আইএমএফের কড়া শর্তে বিপাকে এনবিআর, অর্থ ছাড়ে অনিশ্চয়তা

- আপডেট সময় ১১:০৫:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫
- / ৫১২ বার পড়া হয়েছে
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড় করতে হলে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে অতিরিক্ত ৫৭ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের কঠিন শর্ত পূরণ করতে হবে এমন নির্দেশনায় দুশ্চিন্তায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বর্তমান আর্থিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন প্রায় অসম্ভব জানালেও আইএমএফ তা মানতে নারাজ।
সোমবার ঢাকায় সফররত আইএমএফ প্রতিনিধিদল এনবিআর চেয়ারম্যানসহ আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস অনুবিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। বৈঠকে এনবিআরের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা কমানোর অনুরোধ জানানো হলেও আইএমএফ কর্তৃপক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এনবিআর দুই লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বাকি তিন মাসে এক লাখ ৯৮ হাজার কোটি টাকা তুলতে হবে, যা অনেকের চোখে অবাস্তব। তবু আইএমএফ তাদের অবস্থানে অনড়।
এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা বলেছি এই টার্গেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, কিন্তু তারা শুনছে না। বরং বারবার বলছে বাংলাদেশের সক্ষমতা রয়েছে।”
আইএমএফ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে কিছু সুপারিশও দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিলাসবহুল পণ্যে সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি, কর অব্যাহতির সীমাবদ্ধতা তুলে নেওয়া এবং সব পণ্য-সেবায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ। পাশাপাশি রাজস্ব প্রশাসনে সংস্কার, করনীতি ও ব্যবস্থাপনা পৃথককরণ, আয়কর ডিজিটাইজেশন প্রকল্প, অনলাইনে কর রিটার্ন জমার সময় নির্ধারণসহ দীর্ঘমেয়াদি কৌশল গ্রহণের তাগিদও দিয়েছে সংস্থাটি।
বর্তমানে দেশের কর-জিডিপি অনুপাত ৭.৪ শতাংশ, যা চলতি অর্থবছরের মধ্যে বেড়ে ৭.৯ শতাংশে নিতে হবে। আর তা বাস্তবায়নে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ আদায় বাড়াতে হবে বিপুল পরিমাণে।
এনবিআরের সদস্য (আয়করনীতি) এ কে এম বদিউল আলম বলেন, “আমরা গত অর্থবছরে কর-জিডিপি অনুপাত ৭.৩ থেকে ৭.৪ শতাংশে এনেছি। আইএমএফ বাস্তবতা বোঝে, তবে বলছে আমাদের সক্ষমতা আছে। তাই তারা তাদের অবস্থান বদলায়নি।”
এদিকে, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় তিনটি কিস্তিতে প্রায় ২২১ কোটি ডলার পেয়েছে। বাকি কিস্তি ছাড় করতে হলে জুনের মধ্যে আইএমএফের সব শর্ত পূরণ করতে হবে যা এখন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।