বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের জন্য উন্মুক্ত একটি সম্ভাবনাময় গন্তব্য, এ কথা জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখন বাংলাদেশে ঠিক নিজের দেশের মতো করেই বিনিয়োগ করতে পারবেন।
বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ এখন আর কাগজে-কলমে সম্ভাবনার দেশ নয়, বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে। এখানে বিনিয়োগ করতে আর কোনো জটিলতা থাকবে না। বাড়তি খরচ ছাড়াই ব্যবসা পরিচালনা করা যাবে।”
তিনি জানান, সরকার ইতোমধ্যেই বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে নানা উদার ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ সময় তিনি তথ্যপ্রযুক্তি খাত, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, স্বাস্থ্যসেবা এবং পরিবেশবান্ধব শিল্পকে বিনিয়োগের নতুন দিগন্ত হিসেবে উল্লেখ করেন।
তরুণদের সম্ভাবনার দিকটি তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, “তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবনী শক্তি ও প্রযুক্তি জ্ঞান বাংলাদেশকে আগামী দশকে নেতৃত্বে নিয়ে যাবে। তারা চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হয়ে উঠলে দেশের অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে।”
১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন ড. ইউনূস। চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি। তিনি বলেন, “সে সময়ের অভিজ্ঞতা থেকেই আমি দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করার প্রেরণা পেয়েছি। আজ বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তা সত্যিই গর্বের।”
অনুষ্ঠানে দেশের বিনিয়োগ ও অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় চারটি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। দেশি বিনিয়োগকারি হিসেবে ওয়ালটন, বিদেশি বিনিয়োগকারি হিসেবে বিকাশ, এবং স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস ও ফেব্রিকস পুরস্কার লাভ করে।
বিশেষ ক্যাটাগরিতে কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং-কে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়।
এর আগে ড. ইউনূস ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। তিনদিনব্যাপী এ সম্মেলন চলবে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত, যেখানে দেশ-বিদেশের বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে নানা আলোচনা হবে।