লক্ষ্মীপুরে সয়াবিনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা, কৃষকদের মুখে হাসি

- আপডেট সময় ১০:৪০:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
- / 49
লক্ষ্মীপুরের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে এখন সয়াবিনের সবুজ সমারোহ। যেদিকে চোখ যায়, দিগন্তজোড়া মাঠজুড়ে দুলছে সয়াবিনের চারা। কৃষকেরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন পরিচর্যায়, আশায় বুক বাঁধছেন ভালো ফলনের। জেলার রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চর বংশী ইউনিয়নের চর কাছিয়া গ্রামসহ আশপাশের এলাকা এখন সয়াবিন চাষের অন্যতম কেন্দ্রস্থল। এ ইউনিয়নের প্রায় ৭০ শতাংশ কৃষক এবার সয়াবিন আবাদ করেছেন।
জেলার কৃষি বিভাগ জানায়, লক্ষ্মীপুর দেশের মোট সয়াবিন উৎপাদনের প্রায় ৮০ শতাংশ সরবরাহ করে। আগে আমন মৌসুমের পর অনাবাদি পড়ে থাকা জমিগুলোতেই এখন ব্যাপক হারে সয়াবিনের চাষ হচ্ছে। কৃষকদের আশা, আগামী মে মাসে মাঠ থেকে ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।
এ বছর লক্ষ্মীপুরে সয়াবিন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ হাজার হেক্টর জমি, তবে চাষ হয়েছে আরও ১ হাজার ৬৬০ হেক্টর বেশি। কৃষি কর্মকর্তাদের হিসাবে, সবকিছু অনুকূলে থাকলে এবার জেলার উৎপাদন ৮৪ হাজার মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যেতে পারে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩২০–৩৫০ কোটি টাকা।
জেলার সবচেয়ে বেশি সয়াবিন আবাদ হয় কমলনগর, রামগতি, রায়পুর ও লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায়। বিশেষ করে মেঘনার চরাঞ্চল চরইন্দুরিয়া, চরজালিয়া, চরঘাসিয়া, চরকাছিয়া ও কানিবগা এলাকায় হাজার হাজার একর জমিতে চাষ চলছে। সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ও হাজীপাড়াসহ আটটি ইউনিয়নেও ব্যাপক সয়াবিনের আবাদ হয়েছে।
স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা জানান, দোআঁশ মাটির গুণগত মান ও জলবায়ু সয়াবিন চাষের জন্য আদর্শ। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাস চাষের উপযুক্ত সময়। সার প্রয়োগের প্রয়োজন কম থাকায় খরচও তুলনামূলক কম পড়ে। সঠিক পরিচর্যা করলে মাত্র ১৩০ দিনের মধ্যেই ফসল ঘরে আসে।
কৃষকদের মতে, গত কয়েক বছর ধরে সয়াবিন চাষ লাভজনক হয়ে উঠেছে। বড় বড় ভোজ্যতেল ও পোলট্রি খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এখান থেকে সয়াবিন সংগ্রহ করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবারও রেকর্ড পরিমাণ ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা কৃষি অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।