন পরিস্থিতি দেখা গিয়েছিল, যখন টিএসএ কর্মীদের প্রায় ১০ শতাংশ বেতন ছাড়া কাজ না করে বাড়িতে অবস্থান করেছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

“আকাশপথে সংকট: যুক্তরাষ্ট্রের ১৪০০ ফ্লাইট বাতিলের খবর”

আপডেট সময় ০৩:১৮:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫

 

যুক্তরাষ্ট্রে চলমান দীর্ঘ সরকারি অচলাবস্থার (শাটডাউন) কারণে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দেশজুড়ে বিমান চলাচলে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। শনিবার (৮ নভেম্বর) একদিনেই বাতিল হয়েছে ১ হাজার ৪০০টিরও বেশি ফ্লাইট, আর বিলম্বিত হয়েছে আরও কয়েক হাজার যাত্রা। আগামী কয়েক দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ।

রোববার (৯ নভেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকারি অচলাবস্থা দ্বিতীয় দিনে পৌঁছানোর পর শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে মোট ১ হাজার ৪০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটঅ্যাওয়ার জানিয়েছে, ওই দিন আরও প্রায় ৬ হাজার ফ্লাইট বিলম্বিত হয়, যদিও শুক্রবার বিলম্বিত ফ্লাইটের সংখ্যা ছিল ৭ হাজারেরও বেশি।

এর আগে মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জানায়, অচলাবস্থার কারণে বেতন ছাড়া কাজ করা বিমান নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে ক্লান্তি দেখা দেওয়ায় দেশটির সবচেয়ে ব্যস্ত ৪০টি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত ১ অক্টোবর শুরু হওয়া এই সরকারি অচলাবস্থা এখনও চলছে। কংগ্রেসে অর্থায়ন ইস্যুতে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে মতপার্থক্য এখনো নিরসন হয়নি। শনিবার ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সরকারি অচলাবস্থার ৩৯তম দিন।

এদিকে শাটডাউনের অবসান ঘটিয়ে সরকার পুনরায় চালু করতে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সিনেটররা। তবে সরকারি স্থবিরতার কারণে বিমান চলাচল ও খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে সাধারণ নাগরিকদের জীবনযাত্রায়ও।

শনিবার এক বিবৃতিতে আমেরিকান এয়ারলাইনস ওয়াশিংটনের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ‘অচলাবস্থা দ্রুত সমাপ্ত করতে এখনই সমাধানে পৌঁছাতে হবে।’

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শাটডাউনের মধ্যে নিউ জার্সির নিউয়ার্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার বিকেল পর্যন্ত সেখানে ফ্লাইটগুলোর গড় বিলম্ব ছিল চার ঘণ্টারও বেশি, আর ছেড়ে যাওয়া ফ্লাইটগুলো দেরি করেছিল গড়ে দেড় ঘণ্টা।

শনিবার সবচেয়ে বেশি ফ্লাইট বাতিল হয় শার্লট/ডগলাস, নিউয়ার্ক লিবার্টি এবং শিকাগো ও’হেয়ার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। এফএএ জানায়, শনিবার বিকেল পর্যন্ত জন এফ কেনেডি, আটলান্টা হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন এবং লা গার্ডিয়া বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট ছাড়তে গড়ে তিন ঘণ্টা, আড়াই ঘণ্টা ও এক ঘণ্টা পর্যন্ত দেরি হয়েছে।

পরিবহন দপ্তরের মন্ত্রী শন ডাফি জানান, শুধু বাণিজ্যিক ফ্লাইট নয়, ব্যক্তিগত জেট চলাচলেও সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। তিনি এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ লিখেছেন, ‘ব্যস্ত বিমানবন্দরগুলোতে ব্যক্তিগত জেটের সংখ্যা কমানো হয়েছে। তাদের ছোট বিমানবন্দর ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে বাণিজ্যিক ফ্লাইটগুলো সহজে পরিচালিত হয়।’

এফএএ জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনে ফ্লাইট বাতিলের হার আরও বাড়বে। শুক্রবার ফ্লাইট কমানো হয়েছিল ৪ শতাংশ, যা ১১ নভেম্বর ৬ শতাংশ, ১৩ নভেম্বর ৮ শতাংশ এবং ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত ১০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।

সংস্থাটির মতে, নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বেতন ছাড়া কাজ করায় বিমান নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে ক্লান্তি ও অনুপস্থিতি বেড়ে গেছে। অনেকে অসুস্থতার অজুহাতে ছুটি নিচ্ছেন বা অতিরিক্ত কাজ করছেন নিত্যপ্রয়োজন মেটাতে।

এছাড়া ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি এজেন্সি (টিএসএ)–এর প্রায় ৬৪ হাজার কর্মীর বেশিরভাগই বেতন পাচ্ছেন না, যা বিমানবন্দর নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলছে। ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ও এমন পরিস্থিতি দেখা গিয়েছিল, যখন টিএসএ কর্মীদের প্রায় ১০ শতাংশ বেতন ছাড়া কাজ না করে বাড়িতে অবস্থান করেছিলেন।