অস্কারে নতুন নিয়ম চালু, চলচ্চিত্রে বৈধতা পেল এআই প্রযুক্তি

- আপডেট সময় ১২:৫২:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
- / ১০ বার পড়া হয়েছে
বিশ্ব চলচ্চিত্রের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার ‘অস্কার’। এই পুরস্কার বিজয়ীদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয় ইতিহাসের পাতায়। তবে এই গৌরব অর্জনের পথ কখনোই সহজ ছিল না। কঠিন প্রতিযোগিতা, কঠোর নিয়ম-কানুন আর বৈচিত্র্যময় মানদণ্ড পেরিয়ে তবেই কারো হাতে ওঠে কাঙ্ক্ষিত সেই স্বর্ণমূর্তি। আর এবার এই কঠিন পথকে আরও চ্যালেঞ্জিং করে তুলছে ‘দ্য একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস’।
২০২৬ সালের ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৯৮তম অস্কার অ্যাওয়ার্ডস। এই আসরকে সামনে রেখে একাডেমি ঘোষণা করেছে নতুন কিছু নিয়ম, যা প্রযোজক, পরিচালক ও ভোটারদের জন্য নিয়ে আসবে নতুন বাস্তবতা।
সবচেয়ে আলোচিত নতুন নিয়ম হলো, চলচ্চিত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির ব্যবহার। একাডেমি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “জেনারেটিভ এআই কিংবা অন্যান্য ডিজিটাল টুল ব্যবহার করলেই কোনো চলচ্চিত্রের অস্কারে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে না, কমেও না। ভোটাররা শুধুমাত্র সৃজনশীলতাকেই অগ্রাধিকার দেবেন।”
এই সিদ্ধান্তের পেছনে একটি বড় কারণ হলো সাম্প্রতিক সময়ে কিছু চলচ্চিত্রে এআই ব্যবহারের সৃজনশীল প্রয়োগ। বিশেষ করে ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’ সিনেমায় অ্যাড্রিয়েন ব্রডির পারফরম্যান্স। এই সিনেমায় চরিত্রের প্রয়োজনে ব্রডিকে হাঙ্গেরিয়ান ভাষায় কথা বলতে হয়েছে, আর সেখানেই তাঁর উচ্চারণ নিখুঁত করতে সহায়তা করেছে এআই।
অস্কার বিজয়ী আরেক সিনেমা ‘এমিলিয়া পেরেজ’-এ গানের কণ্ঠস্বর উন্নত করতে ভয়েজ ক্লোনিং প্রযুক্তির ব্যবহার হয়েছে। এসব উদাহরণই দেখিয়ে দিয়েছে, প্রযুক্তি সঠিকভাবে ব্যবহৃত হলে তা শিল্পের উৎকর্ষ বাড়াতে পারে।
তবে শুধু এআই নয়, নতুন নিয়ম এসেছে ভোটারদের জন্যও। অস্কার ভোটারদের এখন থেকে মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রতিটি ছবি দেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আগে যা ছিল ঐচ্ছিক, এবার তা নিয়মে রূপ পেয়েছে।
নতুন আরেক সংযোজন হলো, এবার থেকে কাস্টিং বিভাগের জন্যও অস্কার দেওয়া হবে। অর্থাৎ অভিনয়শিল্পী নির্বাচনের পেছনে থাকা মেধাকেও সম্মান জানাবে একাডেমি।
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিনিয়তই পরিবর্তন আসছে অস্কারে। প্রযুক্তির নতুন ব্যবহার, ভোটারদের দায়িত্ব বৃদ্ধি এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতিটি স্তরের সৃজনশীলতাকে মূল্যায়ন করার মধ্য দিয়ে একাডেমি আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল বৈশ্বিক সিনেমার মান উন্নয়নের পথে।
এই নতুন নিয়মগুলো নিশ্চিত করবে যে, ভবিষ্যতের চলচ্চিত্রগুলো হবে আরও বৈচিত্র্যময়, সৃজনশীল এবং প্রযুক্তি-সমৃদ্ধ। অস্কারের মঞ্চে ওঠা সহজ নয় আর এবার সেটি হলো আরও কঠিন, তবে একই সঙ্গে আরও ন্যায্য ও সৃজনশীলতার প্রতি নিবেদিত।